আরেক রকম ● নবম বর্ষ দ্বিতীয় সংখ্যা ● ১৬-৩১ জানুয়ারি, ২০২১ ● ২-১৭ মাঘ, ১৪২৭

সম্পাদকীয়

কর্মসূচীর সন্ধানে একটি নির্বাচন


রাজ্যে ভোট তরজা শুরু হয়ে গিয়েছে। ক নেতা খ দলে নাম লিখিয়েছেন, যার উপর গ দলের ৫ নম্বর নেতা ক এবং খ উভয় দলকেই গাল পাড়ছেন, টিভি-র সান্ধ্য আসরে চা-জলখাবারের সঙ্গে রাজনৈতিক নোনতা-মিষ্টি-তেতো পদ পরিবেশিত হয়ে চলেছে। রোজ কোথাও না কোথাও রাজনৈতিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এইসব আয়োজন ও আতিশয্যের মধ্যে হারিয়ে গেছে মানুষের জীবন-জীবিকার সমস্যাগুলি।

একবার তাকিয়ে দেখুন রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলির দিকে। রাজ্যের শাসকদল আপাতত নিজেদের মন্ত্রী-সান্ত্রীরা যাতে কেন্দ্রের শাসক দলের দিকে না চলে যান তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট। মাঝেমধ্যে মানুষকে অবশ্য বলা হচ্ছে যে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে অতএব আমাদের আবার ভোট দিন। দেশের শাসক দল রাজ্যের শাসক দলের নেতা-কর্মী ভাঙিয়ে ক্ষমতা দখলের খেলায় নেমেছে। যাদের ভোট তারা চাইছে তাদেরই একটি বড়ো অংশকে দেশের নাগরিকত্ব থেকে বাতিল করা হবে বলেই তাদের ঘোষণা। রাজ্যের প্রাক্তন শাসক দল যাদের হাতে রাজ্যবাসী ৩৪ বছর রাজ্যভার তুলে দিয়েছিলেন তারা আপাতত আরেক প্রাক্তন শাসক দলের সঙ্গে জোট এবং আসন সমঝোতা নিয়ে ব্যস্ত। যেহেতু বামপন্থী দল তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদের তরফ থেকে বিকল্প কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে বলে কিছু কথা শোনা যাচ্ছে। কিন্তু স্বচ্ছভাবে তাঁরা এখনো মানুষকে বলেননি যে তাদের কর্মসূচী ঠিক কী হবে।

এই পরিস্থিতিতে মানুষের জীবন-জীবিকা সংক্রান্ত বিকল্প রাজনৈতিক কর্মসূচী ব্যতিরেকে পশ্চিমবঙ্গের সংকটের কোনো সমাধান নেই। বর্তমান সম্পাদকীয় সেই কর্মসূচী সংক্রান্ত আলোচনা উসকে দেওয়ার একটি প্রয়াস।

পশ্চিমবঙ্গে বর্তমান শাসক দলের অনেক অন্যায় বা অনিয়মের মধ্যে একটি প্রধান অন্যায় নিশ্চিতভাবেই পঞ্চায়েত ব্যবস্থার ধ্বংস। ২০১৮ সালের নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি, পঞ্চায়েতের মাধ্যমে মানুষের উন্নয়ন এবং ক্ষমতায়নের কর্মসূচীকে কবর দেওয়া হয়েছে। বর্তমান গ্রাম বাংলায় পঞ্চায়েত প্রতিনিধিদের সঙ্গে আসলে মানুষের কোনো সম্পর্ক নেই। এই অবস্থার পরিবর্তন চাই। কিন্তু তেতো ওষুধ গেলার মতই স্বীকার করতেই হবে বামফ্রন্টের শেষ পর্যায়ে পঞ্চায়েত ব্যবস্থায় বিবিধ সমস্যা দেখা দিয়েছিল। গায়ের জোরে দখল, গ্রামের নব্য ধনীর পঞ্চায়েতের প্রতিনিধি হয়ে ওঠা মানুষকে স্থানীয় সরকারের থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে। তাই বর্তমান পশ্চিমবঙ্গের উপযোগী নতুন করে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। সেখানে একদিকে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে রাজ্য সরকার থেকে সম্পূর্ণভাবে স্বাধীন করতে হবে। দ্বিতীয়ত, নিয়মিত পঞ্চায়েতের হিসাব পরীক্ষা শুধুমাত্র সরকারী আধিকারিকদের উপর নির্ভরশীল না করে নিয়মিত সামাজিক হিসাব পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। বামপন্থীদের গ্রামের দরিদ্রতম অংশকে ক্ষমতায়ন করার লক্ষ্যে পঞ্চায়েত ব্যবস্থার শরিক করতে হবে শুধু তাই নয়, তাদের হাতেই ক্ষমতা তুলে দিতে হবে। প্রকৃত গণতান্ত্রিক পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এইভাবেই গড়ে তুলতে হবে। এর মাধ্যমে গ্রামীণ বাংলায় গণতন্ত্রের শিকড়কে দৃঢ়ভাবে প্রোথিত করা সম্ভব হবে। একই প্রক্রিয়ায় শহরের পুরসভাগুলিকেও পরিচালিত করতে হবে।

এই গণতান্ত্রীকরণের সঙ্গে সঙ্গে অবশ্যই রাজ্যের কর্মসংস্থানের সমস্যা নিয়ে গভীর চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। এমন একটি ধারণা রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্য থেকে উঠে আসে যেন পশ্চিমবঙ্গের অধিকাংশ মানুষ কৃষি নির্ভর রয়ে গেছেন। তথ্য কিন্তু সেই কথা বলছে না। ২০১৮-১৯ সালের হিসেব অনুযায়ী রাজ্যে কৃষিতে নিযুক্ত রয়েছেন ৩৪ শতাংশ কর্মরত মানুষ, ভারতের ক্ষেত্রে যেই সংখ্যা প্রায় ৪৩ শতাংশ। আবার রাজ্য সরকার কৃষকদের ব্যাপক আয় বেড়েছে বলে দাবি করলেও আসলে পশ্চিমবঙ্গে কৃষকদের আয় ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেকটাই কম। রাজ্যে কর্মসংস্থান নিয়ে আলোচনা হলে সমস্ত রাজনৈতিক দল এবং নেতা শুধুমাত্র শিল্পায়ন নিয়ে কথা বলে। কিন্তু রাজ্যে কৃষিক্ষেত্রের উন্নয়নকে যেন আমরা পাশ কাটিয়ে গিয়েছি এমন একটা বক্তব্য উঠে আসে। অথচ, রাজ্যের অ-কৃষি ক্ষেত্রের বৃদ্ধি বা কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করতে হলে কৃষকদের আয় বাড়ানো বাদ দিয়ে কোনো উপায় নেই। সমস্যা হল এই যে রাজ্যে জমি কম এবং জনসংখ্যার চাপ প্রবল। তাই কৃষকদের আয় বাড়াতে হলে কৃষিক্ষেত্রের উৎপাদন ব্যবস্থার পরিবর্তন করা যায় কি না তা নিয়ে ভাবতে হবে। রাজ্যে কৃষি আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের কথা ভাবা যেতে পারে। কিন্তু সেই শিল্পগুলি শুধুমাত্র কর্পোরেট নির্ভর না হয়ে, সরকারী ক্ষেত্রে কি তৈরি করা যায়? এমনকি কিছু অঞ্চল যেখানে শাক-সবজি-ফল-ফুল বেশি উৎপাদন হয় সেখানে সরকারী সহায়তায় এমন শিল্প গড়ে তোলা যেতে পারে। আবার কৃষকদের নেতৃত্বে এই ধরনের সংস্থা বানানো যায় কি না তাও ভেবে দেখা দরকার। এক কথায় বলতে গেলে কৃষির উন্নতি করা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়।

দ্বিতীয় যেই ভুল ধারণাটি অনেক সময় গণপরিসরে শুনতে পাওয়া যায় যে রাজ্যে যেন শিল্পে কোনো কর্মসংস্থান হচ্ছে না। আসলে পশ্চিমবঙ্গে কর্মরত ১৯ শতাংশ মানুষ নিযুক্ত আছেন ম্যানুফাকচারিং শিল্পে। কিন্তু এই শিল্পের অধিকাংশই অসংগঠিত ক্ষেত্রে এবং ক্ষুদ্র। মজুরির হারের দিকে তাকালেও দেখা যাবে যে রাজ্যের মজুরির হার দেশের তুলনায় বেশ কম। অতএব রাজ্য ছেড়ে শ্রমিকদের ভিন রাজ্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেওয়া। এর সমাধান করা দরকার এই বিষয় কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু আবারো কর্মসংস্থান নিয়ে আলোচনা হলেই সেই বৃহৎ শিল্প রাজ্যে এল কি এল না তা নিয়েই আলোচনা চলতে থাকে। তথ্য বলছে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের দরুন বৃহৎ শিল্পে খুব বেশি কর্মসংস্থান তৈরি করা সম্ভব নয়, ভারত তথা বিশ্বের ক্ষেত্রে। পশ্চিমবঙ্গের মতন জনবহুল রাজ্যে শুধুমাত্র বৃহৎ শিল্পের ভিত্তিতে কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করা তাই প্রায় অসম্ভব। তাই সরকারকে নতুন কর্মসংস্থান বিষয় মাথা ঘামাতে হলে বৃহৎ শিল্পের বাইরেও চিন্তা করতে হবে। অন্তত তিনটি কথা এই ক্ষেত্রে বলা যেতে পারে। প্রথমত, রাজ্যে গ্রামীণ কর্মসংস্থান গ্যারান্টির সঙ্গে সঙ্গে শহরেও এহেন কর্মসূচী গ্রহণ করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে মজুরির হারকে একটি গ্রহনীয় ন্যূনতম পর্যায় বেঁধে রাখা সম্ভব হবে। দ্বিতীয়ত, ক্ষুদ্র শিল্প নিয়ে পৃথক ভাবনা চিন্তা করার প্রয়োজন রয়েছে। গ্রাম বাংলায় বিভিন্ন রকমের পণ্য উৎপাদিত হয় যা শহরের মানুষ বহুগুন বেশি টাকা দিয়ে কেনেন কিন্তু তা প্রকৃত শ্রমিকের হাতে পৌঁছয় না। এই শ্রমিকদের সংগঠিত করে উৎপাদন ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজালে অন্তত কিছু ক্ষেত্রে যেমন শাড়ি, হস্তশিল্প ইত্যাদি বড়ো বাজার শ্রমিকরাই ধরতে পারবেন। তৃতীয়ত, রাজ্য সরকারের সমস্ত শূন্যপদে নিয়োগ করতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য জরুরি পরিষেবায় নতুন কর্মসংস্থান করতে হবে। শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যের প্রসার করা হলে এই কর্মসংস্থান হবে যার মধ্য দিয়ে বেকার যুবক-যুবতীরা যেমন কাজের সুযোগ পাবেন, তেমনি জরুরি পরিষেবাগুলি আরো বেশি মানুষের কাছে পৌঁছৈ যাবে।

উপরোক্ত আলোচনার মানে এই নয় যে বৃহৎ শিল্প বা বিনিয়োগের কোনো প্রয়োজন নেই। নিশ্চিতভাবেই বৃহৎ শিল্প হলে ছোট শিল্পগুলির চাহিদা বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে যার মাধ্যমে কর্মসংস্থান হতে পারে। বর্তমান ভারত তথা বিশ্বে মন্দাবস্থা রয়েছে। এমতাবস্থায় পুঁজিপতিরা চট করে এই রাজ্যে বিনিয়োগ করবেন না। করলেও তার জন্য তারা বিনামূল্যে জমি এবং নানান কর ছাড়ের সুবিধা চাইবেন, যা সরকারের কোষাগারে বিরূপ প্রভাব ফেলবে এবং রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জন্ম দেবে। তাই সরকারী মালিকানাধীন বড়ো শিল্পের কথা ভাবা উচিত। আবার, বেসরকারী শিল্প রাজ্যে আসতে চাইলে জমির সমস্যা সমাধানের জন্য রাজ্যের বন্ধ কলকারখানায় যেই ২০০০০ একর জমি অব্যবহৃত হয়ে পড়ে রয়েছে তাকে ব্যবহার করতে হবে। এর মাধ্যমে জমি সংক্রান্ত যেই বিতর্ক রাজ্যের রাজনীতিতে পরিবর্তন ঘটিয়েছে তার সম্ভাবনা নষ্ট করা যাবে, এবং কৃষকদের বিনা অনুমতিতে কোনো জমি নেওয়া হবে না এমন ঘোষণা সরকারকে করতে হবে। এই সার্বিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাজ্যের কর্মসংস্থানের সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি করা সম্ভব।

অন্য যেই দুটি ক্ষেত্রে আলোচনা করা প্রয়োজন তা হল শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য। একদিকে যেমন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা বাড়াতে হবে, অন্যদিকে এই সমস্ত প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে রাখা অবশ্য কর্তব্য। স্কুল সার্ভিস কমিশন, কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে লাগাতার শিক্ষক নিয়োগ করতে হবে। ছাত্র-সংসদ নির্বাচন করা আবশ্যিক ঘোষণা করতে হবে। ছাত্র এবং শিক্ষক প্রতিনিধিদের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ নয়, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালনা করতে হবে।

স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে রাজ্যের পরিকাঠামো ভারতের অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে। মুশকিল হচ্ছে চাইলেই বাজারে ডাক্তারের যোগান বাড়ানো সম্ভব নয়। তাই রাজ্য সরকারের অধীন ভালো মেডিকাল কলেজের সংখ্যা বাড়াতে হবে। আগামীদিনে এই কলেজগুলি থেকে পাশ করা ডাক্তার-নার্স-রা যাতে পশ্চিমবঙ্গেই সম্মানের সঙ্গে কাজ করতে পারেন সেই লক্ষ্যে প্রত্যেক জেলা ও ব্লকে উপযুক্ত পরিকাঠামোসহ হাসপাতাল গড়ে তুলতে হবে। শুধু নামে সুপার-স্পেশালিটি হাসপাতাল বললে হবে না। সমস্ত সুযোগ-সুবিধা সংবলিত অন্তত একটি পিজি-র মতন হাসপাতাল প্রত্যেক দুটি জেলায় গড়ে তুলতে হবে, যেখানে আশেপাশের মানুষ কলকাতায় না এসে সহজেই চিকিৎসা পেতে পারেন। হাসপাতাল পরিচালনার ক্ষেত্রেও রাজনীতিবিদদের মাতব্বরি নয়, দক্ষ পেশাদার ডাক্তার এবং প্রশাসকের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠানগুলির পরিচালনা করতে হবে।

এই অবধি বিকল্প কর্মসূচীর আলোচনা পড়ে পাঠক হয়ত ভাবছন এত টাকার ব্যবস্থা রাজ্য সরকার করবে কী করে? প্রশ্নটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এর উত্তর সহজ নয়। আপাতত এই ছোট পরিসরে কিছু কথা বলা যেতে পারে। প্রথমত, সোজা ভাষায় বললে বাজে খরচ কমাতে হবে। ক্লাব, পুজো কমিটিকে অনুদান, ইমাম-মুয়াজ্জিন-পণ্ডিতদের অনুদান, আজ মাটি মেলা, কাল সমুদ্র মেলা পরশু পিঠে মেলা, এই জাতীয় অহেতুক ব্যয় সম্পূর্ণভাবে বর্জন করতে হবে। কিন্তু তাতেই সমাধান হবে না। তাই রাজ্য সরকারকে নতুন কর সংগ্রহের ব্যবস্থা করতে হবে। জিএসটি প্রবর্তিত হওয়ার ফলে একতরফাভাবে রাজ্যের করের হার বাড়ানো আর রাজ্য সরকারের পক্ষে সম্ভব নয়। তবু, রাজ্যে যত বাড়ি-জমি ইত্যাদি ক্রয়-বিক্রয় হচ্ছে তার উপরে রাজ্য সরকার কর চাপাতে পারে। এই কর বাড়ানো যেতে পারে। দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় সরকার থেকে প্রাপ্য টাকার পরিমাণ বাড়ানোর জন্য আন্দোলন সংগঠিত করা উচিত। ১৯৮০-র দশকে কেন্দ্র-রাজ্য আর্থিক সম্পর্ক নিয়ে রাজ্য দেশে পথিকৃতের ভূমিকা পালন করেছিল। বর্তমানে আবারো সেই দিশায় কাজ করার অবকাশ রয়েছে। মানুষের স্বার্থে কাজ করার জন্য একটি রাজ্য সরকার ধার করা সহ বিবিধ উপায়ে বাজার থেকে অর্থের সংস্থান করতে পারে। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে রাজ্যের রাজস্বনীতি গ্রহণ করতে হবে।

রাজ্যের রাজনৈতিক আকাশে ক্রমাগত ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বিজেপি-কে হারানো কী করে সম্ভব এই আলোচনায় বারবার শুধু জোটের কথা উঠে আসছে। কিন্তু বিজেপি-র বিরুদ্ধে প্রগতিশীল বাম বিকল্প আখ্যান এখন অবধি খুব বেশি শোনা যাচ্ছে না। অথচ এক বিকল্প কর্মসূচী মানুষের মধ্যে নিবিড়ভাবে নিয়ে যেতে পারলে তবেই বিজেপি-র হিংস্র রাজনীতি বিরোধী শ্রমজীবি মানুষের জীবন-জীবিকার আখ্যান তৈরি করা সম্ভব। সেই বিকল্প আখ্যান নির্মাণ বিজেপি-কে পরাস্ত করার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। রাজ্যের বামপন্থীরা কি সেই আখ্যান নির্মাণ করতে পারবেন?