আরেক রকম ● নবম বর্ষ তৃতীয় সংখ্যা ● ১-১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২১ ● ১৬-৩০ মাঘ, ১৪২৭

প্রবন্ধ

প্রভু বিক্রি হয়ে যাই

অম্লানকুসুম চক্রবর্তী


পৃথিবীর সবচেয়ে দামী বস্তুটি কি? এডিশন শেষ হয়ে যাওয়া কোনো পুরনো ক্যুইজের বই দেখে যদি কেউ বলে ফেলেন তেল, তাহলে তার দিকে চেয়ে ফিক করে হাসা যায়। ছোটবেলায় বড়দের মুখ থেকে শুনতাম, যদি এর পর কখনও বিশ্বযুদ্ধ হয় তৃতীয় বারের জন্য, তা হলে তা হবে ভূগর্ভস্থ তেল ও তার দখলদারি নিয়ে। আজকের যুগে এই যুক্তি কেমন যেন সেপিয়া মোডে তোলা, ফোকাস নড়ে যাওয়া ছবির মতো ঝাপসা লাগে।

বছরকয়েক আগে ‘দ্য ইকনমিস্ট’ পত্রিকায় একটা বড়সড় প্রবন্ধ বেরিয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, তেল নয়, হাল আমলে তেলের থেকে অনেক মূল্যবান, ঢের বেশি ঈর্ষার সম্পদ হল ডাটা। জিরো আর ওয়ান দিয়ে তৈরি হওয়া ডাটাই হল এ যুগের আসল চালিকাশক্তি, আধুনিকতম তেল। আঁচ করতে কষ্ট হয় না - গুগল, আমাজন, অ্যাপল, ফেসবুক ও মাইক্রোসফটের কাছে যে ডাটা সাম্রাজ্য আছে, তার এক শতাংশ পেলেই বহু সংস্থা বর্তে যেত। বাহারি দ্রব্য কিংবা পরিষেবা নিয়েও কোনো সংস্থা মুখ থুবড়ে পড়তে বাধ্য হয় শুধুমাত্র ঠিকঠাক ডাটা পকেটস্থ না করার জন্য। ২০১৭ সালে প্রকাশিত ওই নিবন্ধ থেকে জানা গেল, ওই বছরের শুধুমাত্র প্রথম ত্রৈমাসিকেই উল্লিখিত পাঁচটা সংস্থার মোট লাভ হয়েছিল ২৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই সংখ্যাকে টাকার রূপ দিতে গেলে চোখে ঝিলমিল লেগে যায়। ক্যালকুলেটারের পর্দায় এমন সংখ্যার শেষে শূন্যের মিছিল ভোটের আগে কোনও রাজনৈতিক দলের পদযাত্রার মতো লাগে।

মগজে কারফিউ নিয়েও ভাবলে অবাক হতে হয়, যে শিশু জন্মাল আজ রাতে থেকে শুরু করে যে বৃদ্ধকে ইলেকট্রিক চুল্লীতে ঠেলে দেওয়া হল শেষবারের জন্য, গুগলের কাছে গোপনীয় কিছু নেই। অ্যান্ড্রয়েড ফোনের হোমস্ক্রিনে গুগল লেখা আইকনের উপরে আঙুল ছোঁয়ালে ফুলের পাপড়ির মতো আরও একঝাঁক আইকন সেখান থেকে বেরিয়ে আসে। ইউটিউবে আমরা যে ভিডিও দেখতে চাইছি, তা এই সার্চ ইঞ্জিন জানে। মানে জানতে পারছে। গুগল ম্যাপ জানে বছরের প্রতিটা দিন আমি কোথা থেকে কোথায় গিয়েছিলাম। একটু খোঁচালে বলে দেবে গাড়িতে গিয়েছিলাম কতটা, আর হেঁটেছিলামই বা কতটা পথ। গুগল ফোটোজ্-এ আঙুল ছোঁয়ালে বলবে, পাঁচ বছর আগে ঠিক এই দিনটাতে তুমি দীঘাতে ছিলে, মনে পড়ে? প্লে মিউজিক জানে কি ধরনের গান শুনলে আমার মন ভাল হয়। আইকনে আঙুল ছুঁইয়ে অ্যাপ খুললেই বলবে, চালাই সে গান? প্রিয় অনলাইন বিপণির ওয়েবসাইট ওপেন করে দেখি, তুবড়ির আলোর মতো স্ক্রিনের নিচ থেকে ক্রমাগত বেরিয়ে আসতে থাকে পপ্ আপ্। গত মাসে তো এক কেজি মুসেলি কিনেছিলে তুমি। এবারে কিনবে না? প্রসিড টু চেকআউটে ক্লিক করলে এদিক ওদিক থেকে ছুটে আসবে আরও নানা প্রলোভন। ডিয়ার মিস্টার চক্রবর্তী, গত শীতে তো ৫২ টাকায় ১ কেজি কড়াইশুটিও আমরা দিয়েছিলাম আপনাকে, ভালবাসা মাখিয়ে। এবারে মাত্র আটচল্লিশ। কিনবেন না? এখনও আমার উত্তর যদি ‘না’ হয়, ফের বলা হবে, ‘কড়াই৫০’ কোড লাগালেই কিন্তু গ্রিন পিজ্-এ পেয়ে যেতেন ফ্ল্যাট ৫০ শতাংশ অফ্। কি হল, চেঞ্জড ইওর মাইন্ড? হ্যাঁ বললেই স্ক্রিন থেকে কড়াইশুটি লাফিয়ে উঠে সোজা চলে যাবে কার্টে। অনলাইন ওয়ালেট খুলতে না খুলতেই শুনতে পাই নোটিফিকেশনের ট্রিং ধ্বনি। হঠাৎই বেজে ওঠে কোনও মন্দিরের ঘণ্টা। ল্যাপটপের পর্দা বলে, যে মোবাইলটা রিচার্জ করেছিলে সম্প্রতি, তার ২৮ দিনের মেয়াদ শেষ হতে বাকি মাত্র ৩ দিন। অতএব, টাকা ভরুন এক্ষুণি। ইমেলের বাক্সে উপচে পড়ে ই-গ্রিটিং কোম্পানি থেকে আসা ‘জেন্টল’ রিমাইন্ডার। গত বছরের এই দিনে, তোমার বন্ধুর জন্মদিনে তুমি ৯৯৯ টাকার ফুলের বোকে পাঠিয়েছিলে। হলটা কি? এবারে পাঠাবে না? বেলা যে বয়ে যায়। টিপ্পনি দেয়, সম্পর্ক তরতাজা রাখতে ফুলের কোনো জুড়ি নেই। ওষুধের কোম্পানির ই-দোকান হোয়্যাটসঅ্যাপ করে বলে, বাবার জন্যে কেনা হার্টের ওষুধের একমাসের পাতার তো আর গোটা তিনেক ট্যাবলেট অবশিষ্ট থাকার কথা। যে ভদ্রলোক আপনাকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছেন, তাঁর উপরে কনসার্ন দেখাতে আর দেরি করবেন না প্লিজ। শাওয়ার থেকে পড়া জলের বিন্দুর মতো এমন উদাহরণ লেপ্টে রয়েছে আমাদের রোজনামচায়।

আধুনিক হাউজিং কমপ্লেক্স কিংবা শপিং মলের বিপনিতে বড় বড় করে লেখা থাকে, ইউ আর আন্ডার সিসিটিভি সারভিল্যান্স। আপনি নজরদারি ক্যামেরার অধীন। এই বাক্যটা দেখলেই আমাদের শরীরী ভাষা অর্থাৎ বডি ল্যাঙ্গোয়েজ কেমন যেন বদলে যায়। ধাতু কিংবা ফাইবারের তৈরি ক্যামেরা চোখে দেখা যায়। লেন্সের দিকে চোখ গেলে মনে হয়, ওই আছে তাক করে, একেবারে আমার দিকে। তবে যে ক্যামেরা জুড়ে আছে আমাদের চারদিকে, শ্বাস প্রশ্বাসে, তার ৯৯ শতাংশই চোখের আড়ালে থেকে যায়। আমাদের তা দেখার সাধ্য নেই। সাধ্য থাকলে হয়তো বুঝতে পারতাম, শুধু বাথরুমের চার দেওয়ালের মধ্যে থাকার সময়টা ছাড়া আমার লুকনোর আর কিছু নেই। এ যেন অনেকটা ছবির অ্যালবাম খুলে নেগেটিভ দেখার মতো।

যে সিসিটিভি ক্যামেরা চোখে দেখা যায়, তার ছবি জমা থাকে কোনও কম্পিউটারের হার্ড ডিস্কে। অথবা কোনও সার্ভারে। প্রতিনিয়ত রেকর্ড করা হতে থাকে সেই ছবি। পরিকাঠামো তৈরিতে কত টাকা ঢালা হয়েছে, তার উপরে নির্ভর করে রেকর্ডিংয়ের মেয়াদ। সাধারণত পাঁচ-সাতদিনের চলমান ছবি সংরক্ষণ করা হয়। নতুন ছবি আসার পাশাপাশি পুরনো ছবি মুছে যেতে থাকে। শপিং মলের কন্ট্রোল রুম কিংবা মেট্রো স্টেশনের মাস্টারমশাইয়ের ঘরে উঁকি মারলে দেখা যায় এলসিডি পর্দায় নজরদারির খোপ খোপ বাক্স। চলা ফেরার পথে গলা বাড়িয়ে থাকা লেন্স দেখলেই আমরা সাবধান হয়ে যাই অজান্তে। নন্দন চত্বর থেকে প্রায় আলিঙ্গনবদ্ধ হয়ে রবীন্দ্র সদন মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত হেঁটে এসেছিল যে যুগল, সিঁড়ির মুখে ক্যামেরা দেখামাত্রই মেয়েটিকে বলতে শুনেছিলাম, ‘অ্যাই ছাড়ো, ক্যামেরা আছে!’ যতই ক্যামেরা থাকুক, তাতে তুলে রাখা ছবি সাধারণত থাকে সংস্থার নিজস্ব সিস্টেমে। উদ্দেশ্য একটাই। দুর্ঘটনা কিংবা গন্ডগোল হলে যেন থার্ড আম্পায়ারের মতো কাজ করে এই সিসিটিভি ফুটেজ। অপরাধীকে পাকড়াও করার জন্য এই ফুটেজেই হয়ে থাকে সেরা ইনফর্মার। তবে আমরা জানি, খুব প্রয়োজন না পড়লে, কিংবা কোনো ফরমান জারি না হলে এই ছবি, এ তথ্য বাইরে যায় না। যা গোপনে থাকার কথা, তা নিভৃতেই থাকে।

মজার কথা হল, যে ক্যামেরা আমরা দেখতে পাই না, তার স্বভাব কিন্তু একেবারে উলটো। সাধারণ ক্যামেরার ফ্রেমের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া সহজ। কিন্তু অদৃশ্য ক্যামেরার কোনো ফ্রেম হয় না। ঘুরিয়ে বলা যায়, আমার, আপনার পুরো জীবনটাই এমন ক্যামেরার কাছে ফ্রেম। এই ক্যামেরার পিছু নেওয়ার ক্ষমতার কাছে বিখ্যাত মোবাইল সার্ভিস অপারেটরের সারমেয়টিও গো-হারা হারবে। কোন ক্যামেরার থেকে মুখ লুকোব আমরা? সবচেয়ে বড় ক্যামেরা তো আমার হাতের মুঠোফোন। পিছনে বসানো আটচল্লিশ মেগাপিক্সেলের দেমাক নয়, আসল ক্যামেরাটা লুকিয়ে রয়েছে মোবাইল ফোনের অন্দরে ও অন্তরে। ল্যাপটপ বলে, আমিই বা কম কিসে? আমরা কম্পিউটারের ফোল্ডারে ফাইল জমাই। আর কোনও ক্লাউড স্টোরেজ আমাদের ফাইল হিসেবে জমায়। শুধু ‘জমায়’ বললে ভুল বলা হবে, ইংরিজিতে যাকে বলে ‘আন্ডারস্টেটমেন্ট’।

সংস্থাগুলো কোটি টিবি-র ফাইল সংরক্ষণ করে, তাতে তা দেয় এবং সেই ফাইল বিক্রি করে। এক সার্ভার যে তথ্য ভরে রাখে নিজের শরীরে, কাঠি আইসক্রিমের গা বেয়ে গড়িয়ে পড়া রস চেটে খাওয়ার মতো অন্য সার্ভার তা ঢুকিয়ে নেয় নিজের সার্কিট দেহে। কত জিবি-র পেন ড্রাইভ আমার পছন্দ থেকে শুরু করে কি রঙের অন্তর্বাস পরতে আমার ভাল লাগে - সেই তথ্য বিক্রি হয়। বাজারে প্রতিদিন পণ্য হয় সার্চ ইঞ্জিনের কাছে জানতে চাওয়া আমার শখ-আহ্লাদ-অনুসন্ধানের তথ্য। মার্কেটিংয়ের গুরুরা ছিপ ফেলে বসে থাকেন। ক্যাচ লুফে নিয়ে ‘ইয়ে’ বলে কর্কশ চিৎকার করে শূন্যে ছুঁড়ে দেন মুষ্টিবদ্ধ হাত। ভুখা শরীরে আরও ডাটা ঢোকান। এবারে তৃপ্ত হয়ে জাবর কাটতে কাটতে সেই তথ্য কাটাছেঁড়া করেন। পোশাকি নাম ডাটা মাইনিং। আমরা বলি হই।

গুগলে এইমাত্র আমি জানতে চাইলাম যা, তা কি করে নিমেষে ফুটে ওঠে ফেসবুকের ওয়ালে? এক সাইটের কাছে মন্ডা মিঠাই পোলাও জলদি লাও বললে অন্য সাইটে দেখি মিষ্টির হাঁড়ির ছবি। এক অনলাইন বিপণিতে যে জিনিসটা নেব না বলে ঠিক করলাম, অন্য ওয়েবসাইটে খবর পড়তে গিয়ে দেখি, ওই জিনিসটাই বিক্রি করার জন্য সেই ই-বিপণির তীব্র আকুতি। আমার ইচ্ছেগুলো কীভাবে বাইনারি শিরা ধমনী দিয়ে বহে যায়? তাহলে কি সব ক্লাউড স্টোরেজের ঊর্ধ্বে বসে আছে একটাই মেগা মেঘ? একমেবাদ্বীতিয়ম? পছন্দের ব্র্যান্ডের ওয়াশিং মেশিন নিয়ে এক সার্চ ইঞ্জিনের কাছে জানতে চাওয়ার পাঁচ মিনিট পরে নিজের মেল চেক করতে গিয়ে দেখি, উইন্ডোর ডানদিকে জ্বলজ্বল করছে ওই ওয়াশিং মেশিনের ছবি, ডিসকাউন্টের প্রলোভন সহ। সোশ্যাল মিডিয়াতেও ঢুকে দেখি, ওই ব্র্যান্ড বলছে, আয় আয় চই চই। মনে প্রশ্ন জাগে, তাহলে কি প্রতিটা ঘরই আসলে মুড়ে রাখা আছে কোনো কাচের দেওয়ালে? একদিকে আমরা আমাদের ডিজিটাল যাপনে এনক্রিপশানের কথা বলি। আর অন্য দিকে প্রভু নষ্ট হয়ে যাই, বিক্রিও হই। সাইবার সিকিউরিটি বিশেষজ্ঞরা বলেন, পছন্দের ওয়েবসাইটে লম্বা ফর্ম ভর্তি করে অ্যাকাউন্ট খুলি যখন, তখন মনে রাখা উচিত, এই তথ্য আসলে সংস্থার কাছে হট কেক ছাড়া অন্য কিছু নয়।

পৃথিবীতে কতজন দুবেলা পেট ভরে খেতে পারেন জানি না, তবে ৬৭ শতাংশ মানুষ মোবাইল ব্যবহার করতে শিখে গিয়েছেন। মার্কিন বহুজাতিক উইআরসোশ্যাল-এর সাম্প্রতিক সমীক্ষা বলছে, ৭৮১ কোটি জনসংখ্যার এই গ্রহে ৫২০ কোটির হাতে মুঠোফোন। দশ ডিজিটের গর্বিত জীবন। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ মানুষ। অর্থাৎ, ৪৬৫ কোটিরও বেশি। আর সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রতিদিন ওয়াল চেক করেন এমন মানুষের সংখ্যা ৪১৪ কোটি। মানে, পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ৫৩ শতাংশ। এ সবই ২০২০ সালের অক্টোবর মাসের হিসেব। সমীক্ষা বলছে, ২০১৯-এর অক্টোবরের তুলনায় ২০২০ অক্টোবরে জনসংখ্যা বেড়েছে ১ শতাংশ। তবে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে ২ শতাংশ। তবে দশ গোল দিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। ব্যবহারকারীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে ১২.৩ শতাংশ। পরিসংখ্যাণ আরও বলে, দিনে গড়ে আমরা ইন্টারনেটে যে সময় দিই তা ৭ ঘণ্টার থেকে ঠিক পাঁচ মিনিট কম।

জেনারেশেন জেড-এর পরে কিছু আছে কি না ধারণা নেই। তবে ডিজিটাল যুগের বাসিন্দাদের শৈশবের কয়েকটা বছর ছেড়ে দিয়ে বেঁচে থাকার বাকি দিনগুলোকে এই ৬ ঘণ্টা ৫৫ মিনিট দিয়ে গুণ করার চেষ্টা করা যেতে পারে। ইন্টারনেট কি করে মানুষকে খায় তার একটা আন্দাজ মিলবে। সমাজের ক্ষয়রোগ নিয়ে যাঁরা চর্চা চালান, তাঁরা বলেন, ইন্টারনেট না, খায় আসলে সোশ্যাল মিডিয়া, আর তার ওয়ালে চুম্বন করতে আসা রাশি রাশি বিজ্ঞাপন। যতটা জানিয়েছি সোশ্যাল মিডিয়াকে, সে জানতে পেরেছে তার থেকে আরও অনেক বেশি। আরও জানব বলে আমরা আন্তর্জালকে আরও জানাই। যত জানাতে থাকি, স্ক্রিনজোড়া বিজ্ঞাপনের মোড়কে তত রামধনু খেলে। শুনেছি, মার্কেটিংয়ের এক নতুন অধ্যায় বন্যার জলের মতো ঢুকে পড়বে এবার সারা দুনিয়ায়। এদেশেও। এর নাম জেনেটিক মার্কেটিং। জিন-সহ অন্যান্য ডাক্তারি পরীক্ষার রিপোর্টও নাকি পণ্য হবে এ বারে। আমার শরীরের চাহিদা বুঝে শুরু হবে বিপণনের এক নতুন অধ্যায়।

আমরা আকাশের দিকে চেয়ে বোকার মতো প্রশ্ন করব - তা হলে প্রাইভেসি টার্মস? অ্যাকাউন্ট খোলার সময় ওখানে ক্লিক করেছিলাম যে...। ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারের পাশে যে একটা তালার মতো চিহ্ন দেখায়? ওয়েবসাইটগুলো যে বলে আমরা কাউকে ডাটা দিই না! মনে করার চেষ্টা করব কোথায়, কোন স্ক্রিনে যেন লেখা দেখেছিলাম, আপনার সিকিওরিটি - আমার প্রায়োরিটি। ভাবতে থাকব।

ভাবতে ভাবতে আকাশ কালো হয়ে আসবে ক্রমশ। গলা উঁচিয়ে দেখব মেঘ। না না মেঘ না, ক্লাউড। বাজ পড়বে। লক্ষ মহিষাসুরের হাসির মতো।