আরেক রকম ● নবম বর্ষ বিংশ সংখ্যা ● ১৬-৩১ অক্টোবর, ২০২১ ● ১-১৫ কার্তিক, ১৪২৮

প্রবন্ধ

দেশকে ভালোবাসা দেশদ্রোহিতা?

অম্বিকেশ মহাপাত্র


পলাশীর যুদ্ধে সেনাপতি মীরজাফরের বেইমানি। ষড়যন্ত্রে পিসি ঘসেটি বেগম, প্রভাবশালী বণিকগোষ্ঠী রায়দুর্লভ ও জগৎ শেঠ। পরাজিত হলেন বাংলা-বিহার-উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। জয়ী ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানী। ২৩শে জুন ১৭৫৭, বাংলা তথা ভারতের স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হল। সূচনা হল ভারতবর্ষে ইংরেজ তথা ব্রিটিশ শাসন প্রতিষ্ঠার। এরপর একের পর এক রাজ-রাজত্ব ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর দখলে। ‘বণিকের মানদণ্ড দেখা দিল শাসকের রাজদণ্ড রূপে’।

‘স্বাধীনতা হীনতায় কে বাঁচিতে চায় হে, কে বাঁচিতে চায়? দাসত্ব শৃঙ্খল বল কে পরিবে পায়ে হে, কে পরিবে পায়ে’। ১০০ বছর পর ১৮৫৭ সালে মহাবিদ্রোহ, যা খ্যাত ‘সিপাহি বিদ্রোহ’ নামে। দেশের প্রথম স্বাধীনতা যু্দ্ধ, সেই যুদ্ধ কেবল সিপাইদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধে দেশবাসীর পরাজয়ের পর প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন। আর দেরি নয়। শাসনদণ্ড কোম্পানির হাত থেকে ব্রিটিশ সরকার তথা ব্রিটিশ পার্লামেন্টের হাতে। ভারতবর্ষ উপমহাদেশ ব্রিটিশ সরকারের শাসনাধীনে। ব্রিটিশরা দেশবাসীকে শুধুই অর্থনৈতিক শোষণ-শাসনে সীমাবদ্ধ রাখলেন না, রাখার কথাও নয়। দেশবাসীর স্বাধীনতার ইচ্ছে এবং আকাঙ্ক্ষা দমিয়ে রাখতে ভারতীয়দের জন্য ব্রিটিশ সরকারের চাই নতুন আইন। আনা হল, ১৮৬০ সালে ভারতীয় দণ্ডবিধি বা Indian Penal Code (IPC) আইন। পরের বছর ১৮৬১ সালে পুলিশ আইন। ম্যাকলে সাহেবের আপত্তিতে দেশদ্রোহিতা বিরোধী আইন প্রথমে ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্তর্ভুক্ত হয়নি। পরে ১৮৭০ সালে সেই আইন যুক্ত হয়।

স্বাধীনতা আন্দোলন দমন করতে দেশদ্রোহিতা বিরোধী আইন, 124A of IPC (Annexure-1), ব্রিটিশদের কাছে একটা মোক্ষম অস্ত্র ছিল। আজ বিলেতে দেশদ্রোহিতা বিরোধী আইন না থাকলেও স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর ভারতে সেই আইন স্বমহিমায় ভাস্বর। শুধু আইনের বইতে সীমাবদ্ধ? অব্যবহারে ধুলো ধূসরিত? মরচে ধরে গেছে? না, কখনোই না। পরন্তু বর্তমান সময়ে অধিক ব্যবহারে এবং প্রয়োগে যথেষ্ট শাণিত এবং ধারালো। ব্রিটিশরা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিরুদ্ধে এই ধারা বারবার প্রয়োগ করেছে, করবেই তো। লোকমান্য তিলক এই ধারায় অভিযুক্ত হন, তিনবার। জেলও খাটতে হয় তাঁকে। ১৯২২ সালে এই ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছিল গান্ধীজীর নামে। ছ’বছর জেল হয় গান্ধীজীর। তবে অসুস্থতার কারণে দু’বছর পর রেহাই পান। গান্ধীজী বলেছিলেন - ব্রিটিশ সরকারকে অশ্রদ্ধা প্রত্যেক ভারতবাসীর কর্তব্য। আমার নামে দেশদ্রোহিতা বিরোধী আইনে অভিযোগ আনায় আমি আনন্দিত। জানা যায়, এই ধারায় বঙ্গসন্তান কমলকৃষ্ণ সরকার গ্রেফতার হয়েছিলেন। অপরাধ? ব্রিটিশ সরকার কমিউনিস্ট পার্টিকে নিষিদ্ধ করায় তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন।

১৫ই আগস্ট ১৯৪৭, ইউনিয়ান জ্যাক নামিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা উঠল। ক্ষমতা হস্তান্তরে প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার বল্লবভাই প্যাটেল, শিক্ষামন্ত্রী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ, কৃষি ও খাদ্যমন্ত্রী ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ, ...। কিন্তু জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের মাধ্যমে দেশবাসীর দাবি - ‘পূর্ণ-স্বরাজ’ রাতারাতি প্রতিষ্ঠিত হয় না। হওয়ার কথাও না। এত্তো বড় দেশ! এত্তো বৈচিত্র্য - ভাষা, ধর্ম, বর্ণ, পোশাক, খাদ্যাভ্যাস, সংস্কৃতি, ... প্রভৃতিতে। এত্তো রকমের বিভিন্নতা! দেশকে অখণ্ড রাখতে, দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে এবং কবির ভাষায় - ‘নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধান, বিবিধের মাঝে দেখো মিলন মহান’ ভারতবর্ষের প্রশাসন পরিচালনায় দরকার বিশেষ ধরনের সংবিধান। সংবিধান কি রাতারাতি সম্ভব? তৈরি হল সকল Provincial Assembly থেকে প্রতিনিধি নিয়ে Constituent Assembly। সভাপতি ড. রাজেন্দ্র প্রসাদ। সঙ্গে Draft Committee; চেয়ারম্যান ড. ভীমরাও রামজী আম্বেদকর। বহু আলোচনা, সংশোধনী, সংযোজনী, ...। দু’বছর পর ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯, ‘ভারতীয় সংবিধান’ গৃহীত হল। ‘পূর্ণ-স্বরাজ দিবস (২৬শে জানুয়ারি)’-কে স্মরণীয় রাখার দায়। সে কারণে ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০, ‘ভারতীয় সংবিধান’ লাগু হয়। সেই দিন থেকে ভারতবর্ষ ‘Sovereign Democratic Republic’ বা ‘সার্বভৌম গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’। জরুরী অবস্থার সময়কালে সংবিধান সংশোধনের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষ আজ ‘Sovereign, Socialist Secular Democratic Republic’ বা ‘সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’।

প্রজাতান্ত্রিক দেশের সংবিধান অনুযায়ী - দেশের মালিক কে? কেন দেশের জনগণ। দেশ পরিচালনা করবে কে? কেন জনগণের নির্বাচিত সরকার। নির্বাচন হবে পাঁচ বছরে একবার। প্রত্যেক প্রাপ্তবয়স্ক ভারতীয় নাগরিকের হাতে থাকবে একটি ভোট। সরকার চালানোর অর্থ জোগাবে কে? কেন দেশের জনগণ; পরোক্ষ এবং প্রত্যক্ষ করের মাধ্যমে। প্রজাতান্ত্রিক দেশের মূলমন্ত্র গণতন্ত্র। গণতন্ত্রের প্রাথমিক কর্তব্য নির্বাচিত সরকারের সমালোচনা। সমালোচনার দায়িত্ব বিরোধীদের। বিরোধী দল সরকারের দুর্নীতির কথা বেশি বলবে। গণতন্ত্রের চতুর্থ স্তম্ভ সংবাদমাধ্যম সেই দুর্নীতির কথা তথ্যসহ বড় করে ছাপবে/প্রচার করবে। শুধু তো পাঁচ বছর অন্তর নির্বাচন নয়। সংসদীয় গণতন্ত্রে গুরুত্বপূর্ণ সরকারের কাজকর্মকে সবসময় রাখতে হবে আতশকাচের নিচে। এবং সরকারকে জবাবদিহি করতে হবে সংসদের কাছে, আদালতের কাছে। সংবাদমাধ্যম যাতে সত্য, নির্ভয়ে জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে পারে, তাকে সম্পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে সংবিধানে। ঔপনিবেশিক শাসনে 124A of IPC প্রয়োজন ছিল; গণতান্ত্রিক শাসনে তার বদলে সকল নাগরিকের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার, বাক্-স্বাধীনতা, ... সহ ছয়টি মৌলিক অধিকার সংবিধানের Article 19 (Annexure-2)-এ অন্তর্ভুক্ত হয়। দুই ধারা পরস্পর বিরোধী; সেকারণেই দাবি ওঠে 124A of IPC তুলে দেওয়া হোক; কিন্তু এই দাবি পূরণ হয়নি। কারণ দেশের সরকারের সমালোচনায় বিদেশীদের হাত থাকবে না, তার গ্যারান্টি কে দেবে? অতএব থাকবে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে তৈরি দেশদ্রোহিতা বিরোধী আইন 124A of IPC। এই অবস্থায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিল - সরকারের সমালোচনা শুধু কথায় বা লেখায় সীমাবদ্ধ থাকলে তা দেশদ্রোহিতা হবে না। কিন্তু হিংসার আশ্রয় নেওয়া বা হিংসায় প্ররোচনা দেওয়ার ক্ষেত্রে এই আইন প্রয়োগ করা যাবে। কোর্টের নির্দেশ রেকর্ডে থেকে যায়, কিন্তু প্রয়োগে নেই! তার কারণ আইনের প্রত্যক্ষ প্রয়োগকর্তা পুলিশকে ট্রেনিংয়ে এসব জানানো হয় কি? জানানো হলেও প্রয়োগে তার প্রতিফলন ঘটে না। আমার ব্যক্তি জীবনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি; সুপ্রিম কোর্ট 66A of IT Act বাতিল করলেও সেই ধারায় আমার বিরুদ্ধে মামলা চলেছে; বছরের পর বছর! যাঁর নির্দেশে মামলা চলেছে, তিনি আর যাই হোক পুলিশ আধিকারিক নয়। শুধু কি আমার বিরুদ্ধে এবং আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে? না। কখনোই না। সারা দেশে বাতিল 66A of IT Act ধারায় বিভিন্ন থানায় সহস্রাধিক গ্রেফতার এবং তার সঙ্গে ফৌজদারি মামলা!

কংগ্রেস সরকার 124A of IPC ধারার অপপ্রয়োগ থেকে বিরত থাকেনি। কিন্তু মোদি-শাহ-আদিত্যনাথ এই ধারাকে আঁকড়ে ধরেছেন, প্রাণের দায়ে। তাঁরা জানেন সমাজ ও বিজ্ঞান সচেতক, শিক্ষিত এবং গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে দলভুক্ত করা কঠিন। অতএব তাঁদের ভয় পাইয়ে হয় দলভুক্ত করতে হবে; না হলে চুপ করাতে হবে। এখানেই ব্যবহৃত হচ্ছে 124A of IPC। তার সঙ্গে সংশোধিত UAPA এবং নিরাপত্তা আইন তো আছেই। এই আইনগুলির সুবিধা হল জামিন পাওয়া প্রায় অসম্ভব। ২০১৬ সালে 124A of IPC ধারায় ৩৫টি মামলা, ২০১৯ সালে তা বেড়ে ৯৩। বেঙ্গালুরুর ক্লাইমেট এ্যক্টিভিস্ট দিশা রবি কিষান আন্দোলনের সমর্থনে টুলকিট তৈরি করায়, সাংবাদিক সিদ্দিকি কাপ্পান হাথরাস কাণ্ডে রিপোর্ট করায়, বিশিষ্ট এবং বরিষ্ঠ সাংবাদিক বিনোদ দুয়া সরকারি নীতির অসঙ্গতি তুলে ধরায় সবাই অভিযুক্ত দেশদ্রোহিতা বিরোধী ধারায়। মণিপুরী সাংবাদিক বলেছিলেন - গোবরে করোনার অসুখ সারে না। তাঁর গ্রেফতার নিরাপত্তা আইনে। ভীমা কোরেগাঁও মামলায় ব্যবহার হচ্ছে UAPA। গ্রেফতার স্ট্যান স্বামী, ভারভারা রাও, গৌতম নওলাখা, সুধা ভরদ্বাজ, অরুণ ফেরেরা, ... প্রমুখ।

অসুস্থ এবং প্রবীণ ফাদার স্ট্যান স্বামীর পুলিশ হেপাজতে মৃত্যুর পর শোকাহত বিশিষ্ট মানুষ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন 124A of IPC ধারার অবলুপ্তি চেয়ে। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সরকারকে নোটিশ দিয়ে জানতে চেয়েছেন - স্বাধীনতার ৭৫ বছর পর এই ধারার কি প্রয়োজন? সরকারের সমালোচনা বন্ধ করাই কি এই ধারার লক্ষ্য? এই প্রসঙ্গ সামনে এসেছিল ২০১৮ সালে; এনেছিল ‘ল কমিশন’। কোনও কাজ হয়নি। আসল কথা, আইন বাতিল করলেই কি সব সমস্যার সমাধান মিটে যাবে? গণতান্ত্রিক দেশে সাধারণ নাগরিকের ছয়টি মৌলিক অধিকার কি সুরক্ষিত হবে? তাহলে 66A of IT Act বাতিলের পর বছরের পর বছর ঐ ধারায় আমাদের রাজ্যে এবং দেশে সহস্রাধিক গ্রেফতার এবং তার সঙ্গে মামলা চলে কি করে? জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার, নাগরিকের ছয়টি মৌলিক অধিকার রক্ষায় ধারা 124A of IPC বাতিল দরকার, অবশ্যই দরকার। তার সঙ্গে দরকার প্রয়োগকর্তা সরকারের (কেন্দ্র এবং রাজ্য) মানসিকতার পরিবর্তন। সাত বছরের মোদি-শাহ-আদিত্যনাথদের সরকার পরিচালনায় প্রমাণিত - গণতন্ত্র আক্রান্ত, সংবিধান আক্রান্ত, মৌলিক অধিকারসমূহ আক্রান্ত। মোদি-শাহ-আদিত্যনাথদের রাজনীতি পরাস্ত না করলে গণতন্ত্র বাঁচবে না, সংবিধান বাঁচবে না, মৌলিক অধিকারসমূহ রক্ষিত হবে না। সেকারণে মোদি-শাহ-আদিত্যনাথদের রাজনীতি পরাস্ত করা জরুরি। কিন্তু আশঙ্কা এখানেই, মোদি বিরোধিতার মুখ হিসেবে সামনে যে মুখ আসছে, তিনি মোদি বিরোধিতা করেন কিন্তু মোদি-শাহ নীতির বিরোধিতা করেন কি? না, করেন না। প্রমাণে - অম্বিকেশ মহাপাত্র, প্রান্তিক কৃষক শিলাদিত্য চৌধুরী (মাওবাদী তকমা, জেল হেপাজত ও ফৌজদারি মামলা), প্রেসিডেন্সি কলেজের ছাত্রী তানিয়া ভরদ্বাজ (মাওবাদী তকমা ও গ্রেফতারের হুমকি), প্রতিবাদী শিক্ষক বরুণ বিশ্বাস (পরিকল্পনামাফিক খুন), ছাত্রনেতা সুদীপ্ত গুপ্ত (পুলিশ হেপাজতে মৃত্যুকে তুচ্ছ ঘটনা), ...। অপরদিকের উদাহরণে - মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, তন্ময় ঘোষ, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়, সোনালী গুহ, বাবুল সুপ্রিয়... শুধু যাওয়া আসা, শুধু স্রোতে ভাসা। তাই ভয় স্বাভাবিক, মোদি চলে গেলেও তাঁর নীতি এবং রাজনীতি থেকে যাবে না তো?


Annexure-1

124A of IPC: which deals with Sedition, states “Whoever, by words, either spoken or written, or by signs, or by visible representation, or otherwise, brings or attempts to bring into hatred or contempt, or excites or attempts to excite disaffection towards, the Government established by law in India, shall be punished with imprisonment for life, to which fine may be added, or with imprisonment which may extend to three years, to which fine may be added, or with fine.”

Explanation 1: The expression “disaffection” includes disloyalty and all feelings of enmity.

Explanation 2: Comments expressing disapprobation of the measures of the Government with a view to obtain their alteration by lawful means, without exciting or attempting to excite hatred, contempt or disaffection, do not constitute an offence under this section.

Explanation 3: Comments expressing disapprobation of the administrative or other action of the Government without exciting or attempting to excite hatred, contempt or disaffection, do not constitute an offence under this section.

Annexure-2

Article 19 in ‘The Constitution of India’: Protection of certain rights regarding freedom of speech etc; All citizens shall have the right
(a) to freedom of speech and expression;
(b) to assemble peaceably and without arms;
(c) to form associations or unions;
(d) to move freely throughout the territory of India;
(e) to reside and settle in any part of the territory of India; and
(f) to practise any profession, or to carry on any occupation, trade or business.