আরেক রকম ● নবম বর্ষ উনবিংশ সংখ্যা ● ১-১৫ অক্টোবর, ২০২১ ● ১৬-৩০ আশ্বিন, ১৪২৮
প্রবন্ধ
এক দিন ফোনহীন
অম্লানকুসুম চক্রবর্তী
বাসের প্রবল ভিড়ে মোবাইল ফোনটা টুক করে চুরি যাওয়ার পরে আত্মধিক্কার ছিল। আজকের দিনে জলই জীবন নয়, ফোনই জীবন। ফোন মানে তো পৃথিবী। ফলে তা লোপাট হওয়ার পরে মনের মধ্যে ‘হায় হায় কি হারাইলাম’ ছিল। সতেরো হাজার টাকার অরূপরতন এক নিমেষে হাওয়া। হারিয়ে যাওয়া মাত্র নতুন ফোন কেনা সহজ কথা নয়। দিন তিন-চারেক পরে অনেক কষ্টে এদিক ওদিক থেকে কুড়িয়ে বাড়িয়ে নয়া ফোন কেনা হল। তবে মুশকিলটা হচ্ছে, নতুন ফোন কেনার পরে মনের মধ্যে বিবেকের যে অঙ্কুরোদগম হল, তার মধ্যে লেপ্টে ছিল আরও বেশি আত্মধিক্কার। ‘দিব্যি ছিলাম তিন-চার দিন বুঝলি, মনে হচ্ছিল সারা গায়ে যে শেকল পরে রেখেছিলাম এতদিন, হঠাৎ করে তা যেন খুলে দিয়েছে কেউ। ইস, এইভাবে বাকি জীবনটা কাটাতে পারলে কি ভালই না হত' - বন্ধুর কথার মধ্যে উথাল-পাথাল করছিল দীর্ঘশ্বাস। মালুম হয়েছিল, তিন-চার দিন ফোনহীন হয়ে এক অচেনা ছুটির স্বাদ পেয়েছিল ও।
তিন-চার দিন ফোন ছাড়া থাকাটা আজকের দুনিয়ায় হয়তো বাড়াবাড়ি। কিন্তু, মোবাইল ফোনকে বাধ্যতামূলকভাবে সপ্তাহে একদিন ছুটি দেওয়ার জন্য রব উঠছে বিশ্বজুড়ে। যাঁরা একবার ফোনহীন দিনযাপনের সুযোগ পেয়েছেন, তাঁরা বলছেন, সব হারিয়েও দিনের শেষে ওই দিনটা কার্যত হয়ে উঠছে সব পেয়েছির দেশ। ক্রমাগত ফোন বেজে ওঠা নেই, ফড়িংয়ের ডানা ঝাপটানোর মতো নোটিফিকেশনের টিরিং টিরিং ধ্বনি নেই, এসএমএস-এর আর্তনাদ নেই, সামাজিক মাধ্যমের কালো ফুলের বাগান নেই, গাড়িতে ওঠার পরই ব্লুটুথের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে কানেক্ট হয়ে যাওয়া নেই। মোবাইল হারানো বন্ধুর কথায়, ‘ফোনটা গেল, তাই আর বকর বকর করতে করতে ড্রাইভ করার সুযোগ রইল না। কাঁচটা নামিয়ে দিলাম। হাওয়ার সোঁ সোঁ শব্দের মধ্যে যে অদ্ভুত এক মাদকতা আছে, ফোনটা চুরি না গেলে হয়তো এই সত্যিটা হয়তো টেরই পেতাম না কোনওদিন'।
দিনকয়েক একটু অন্যরকমভাবে বাঁচার সুযোগ পাওয়ার জন্য আমার স্কুলজীবনের বন্ধু চোরবাবাজিকে আশীর্বাদ করেছিল কি না জানি না, তবে দুনিয়াজুড়ে বহু মানুষই চাইছেন, একদিনের জন্য ফোনটি ভ্যানিশ হয়ে গেলে বেশ হতো। অনেক মানুষের মধ্যে প্রচ্ছন্নভাবে লুকিয়ে থাকা এই স্বর ক্রমশ সমস্বর হওয়ার জন্যই হয়তো এদিক ওদিক থেকে 'সপ্তাহে একদিন ফোনহীন' হওয়ার পক্ষে দাবি উঠছে। আইটি পড়া ভাইটির জন্য আছে বিধাননগরের তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলোর এক সংগঠন। নাম তার 'সেক্টর ফাইভ স্টেকহোল্ডার্স অ্যাসোসিয়েশন'। জীবনকে একটু হলেও ফোনমুক্ত করার জন্য ওই সংগঠকের আধিকারিকরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সপ্তাহের এক দিন পালন করতে হবে 'নো ফোন ডে' হিসেবে। অর্থাৎ, ওই একটি দিনে বেঁচে থাকার সবটুকুই থাকবে, শুধু ফোনটুকু ছাড়া। তাঁরা হয়তো মনে করেছেন, ফোনহীন দিন প্রকৃতপক্ষে বেঁচে থাকার ‘উপকরণ’ বাড়াতে সাহায্য করবে। সেক্টর ফাইভে যে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলো আছে, তাদের কাছে এবারে আবেদন করার পথে হাঁটতে চলেছেন ওই সংগঠনের আধিকারিকরা। সংস্থাগুলো এ প্রস্তাব কতটুকু মানবে তার উত্তর আপাতত সময়ের কাছে রয়েছে।
হোয়্যাটসঅ্যাপ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র যাঁরা, যাঁদের শিরা ধমনী দিয়ে প্রতিনিয়ত বইতে থাকে সামাজিক মাধ্যমের পোস্ট, কান পাতলেই কিচিরমিচির করে টুইটারের পাখি, তাঁদের কাছে এমন সংবাদ মীরাক্কেলের কোনও এক লাইনের চুটকির মতো। এ আবার হয় নাকি? আপনি কি বদ্ধ উন্মাদ? তবে জীবনকে আংশিকভাবে হলেও ফোনহীন করতে চান, এমন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে ক্রমশ। যান্ত্রিক সভ্যতার যাঁতাকলে পড়ে গিয়ে বহু মানুষ এর থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে চাইছেন। এই মুক্তির সংবাদ যদি সংস্থার মানবসম্পদ আধিকারিকের সই-সহ আসে তাহলে অনেকে খুব খুশি হবেন, এ কথা বলতে খুব একটা দ্বিধা নেই। ফোন নিয়ে ক্লান্ত, তথ্যপ্রযুক্তির অনেক কর্মীই বলছেন, এই আবেদনে তাঁদের সংস্থা যদি সাড়া দিতে রাজি হয়, তাহলে তা কর্মীদের একটা দিন আরও ভাল ভাবে বেঁচে থাকার রসদ যোগাবে।
পৃথিবীর বহু সংস্থাতেই ইতিমধ্যে চালু হয়ে গিয়েছে 'নো ই-মেল ডে' বলে একটা রেওয়াজ। এর মানে হল, খুব প্রয়োজন ছাড়া কোনও কর্মী ই-মেল পাঠাতে পারবেন না তাঁর সহকর্মীকে। চোখের মধ্যে আঠা লাগিয়ে যে কর্মীরা ল্যাপটপের পর্দার দিকে চেয়ে থাকেন সারাদিন, আউটলুক এক্সপ্রেসের পপ-আপ ওঠার হাত থেকে তারা সাময়িক নিষ্কৃতি পাবেন। এক বন্ধুর কথায়, ‘মন দিয়ে হয়তো একটা কাজ করছি বুঝলি। হঠাৎ স্ক্রিনের ডানদিক থেকে একটা ই-মেলের পপ-আপ ছোবল মারল। ই-মেলটা দেখতে ইচ্ছে করে না মোটে, কিন্তু ওই যে, যতক্ষণ তা পর্যন্ত ওই ই-মেলে একবার চোখ বোলাতে না পারছি মনের মধ্যে একধরণের খচখচানি থেকে যায়। আর হায়ার ম্যানেজমেন্টের থেকে যদি ই-মেলটা আসে, আমি জানি তার মধ্যে আঁকশির মতো জুড়ে থাকে নতুন কোনও কাজ। ফলে যেটা মন দিয়ে করার চেষ্টা করছিলাম এতক্ষণ, সেই কাজটার দফারফা হয়।’ ফলে সহে না যাতনা জপতে জপতে যে কর্মচারীরা এত দিন হা হুতাশ করছিলেন, 'নো ই-মেল ডে' চালু হওয়ার ফলে তাঁদের অনেকেরই গায়েই তাজা হাওয়ার প্রলেপ লাগতে শুরু করেছে নতুন করে।
মনোবিদরা বলেন, মাল্টিটাস্কিং হওয়ার মুরোদ সবার জিনের মধ্যে থাকে না। ফলে একটা কাজের মধ্যে ডুবে থেকে সেই কাজটা মন দিয়ে শেষ করে পরের কাজে যাঁরা ঢুকে যেতে চান, তাঁদের কাজের দরজায় বারবার টোকা মারলে কার্যত কাজ করার ইচ্ছেটাই মস্ত বড় ধাক্কা খায়। সপ্তাহের এক দিন যদি ই-মেলহীন হয়, তাহলে কোনও কাজে আরও একটু মন দেওয়ার একটা বড় পরিসর খুলে যায় হয়তো। ই-মেলহীন দিনের খবরটা পাওয়ার পরে এক কবি বন্ধু বলেছিল, ‘আউটলুক এক্সপ্রেস নিজের ছন্দে সেন্ড রিসিভ করবে, করতেই থাকবে, প্রোগ্রেস বার তার অন্তরে শুধু পুরে নেবে হাওয়া। 'নো ই-মেল ডে'-র গায়ের গয়না হয়তো এমন স্বস্তি দিয়েই তৈরি।‘ ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সমীক্ষা অনুযায়ী, আমাদের দিনযাপনের সঙ্গে লেপ্টে থাকে যে স্ট্রেস, তার জন্য অনেকাংশেই দায়ী হল ই-মেল। বারবার ই-মেল দেখলে একজন মানুষের উৎপাদনশীলতা যে কমে যায়, একথা দুনিয়াজুড়ে নানা সমীক্ষায় প্রমাণিত হয়েছে বহুবার। যে সংস্থার মানবসম্পদ আধিকারিকরা তাঁদের কর্মীদের সত্যিই ‘সম্পদ’ হিসেবে ভাবেন, তাঁরা চেষ্টা করে যাচ্ছেন সপ্তাহে একদিনের জন্য হলেও ই-মেলের বোঝা কমাতে। অফিসের ই-মেল মোবাইলে যেন কনফিগার না করা হয়, তা নিয়ে বহু নামজাদা সংস্থায় ফরমান জারি করা হয় রীতিমতো। এমন সংস্থার কথাও জানি, কোনও কর্মী যদি ছুটিতে যান, তাঁর ই-মেলটাই বন্ধ করে দেওয়া হয় সাময়িকভাবে। কাজের দিনে যে মানুষটি প্রতি দশ মিনিটে মোবাইলের পর্দায় আঙুল বুলিয়ে জেনে নিতে চান নয়া ই-মেলের সন্ধান, তিনি সমুদ্রের ধারে কিংবা পাহাড়ের কোলে বসে থাকলে তা যেন না করতে পারেন, তার ব্যবস্থা করে দিচ্ছেন এইচআর-এর আধিকারিকরাই। ছুটি যেন নিখাদ ছুটি হয়, তা নিয়ে বহু সংস্থারই কর্তাব্যক্তিদের উদ্যোগের ত্রুটি নেই। বহুজাতিকের তকমা না লাগা, বেস্ট প্লেসেস টু ওয়ার্কের শিরোপা না পাওয়া সংস্থার কর্মীদের কাছে এমন তথ্য স্বপ্নের মতো লাগে। তবে কর্মীরা যেন আরও একটু ভালভাবে থাকতে পারেন, তা নিয়ে কাজ শুরু হয়েছে বিশ্বজুড়ে।
ই-মেলের থেকে তো মোবাইলের ডানার ঝটপটানি অনেক বেশি। 'নো ফোন ডে'-র পক্ষে সওয়াল করছেন যাঁরা, তাঁরা বলছেন, বাইরে থেকে ফোন এলে তো রিসিভ করা ছাড়া গতি নেই। তবে নিজের কাছে নিজেই একটা প্রতিশ্রুতি করা যেতে পারে - আমি আজ ফোন করব না কাউকে। কোনও সংস্থার সব কর্মীরা যদি এই পন্থা সপ্তাহে একদিনের জন্যও নিয়ে নেন, তাহলে নিজেদের মধ্যে কাজ সম্পর্কিত ফোনের সংখ্যাটা এক ধাক্কায় অনেকটা কমিয়ে দেওয়া যেতে পারে। এক্ষেত্রে ফোন ব্যবহার মানে শুধু ভয়েস কলের কথা বলা হচ্ছে না। সার্বিকভাবে মোবাইল সেটটির থেকেই একদিন ছুটি নেওয়ার কথা উল্লেখ করা হচ্ছে। যে সামাজিক মাধ্যম আমাদের দিনের অনেকটা সময় কার্যত খেয়ে নেয়, মনোবিদরা বলছেন, তার থেকে সপ্তাহে এক দিন দূরে থাকতে পারলে নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিধিটা বাড়বে। অফিস-আওয়ার্সে নিজের সঙ্গে সময় কাটানোর মানে গল্পের বই পড়া কিংবা ম্যাগাজিনের পাতা উল্টে দেখা নয়, নিজের সময় মানে নিজের কাজের জন্য সময়। এমন কয়েকটা ঘন্টা, যখন নিজের পছন্দমতো কাজে ডুবে যাওয়া যেতে পারে ইচ্ছেমতো। কাজ করার সময় মোবাইলের পর্দার দিকে প্রতি মিনিটে চোখ যেতে থাকলে সেই কাজ করতে যতটা সময় লাগার কথা, এক মনে সেই কাজ করার সুযোগ পাওয়া গেলে কাজের প্রতি একাগ্রতা বাড়বে। মানবসম্পদ ম্যানেজমেন্টের চিরাচরিত সমীকরণ জানান দেয়, কাজের প্রতি একাগ্রতা কর্মীর উৎপাদনশীলতার সঙ্গে সমানুপাতিক। অর্থাৎ, মন দিয়ে কাজ করলে তা করতে সময় কম লাগে। কাজটাও নিখুঁত হয় আরও। এ এক সোজা হিসেব।
'নো ফোন ডে' মনের মধ্যে তাজা বাতাস এনে দেবে কি? স্ক্রিনপাগলরা কি একদিনের জন্য হলেও খানিক শান্ত হবেন, শান্তির খোঁজে? সমীক্ষা বলছে, এ দেশের একজন মানুষ দিনে পাঁচ ঘন্টা তাঁর পরম মিত্র মোবাইল ফোনটির সঙ্গে সময় কাটান। আট ঘন্টা ঘুম বাদ দিলে দিনে যদি আমরা ষোল ঘন্টাও জেগে থাকি, মোবাইল ফোন তার প্রায় এক তৃতীয়াংশ সময় খেয়ে নেয়। দিনে তিনশো মিনিট হলে তা মাসে দাঁড়ায় ন’হাজার মিনিটে। অর্থাৎ বছরে এক লক্ষ আট হাজার মিনিট। বেঁচে থাকার বছরগুলো দিয়ে এই সংখ্যাকে গুণ করা হলে তা কার্যত আকাশ ছোঁয়। চিকিৎসকদের একাংশের দাবি, যাঁরা ফোনের সঙ্গে দিনে ঘন্টার পর ঘন্টা লেগে থাকেন, বলতে গেলে বেঁচে থাকেন শুধুমাত্র ফোনের জন্যই, মস্তিষ্কের কর্কটরোগ ডেকে আনার সম্ভাবনা তাঁদের মধ্যে প্রায় বহুগুণ বেড়ে যায়। এই তথ্য নিয়ে অন্য পক্ষের চিকিৎসকেরা প্রশ্ন তুললেও জোর দিয়ে এখনও বলে উঠতে পারেননি, ইহা ভ্রান্ত। শুধু কর্কটরোগ নয়, এর পাশাপাশি জুড়ে বসতে পারে ক্ষয়ে যাওয়া মনোযোগ, মাথাব্যথা, ঠিক সময়ে ঘুম না আসার মতো সমস্যা, এমনকি অবসাদও। চিকিৎসাশাস্ত্রের নানা জার্নালের সমীক্ষা এই তালিকাকে ক্রমশ অন্তহীন বানায়। কেউ বলেন গর্ভবতী মহিলারা ক্রমাগত মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তা বিরূপ প্রভাব ফেলে নতুন প্রাণটির উপরে। চোখের ডাক্তারবাবুরা বলেন, জীবনের এই ডিজিটাল মণির জন্য চোখের মণির বারোটা বাজে ক্রমশ। মোবাইল ফোনের পর্দা থেকে বেরনো আলো নাকি ক্রমশ আমাদের চোখকে অন্ধকারের দিকে নিয়ে যায়। স্নায়ুরোগবিশেষজ্ঞরা বলেন, শুধু চোখের কথা বললেই এপিসোড শেষ হয় না, তিল তিল করে স্নায়ুতন্ত্রে ঘুন ধরানোর লড়াইয়েও ক্রমশ জিতে যাচ্ছে মোবাইল।
ফোন ব্যবহার করতে না পারার মধ্যে যে ভয়, তার বেশ একটি বাহারি নাম আছে - নোমোফোবিয়া। মানে হল, নো মোবাইল ফোন ফোবিয়া। অনেকেই আন্তরিকভাবে চেষ্টা করছেন এই ভয় কাটিয়ে উঠে একদিন নিজের মতো করে জীবনকে উপভোগ করতে। বিশেষজ্ঞদের অনেকের দাবি, শুধু তথ্যপ্রযুক্তি কেন, খুব জরুরি পরিষেবার সঙ্গে জড়িয়ে না থাকলে সমস্ত অফিসেই সপ্তাহে একদিন চালু করে দেওয়া যেতে পারে এই নয়া নিয়ম। তবে তাঁদের ভয় অন্য। বলছেন, অফিসের দরজায় আঙুল ঠেকিয়ে পাঞ্চ আউট করার পরেই অনেকের কাছে নিশির ডাকের মতো আহ্বান জানাবে মোবাইল। সেখানে আসল যুদ্ধটা জেতার চেষ্টা করতে হবে নিজেকেই।
অনেকে আবার মুচকি হাসছেন। তাঁরা বলছেন, সিগারেট-অ্যালকোহল ছেড়ে দিলে উইথড্রয়াল সিনড্রোম যেমন হয়, এক্ষেত্রেও তেমনটা হওয়া খুব স্বাভাবিক। ভাল থাকার জন্য জেতার চেষ্টা থাকা চাই। আন্তর্জালে একটু চোখ রাখলেই দেখা যাবে, পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বহু মানুষ তাঁদের 'একদিন ফোনহীন' থাকার কথা শেয়ার করেছেন। সিংহভাগই বলেছেন, ওই দিনটি অনেকটা স্বপ্নসম্ভবের মতো ছিল। একজনের কথায়, ‘দিনের মধ্যে কি কেউ পুরে দিয়েছিল কয়েক গ্যালন অক্সিজেন?’ কেউ লিখেছেন, ‘সাত তলার অফিসের সামনে যে বিরাট একটা পুকুর আছে, না না পুকুর না, ওয়াটারবডি, তার পাশে এতগুলো বক মিছিল করে রোজ? আগে চেয়ে দেখিনি তো।’ অন্য একজন বলছেন, ‘বৌকে ভীষণ ভালবাসতে ইচ্ছে করছিল জানেন। লাঞ্চবক্সে যে স্যান্ডউইচটা ছিল, জাস্ট অসাম। সপ্তাহের চারদিনই স্যান্ডউইচ দেয়। রোজই খাই, ফেসবুক দেখতে দেখতে। আজ ফোনটা ছিল না।’
ফোনহীন দিনে কি স্বাদকোরকও চাঙ্গা হয়ে ওঠে আরও?