আরেক রকম ● নবম বর্ষ উনবিংশ সংখ্যা ● ১-১৫ অক্টোবর, ২০২১ ● ১৬-৩০ আশ্বিন, ১৪২৮
প্রবন্ধ
উফ! এতো ইকো-ফ্রেন্ডলি কবিতা
শ্রীদীপ
প্রকৃতির বহর ও তার বর্ণনা, প্রেমের মাহাত্ম্য ও তার ন্যাকাপনা, বিরহের কাতরতা ও তার বেদনা - এইসব ল্যাকপ্যাকে, নুয়েপরা, স্মৃতিবিজড়িত কাব্য-উপাদান থেকে বাঙালি কবি ও পাঠকের নিস্তার নেই। যাবতীয় উপমার দলবল, সাধারণত এই চার বিধাতাকে অহরহ পেন্নাম ঠুকে, বাংলা কবিতার কপালে মস্ত কালশিটে ফেলে দিয়েছে। আর সেই চেনা দাগে মলম লাগিয়ে, তাকে তোয়াজ ক'রে বাঁচিয়ে রেখে, তাকে বাছারে-আহারে-সোনারে আদরে ভুলিয়ে রাখার দায়িত্ব নিয়েছেন অধিকাংশ হ’তে-চাওয়া-কবি। সঙ্গে আছেন তাদের হাতে-গোনা চ্যালা ও পাঠক। শূন্য দশক পেরিয়ে, এই একুশে এসেও আমরা ওই একই পেলব পিন্ডি চটকাচ্ছি; নমনীয় পংক্তি আউড়াচ্ছি। বিরহের আনস্মার্ট দুঃখ-বিলাস কপচাচ্ছি। বাজার উদারীকরণের তিন দশক পরে, সমকাল ও সমসময়ের প্রতিফলন বাংলা কবিতায় অবিদ্যমান না হ'লেও, তা বিরল ও ব্রাত্য।
ধোঁয়াটেপনাকে সম্বল ক'রে কলম চালাবার অধিকার, অনুমতি ও স্বাধীনতা সৃষ্টিশীল মানুষের আছে ঠিকই। কিন্তু এক্ষেত্রে, স্বচ্ছতা-বিরোধী পথযাত্রা ও বিমূর্ত ভাবাবেগকে সম্বল ক'রে প্রকৃতি-পুজোয় মত্ত হয়েছে একাধিক কবি-প্রজন্ম - নবীন, প্রবীণ, যুবা, প্রৌঢ় নির্বিশেষে। এক অদ্ভুত মন্ত্র দ্বারা বশীভূত হ’য়ে ইকো-ফ্রেন্ডলী কবিতার মহাযজ্ঞ চলেছে তো চলেছেই। অপরিহার্য উপাদান হিসেবে সেখানে ঢ’লে প’রেছে অবিরত ফুল, ফল, মেঘ, স্বপ্ন, সমুদ্র, নদী, ঝর্ণা, কোটর, লতাপাতা, ভৈরব, রজনী, হরিণ, গ্রীষ্ম, বর্ষা, বৈশাখ, বসন্ত, বিষাদ, ব্যথার জাহাজ, মনখারাপের মহিমা - ও এ জাতীয় আরও কতো অতিব্যবহৃত বিলাপ। সেখানে অফুরন্ত ‘ভরা চাঁদ’, ‘ঝরা পাতা’; বিস্তর ‘হুহু আর্তনাদ’; আকছার বৃ’ষ্টিভেজা নরম ঘাস’; যখন তখন ‘ভোরের প্রথম পাখি’; যেখানে সেখানে ‘মেঠো ধূসরতা’; ও ‘স্নিগ্ধ কোমল সবুজের’ জয় জয়কার। এমনটা নয় যে এ-সকল চেনা উপকরণ, বিভিন্ন বাঙালি কবির চিরপরিচিত যাপন ও আকাঙ্ক্ষিত জীবনধারার অন্তর্গত। কিন্তু এগুলি তার অলস মননের রোমাঞ্চকর মানচিত্র। এগুলি তার ভাবনার অপরিহার্য একঘেয়েমি, যা তার ঝোলায় হাত ঢোকালেই মুঠো-মুঠো বেড়িয়ে আসে। এটা বাংলা কবিতার জ্বর-ঘোর-ব্যাধি যা কোনো ক্রোসিন-এই কাটতে চাইছে না। বাংলা কবিতায় চাঁদের প্রাচুর্যে পাঠকের চোখ খারাপ হওয়ার জোগাড়। কবির আত্মধ্বংসের স্পৃহায় আত্মহত্যা-ইচ্ছের জোয়ার!
ভাবতে অবাক লাগে, এই বিপন্ন সময়েও বাংলা ভাষা ও সে ভাষায় লেখা নমনীয় কবিতাসকল কতোই না নিষ্পাপ, নির্মল, পবিত্র, ভেষজ ও ক্লিশে-ময়। গোটা কাব্যধারা নস্টাল-বাতিকগ্রস্ত; নস্টাল-আক্রান্ত। বাঙালি বড় বেশি জর্জরিত প্রকৃতির উপমায় ও রূপক-এ। সেই আরাম কেদারা থেকে তাকে টেনে হিচড়ে ওঠায়; কার সাধ্যি। প্রকৃতিতে মগ্ন না হ'লে তার কাব্যি-কাজ সম্পন্ন হয় না; কবিতাও ততোটা কাব্যময় হয় না। দু'চারটে অযথা ফুল-পাপড়ি-অংকুর ও অপ্রয়োজনীয় বৃষ্টি না ঝরালে, তার মন ভেজে না। আমাদের গুরুদেব কবিরা, আমাদের জীবন কবিরা, আমাদের শক্তিমান কবিরা, আমাদের জয়ী কবিরা - একটু বেশিই বাতাবরণ প্রেমিক। আমাদের সেলিব্রিটি কবিরা এমনই প্রাকৃতিক আধিক্যের নিদর্শন রেখে গেছেন পাতায় পাতায় যে ছেলে-ছোকরা কবিদের সাহসই হ’চ্ছে না একটু অবাধ্য হ'তে।
কবিতার পাঠক হিসেবে বিরক্ত হই। একই পথ্য দিনের পর দিন আর কাহাতক পোষায়! শরীর পুরোনো হচ্ছে, সঙ্গ পাল্টাচ্ছে, নাগরিক অভিজ্ঞতা বদলাচ্ছে, পরিবর্তন ঘটছে সামাজিক প্রেক্ষাপটে, ডিজিটাল মধ্যস্ততায় সকলই হ’য়ে উঠছে স্বল্পস্থায়ী। কিন্তু শিথিল এক জড় পদার্থের মতো থেমে আছে বাংলা কবিতার উপমা, রূপক, সীমানা, চৌহদ্দি, বিষয় বস্তু, আখ্যান ও আঙ্গিক।
হাতে গোনা কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া, বাংলা কবিতা পণ করে প্রতিনিধিত্ব করছে এক শাশ্বত-অনাদি সত্যের যা আদতে দার্শনিকের কাজ। সমসাময়িকের প্রতি, প্রতিদিনের প্রতি, বর্তমানের প্রতি, বস্তু জগতের প্রতি যথেচ্ছ উপেক্ষা, অবহেলা, অবজ্ঞা, তাচ্ছিল্য থাকবে - তবে না সে কবি! এই ইচ্ছাকৃত অস্বীকার, এই বিলাস-ত্যাগী ভাবমূর্তি, এই পরিকল্পিত প্রত্যাখানের মূলে আছে এক অব্যক্ত অহমিকা। আছে বিষয়বস্তু বিভাজনের এক রক্ষণশীল ধারণা: সময়কে লিখবার দায়ভার ও তাকে ব্যাখ্যা করার দায়িত্ব অধ্যাপকের, গবেষকের, সাংবাদিকের, বিচারপতির আরো যতো আন-পোয়েটিক গদ্যময় লোকজনের। কবি কেবলই আচ্ছন্নময়ী কল্পরাজ্যের মায়াবী পথে বিচরণ করবেন। ফলপ্রসূত: ধূসর স্বভাবের কুন্ডলি পাকানো যে বাষ্প-ধোঁয়ার অস্বচ্ছতা জন্মাবে, তারই নাম অর্গানিক-বাংলা-কবিতা। এই (অ)প্রকিতস্থ কাব্য-দর্শনের ফলে বিপুল পরিমাণ ভাষা ও ভাবদূষণ সৃষ্টি হয়েছে। তাকেই সম্বল ক'রে প্রকাশক ফেঁদেছেন জালিয়াতি-জোচ্চুরির কবিতা-ব্যবসা। তা অধিকাংশ সময় কবিরই টাকায় - অথবা কবিকে বিন্দুমাত্র রয়্যালটি না দিয়ে চালিত। কবি রয়্যালটি না পেলেও, পাচ্ছেন ছাপা অক্ষর ও কিছু বিক্ষিপ্ত পিঠ চাপড়ানি; প্রকাশকের বাড়ছে বইয়ের তালিকা; বইমেলা পাচ্ছে আরো আরো কনটেন্ট। কাগজওয়ালা পাচ্ছে কিলো-দরে রদ্দি। জল-পড়ে-পাতা নড়ে মোড-এ দারুণ চলছে কবি-পূজা। লহো এ নগর, দাও ফিরে সে অরণ্য-এর জবজবে দরদী ভাবাবেগ রমরমিয়ে বিকোচ্ছে এখনও। বিস্তার করছে তার প্রভাব; করছে বংশ বৃদ্ধিও। দশকের পর দশক ধ'রে স্হাপন করছে আত্মমগ্ন, একঘেয়ে, ফর্মূলা-ভিত্তিক, পঙ্গু কবিতা।
কবি মুঠোফোন-নিমজ্জিত, সোশ্যাল-মিডিয়া-পারদর্শী আদন্ত্য নাগরিক হ'লেও তাঁর কবিতার আঙ্গিক ও বিষয়বস্তু পল্লী-প্রকৃতি-পদ্মের পাতায় জলের কণার প্রতি দায়বদ্ধ। সেই পরিশীলিত স্নিগ্ধ প্রশান্তিতেই তাঁর আরামের ঘুম। সেখানে ভাবাবেগে ল্যাপ্টানো থলথলে পুনরাবৃত্তি আছে; আছে হৃদয়ের বাড়াবাড়ি; তালপাতার ছাউনি, বাঁশের খুঁটি; নরম বিস্কুটের মায়া; স্নেহ-মশলায় জড়ানো গ্রামীণ ঘুগনি; বিনিদ্র শিশিরের ঘ্রান। আছে মাখো-মাখো মেলোড্রামাটিক সম্পর্কের মায়া; দুঃখ-ব্যথার আতিশয্য; জীবন-আনন্দের নিঃশর্ত আরতি। আছে শ্লথ-উদাসীন শ্রাবণ; তথাকথিত সূক্ষ্ম অনুভূতির চৈত্র-সেল। সেখানে বিতরণ হচ্ছে গাদা গাদা বিষাদগ্রস্থ মন, শীতল রক্ত, বিপন্ন আত্মা, ভেজা চোখ, শান্ত শিউলি, বিশুদ্ধ মৃত্যু ও শূন্য আকাশের নৈঃশব্দ্য। বাংলার উর্বর মাটিতে আর্দ্রতা এতো বেশি যে কবিদের আর দোষ কি? কলম বা কি-বোর্ডে হাত পড়লেই পাতা বা পর্দা, নির্ঝর বারিধারায় ভেসে যায়।
যারা এ ভাষায় কাব্য রচনা ক'রে সুনাম কিনেছেন, তাদের কেউ কেউ খালাসীটোলায় রোজ ঘটা ক’রে ছড়িয়েছেন। কেউ কেউ আবার চূড়ান্ত আত্মদম্ভে ভুগেছেন। কেউ স্বীকৃতি না পাওয়ার যন্ত্রণাকে নেশায় ডুবিয়ে প্রলাপ বকেছেন। না পাওয়ার দৈন্যকে মহিমান্বিত ক'রে প্রতিষ্ঠা ও প্রতিষ্ঠিত কবিকে দূরছাই করেছেন। কিন্তু সফল-অসফল, নামি-বেনামি সকলেই মোটের ওপর, নগর-যন্ত্র-প্রযুক্তি ও উত্তর-আধুনিক যা কিছু আছে, তাকে হেও ক'রে, ব্যঙ্গ ক'রে, বিদ্রূপ ক'রে, ঘৃণা ক'রে, অকিঞ্চিৎকর ক'রে কাব্যধারার এক ঘরানা নির্মাণ করেছেন। সে ঘরানার একমাত্র প্রচলিত ভাষা: তার সারল্য ও সাদাসিধেমির ভনিতা। নগরে থেকেও নাগরিক চেতনাকে প্রত্যাখ্যান করাই তার অভিসন্ধি। মাটির কাছে ফিরে যাওয়ার আস্ফালনই, সেই গড্ডালিকা প্রবাহের কর্মসূচি। গ্রামীণ দৃশ্য-রূপ-রস-স্বাদ-গন্ধে বুদ হ'য়ে থাকাই সেই গ্যাদগ্যাদেমির মূলধন।
ব্যতিক্রম নিশ্চই আছে, কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে যে প্রবণতা লক্ষণীয়, সেটাই এখানে আলোচ্য বিষয়। প্রকৃতি-উন্মাদনা ছাড়াও আরো কিছু পারস্পরিক সম্পর্কযুক্ত চারিত্রিক বৈশিষ্ট বাঙালি কবির বাঁধাধরা। তাকে বোঝানো হয়েছে এ সকল ব্যাধির সম্মিলিত প্রভাব না থাকলে বাঙালি কবি সম্মেলনে সে আমন্ত্রণ বা পিঠ চাপড়ানি, কোনোটাই পাবে না:
১) আত্ম-করুণা (আমি তেমন সমাদর পেলাম না);
২) আত্ম-ধ্বংস (নেশা ক’রে উচ্ছন্নে যাওয়ার রোজকার আয়োজন না থাকলে কবি-ভাব আসবে না);
৩) প্রতিষ্ঠান-বিরোধিতা (যা কিছুর বাজার আছে ও যার বিক্রি আছে তা নিকৃষ্ট মানের);
৪) দীনতার-অহং (কাঁধে ঝোলা, মলিন বস্ত্র, দেহে দারিদ্রতার পরিকল্পিত ছাপ, সদা সাদাসিধে থাকার প্রচেষ্টা - এগুলো গুরুত্বপূর্ণ সামগ্রী, প্রপ বা কস্টিউম);
৫) আসলেমী ও অগোছালোপনা (ডেডলাইন ও ডিসিপ্লিনের প্রতি অবজ্ঞা না থাকলে কবি হওয়া যায় নাকি!);
৬) সাবঅল্টার্ন-সমবেদনা (প্রান্তিক ও পদদলিত সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করার ছটফটানি);
৭) সাম্য-চেতনা ও যৌথ-খামারের-স্বপ্ন (নিপীড়িত মানুষ একদিন বিপ্লব ঘটাবে - শ্রেণিহীন সমাজের টিকিট আমরাই বিলি করবো কাগজে-কলমে);
৮) প্রযুক্তি-অনীহা (প্রযুক্তির প্রতি সুসজ্জিত ঘৃণা - কলম কাগজ ছোঁবে, তবে না কবির ম'নে হবে সে তার রক্ত দিয়ে লিখছে!);
৯) সচ্ছলতা, বিলাসিতা, বাণিজ্য-বুদ্ধির প্রতি সুসজ্জিত ঔদাসীন্য।
দুঃখবিলাসী না হ’লে কবি হওয়া যাবে না, এমন একটা ধারণার শিকার সে শুরু থেকে। ভালো থাকলে, ভোগী হ'লে আর যাই হোক কবি হওয়া যাবে না - এমনই এক কালজয়ী সাংস্কৃতিক দায়ভার মাথায় নিয়ে সে কাব্য করতে এসেছে।কিন্তু উপস্থাপনায় চাকচিক্য থাকলে তা কি সর্বদাই ফাঁপা হয়? নাকি বেহিসেবি ও উদাসীন জীবন মানেই তা মহৎ ও সৎ? অভ্যন্তরীণ ঐশ্বর্য্য বজায় রাখতে গেলে, আড়ম্বরকে অশ্লীল ঠাউরানো একান্তই আবশ্যক কি? এগুলি কি আদতে আপাতবিরোধী, নাকি এই বিভাজনগুলি গড়ে তুললে বঞ্চনা ও স্বীকৃতির অভাবটাকে রোমান্টিসাইজ করতে সুবিধে হয় খুব? বস্তুগত বিলাস ও শিল্পের গুণগত মান পরপস্পর-বিরোধী নয়। তা পরপস্পর-বিরোধী, এমনটা কিছু ভন্ড ঋত্বিক-ভক্ত ম’নে করলেই সেটা সত্যি হ’য়ে যায় না। দীনতার গ্লানিমা বস্তুসম্পদের আরাম, কোনটা কাকে কীভাবে অনুপ্রাণিত করবে, সেটা সাংস্কৃতিক-জেঠুরা নির্ণয় ক'রে দিলে মহা মুশকিল। তখন মোটের ওপর একই ধারার, একই ধরণের, একই ঘরানার শিল্প-মনষ্কতা প্রশ্রয় পায় ও তার বংশবৃদ্ধি হতে থাকে অবলীলায়।
আমার অভিমত অধিকাংশ পাঠকের ভালো লাগবে না - আর সেটাই স্বাভাবিক ও অভিপ্রেয়। তা সে আপনি অবজ্ঞাই করুন বা তেলে-বেগুনে জ্বলেই উঠুন বা আপনাদের কবিতা আরো আরো ইকো-ফ্রেন্ডলি হ'য়ে উঠুক, আমি আরো জোর গলায় ব'লবো: এ প্রকৃতি উপত্যকা আমার দেশ না। প্রকৃতি-প্রেম-বিরহ-স্মৃতি কেন্দ্রিক কবিতার পৃষ্ঠপোষকতা ক'রে যারা বহু প্রজন্মব্যাপী এক নির্মল ও নর্মাল কাব্য প্রবণতাকে চাগার দিয়ে চলেছেন - তাদের সাংস্কৃতিক গতিবিধিকে অত্যন্ত সন্দেহের চোখে দেখার প্রয়োজন। তাই আমার পাঠ প্রতিক্রিয়াশীল। আমার মতো অনেকেরই পাঠকসত্ত্বা ব্যতিক্রম খোঁজে। অস্থির মন মরিয়া নতুন ভাষা, অভিনব শৈলী ও অদ্ভুত বিষয়ের সন্ধানে। যেখানে থাকবে অবাধ্য কবির তছনছে দস্যিপনা।
আকুলতা/ব্যাকুলতার বিষাদসাগরে - মগজ, শরীর, হৃদয় - কিছুই আর তেমন জাগছে/ভিজছে না। প্রকৃতি-চর্চা, ন্যাকামি আর আত্ম-করুণার ওভারডোজ সমাপ্ত হ'লে, বাংলা কবিতায় কিঞ্চিৎ নতুন আলো অত্যাবশ্যক - সেটার উৎস, চাঁদ-সূর্য-গোধূলি-জোনাকি-মোমবাতি-প্রদীপ না হ'লেই ভালো। বাংলা কবিতা মুক্তি পাক এ আনন্দলোক-মঙ্গলালোকের অকপট সারল্য থেকে। বাংলা কবিতার আরোগ্যের জন্য কামনা করি গুচ্ছগুচ্ছ বিশৃঙ্খলতা, ঢালাও নাগরিক-জটিলতা, নিমগ্ন ডিজিটাল-জীবন ও তার প্রতিনিধিত্ব।