আরেক রকম ● নবম বর্ষ ষষ্ঠদশ সংখ্যা ● ১৬-৩১ আগস্ট, ২০২১ ● ১-১৫ ভাদ্র, ১৪২৮

সমসাময়িক

বই পড়া এবং বই পাড়া


নেশার মধ্যে সবচেয়ে কড়া অথবা চড়া বোধ হয় পড়া। বই পড়ার নেশায় একবার মজে গেলে মহা মুশকিল। হাতের কাছে কোনো জুতসই বই না পাওয়া গেলে শরীর নয়, মন ম্যাজম্যাজ করে। আর কিছুই না পাওয়া গেলে খুঁজে পেতে পুরোনো খবরের কাগজ বের করে জাবরকাটা ছাড়া উপায় কী? আর অবস্থা আরও সঙ্গিন হলে হাতের কাছে যা পাওয়া যায় তা সে পুরোনো পঞ্জিকা হোক বা খবরের কাগজে তৈরি ঠোঙা তা-ই চিবিয়ে নেশা বজায় রাখতে হয়। বিজ্ঞাপন দেখে নেশামুক্তি কেন্দ্রে নিয়মিত যাতায়াত করেও বই পড়ার নেশা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়।

লন্ডনের ফয়েলস্-এ গিয়ে একবার বই হাটকানো শুরু করলে খেয়ালই থাকে না যে বেলা বহে যায়। এমনকি ছ'টি তলায় ছড়িয়ে থাকা দোকানের প্রতিটি তলায় রাখা কফি মেশিন থেকে ভেসে আসা গন্ধও হাতে ধরা নতুন বইয়ের গন্ধে হারিয়ে যায়। ইসলামাবাদের জিন্না সুপার মার্কেটে অবস্থিত 'সৈয়দ বুক ব্যাঙ্ক' এশিয়ার সবচাইতে বড়ো পুস্তক বিপণি বলে পরিচিত। দোকানের সামনে সাড়ে তিনশো গাড়ি রাখার বন্দোবস্ত রয়েছে। ফ্রি কার পার্কিং। আঠারো হাজার বর্গফুট জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই বিপণিতে সবসময় সাজানো থাকে অন্তত দু' লক্ষ বই। পৃথিবীর প্রায় সব ভাষার এবং সব বিষয়ের বইয়ের বিশাল আয়োজন। একবার ভেতরে যাওয়ার সময় পেলে সত্যি সত্যিই সময় হারিয়ে যায়। চারপাশের কাবাবের দোকান থেকে আসা সুবাস কিন্তু বইয়ের নেশাগ্রস্তর নাসিকায় প্রবেশের সুযোগ পায় না। নতুন বইয়ের নেশা তখন তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করতে অনেক ভালো লাগে। অথবা চিটাগাং-এর 'বাতিঘর'। বাংলা ভাষায় প্রকাশিত প্রায় সব বই এক ছাদের তলায় হাজির। বইয়ের নেশায় মাতোয়ারা হয়ে মনেই থাকে না আজ যেন কার বাড়িতে দাওয়াত ছিল। দুঃখজনক হলেও এ কথা মানতেই হবে যে কলকাতা-দিল্লি তো বটেই ভারতের কোনও শহরেই বই হাতে নিয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করে দেখার মতো এত বড়ো পুস্তক বিপণি একটাও নেই।

সেই নেশার মৌতাত হঠাৎ করেই কাটিয়ে দিল ভয়ঙ্কর সংক্রমণ। একবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকের সূচনা লগ্নে সংক্রমণের চাদরে ঢাকা পড়ে গেল সারা পৃথিবী। এমনই তার দাপট যে প্রথম চোটে লোকে খবরের কাগজ পড়া তো দূরের কথা ছোঁয়াই বন্ধ করে দিল। অনবরত যদি শুনতে হয় সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন বা সর্বদা মাস্ক পরে থাকুন কিংবা ঘন্টায় একবার ভালো করে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন, তাহলে বইয়ের নেশা কখন যেন অজান্তেই ছুটে যায়। আতঙ্ক-আশঙ্কা-উৎকণ্ঠা জর্জরিত জীবনে আর যাই হোক কোনো নেশাই জমে না। মনের পরতে পরতে জমা হয় অবসাদ। অথচ অবসাদ মুক্তির অন্যতম উপকরণ কিন্তু বই।

তাহলে কি মানুষ পড়া একেবারেই ছেড়ে দিয়েছে? না। যাঁদের হাতে স্মার্টফোন রয়েছে তারা তো সারাদিনই কিছু না কিছু পড়ছেন। ভোররাত থেকে রাতদুপুর তাঁদের পড়ায় খামতি নেই। আর পড়বেনই না কেন? যে দেশে আটার থেকে ডাটা সস্তা তার সদ্ব্যবহারের এমন সুযোগ কেউ হাতছাড়া করে? আর যাঁরা হাতে স্মার্টফোন থাকা সত্ত্বেও নিজেকে ততটা এসমার্ট করে তুলতে পারেননি তাঁদের মনোরঞ্জনের জন্য আন্তর্জালে ভেসে বেড়াচ্ছে ঝাঁকে ঝাঁকে সিনেমা বা রাশি রাশি গানের ডালি। আর যাঁদের স্মার্টফোন নেই তাঁরা তো অন্ন চিন্তায় ব্যতিব্যস্ত।

এই মরশুমে সবই যখন স্তব্ধ, জনজীবন প্রায়শই অবরুদ্ধ তখন নতুন বইয়ের খোঁজ করা সম্ভব নয়। বই পাড়া কার্যত বিপর্যস্ত। প্রকাশক দিশাহারা। সাধারণ বিক্রেতা কোন সাহসে দোকান খুলবেন? খদ্দের কোথায়? সত্যিই তো ক্রেতা বা বিক্রেতা কারো পক্ষেই কলকাতা বা দিল্লির বইপাড়ায় আসা সম্ভব নয়। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় দিল্লির আনসারী রোড বা কলকাতার কলেজ স্ট্রিট এলাকায় যাতায়াত করা যাচ্ছে না। কাজেই নতুন বই তো দূরের কথা অনেক আগে প্রকাশিত বইও হাতে তুলে নিয়ে পাতা উল্টিয়ে দেখার সুযোগ নেই।

ইয়োরোপ আমেরিকার খ্যাতনামা প্রকাশকরাও গত দেড়-দু' বছরে কতগুলি নতুন বই বাজারে আনতে পেরেছে? বই প্রকাশের আগের পর্বগুলো যেমন, পাণ্ডুলিপির সম্পাদনা, কম্পোজ করা ইত্যাদি তো এখন মূলত কম্পিউটার নির্ভর। এই কাজগুলো তো বাড়িতে বসেই করা যায়। তবে তার জন্য সকলের বাড়িতে যে কোনো ধরনের একটা কম্পিউটার প্রয়োজন। আর দরকার নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট পরিষেবা। কলেজ স্ট্রিট পাড়ার গলিঘুঁজির মধ্যে পুরোনো আমলের প্রায় ভেঙে পড়া বাড়ির আলো-বাতাসহীন ছোটো ছোটো খুপরিতে আধা-আঁধারের আবহে যাঁরা সারাদিন মুখ বুজে কম্পিউটারের কিবোর্ডে দু'হাতে শব্দ সাজানোর কাজ করে চলেন তাঁদের পক্ষে সামাজিক দূরত্ব তো অনেক দূরের বিষয়, পারস্পরিক দুরত্ব রক্ষা করাই কষ্টকর। তাঁরা ঘন্টায় ঘন্টায় কী করে স্যানিটাইজার দিয়ে হাত ধোবেন? বেশিরভাগ কর্মক্ষেত্রেই তো শৌচাগার নেই। প্রয়োজনে রাস্তার ধারের সাধারণ শৌচাগারে ছুটতে হয়। তাঁদের বাড়িতে কম্পিউটার থাকার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। তার উপরে এঁরা বেশিরভাগই শহরতলি বা মফস্বলের বাসিন্দা। সেখানে আবার কখনও বিদ্যুৎ থাকে না আবার কোনো সময় ইন্টারনেট অচল। কাজেই কর্মস্থলে নিয়মিত যাওয়া আসার বদলে তাঁরা এই উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন যেন চাকরিটা রক্ষা পায়।

পরবর্তী পর্ব মুদ্রণ। কোথায় হবে? কলেজ স্ট্রিট পাড়ায় কয়েকটি প্রেস থাকলেও এখন বেশিরভাগ বড়ো প্রেসই অন্যত্র সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছাপার কাজে নিযুক্তরাও বেশিরভাগই দূর দূরান্তে বসবাস করেন। অতএব অবরোধের কারণে প্রেসও অবরুদ্ধ।

সবশেষে আসে বই বাঁধাইয়ের প্রক্রিয়া। ইয়োরোপ আমেরিকায় যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বই বাঁধানোর প্রক্রিয়া অনেককাল আগে চালু হলেও দামী বই বিশেষতঃ 'হার্ড কভার' এবং 'লিমিটেড এডিশন' গোত্রের সব বই-ই তো 'হাতে বাঁধানো'। অন্ততঃ সেইভাবে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এদেশের বেশিরভাগ বই-ই হাতে বাঁধানো। বৈঠকখানা রোড, নবীন পাল লেন, কেশব সেন স্ট্রিট সহ কলেজ স্ট্রিট পাড়ার অসংখ্য গলিতে অবস্থিত বাঁধাইখানায় একবার গেলেই বোঝা যায় কোন পরিস্থিতির মধ্যে বসে চলছে বই বাঁধানোর কাজ। গণ পরিবহন বন্ধ থাকায় বাঁধাইখানাগুলো অনেকদিন ধরেই বন্ধ। তাছাড়া নতুন বই প্রকাশ অনিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় বাঁধাইখানার ঝাঁপ খুলে কী লাভ?

সবমিলিয়ে বইপাড়ার অবস্থা মোটেও ভালো নয়। প্রকাশকের উৎকণ্ঠা আর কতদিন ব্যবসা বন্ধ রেখে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে যেতে হবে। কোত্থেকে পয়সা আসবে? স্থায়ী কর্মচারীর ভাবনা প্রতিষ্ঠান চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলে কী হবে? অস্থায়ী কর্মচারীদের অবস্থা সঙ্গিন। অনলাইনে বই আনিয়ে অনেক পাঠক দুধের স্বাদ ঘোলে মেটাতে চেষ্টা করছেন। সেই ভরসায় কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়ার গুটিকয়েক প্রকাশক কোনোরকমে টিকে থাকার চেষ্টা করছেন।

বই পাড়ায় ধাক্কা অবিশ্যি আরও অনেক আগেই লেগেছে। সেই ২০১৭-র ১লা জুলাই মাঝরাতে। জিএসটি চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রকাশন শিল্পে নেমে এসেছে গভীর অনিশ্চয়তা। বই হয়ে গেল জিএসটি-র আয়ত্বাধীন। ১০০ টাকার বইয়ের উপর কত টাকা জিএসটি ধার্য করা হবে তা ঠিক করতেই বছর পার। তারপর এল এক বিচিত্র বিধি। বইয়ের রয়্যালটি বাবদ লেখককে যত টাকা দেওয়া হচ্ছে তার উপরে সাড়ে বারো শতাংশ হারে জিএসটি দিতে হবে। তাহলে বইয়ের দাম কত হল? যাঁরা জিএসটি বিধি প্রণয়ন করেছেন তাঁরা বই পড়েন না বলা যাবে না, তবে এই প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে তাঁরাও বোধ হয় মাথা চুলকোবেন। জিএসটি পর্ষদের সদস্যরা যাঁরা বিভিন্ন রাজ্যের মন্ত্রী এবং অবশ্যই কোনো না কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা তাঁরা এ বিষয়ে কোনো আলোচনা করতে চেয়েছেন বলে জানা যায়নি। পৃথিবীর কোনো দেশেই এমন কানুন নেই। তবে শিবঠাকুরের আপন দেশে থাকলেও থাকতে পারে!

সবমিলিয়ে বইয়ের দাম অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে। এমনিতেই বাংলা বইয়ের বাজার অত্যন্ত সীমিত। তার উপরে রয়েছে হাজারো এক রকমের প্রতিবন্ধকতা এবং তঞ্চকতা। পাঠকের মানসিক গঠন সবচেয়ে বড়ো প্রতিবন্ধকতা। ইংরেজি বইয়ের দাম পাঁচশো বা সাতশো টাকা হলেও পাঠক বা ক্রেতার কোনো আপত্তি নেই। অথচ বাংলা বইয়ের দাম তিনশো টাকা হলেই ক্রেতার ঠোঁট উলটিয়ে যায়। উচ্চারিত হয় - বাংলা বইয়ের এত দাম!

একই সঙ্গে চলছে চূড়ান্ত তঞ্চকতা। সমস্ত ভাষার বই-ই এখন তঞ্চকতার শিকার। কে বা কারা অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহারে প্রায় সমস্ত বইয়েরই হুবহু নকল করে ফেলছে। আগেও এইরকম নকল করার সংস্কৃতি ছিল। তবে তা কাগজে ছেপে বাঁধাই করে বিক্রি হত। একসময় তো এইধরনের নকল বা পাইরেট সংস্করণের বই রীতিমতো শিল্পের পর্যায়ে চলে যায়। লেখক নিজেই আসল এবং নকলের ফারাক বুঝতে পারতেন না। প্রকাশকরাও হিমশিম খেতেন। আসলের তুলনায় নকলের দাম অনেক কম হওয়ায় পাঠকও খুশি। গত পনেরো বিশ বছর ধরে নকল বই প্রকাশের উদ্যমে ভাঁটা পড়েছে। আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগে তঞ্চকতায় দক্ষতা অনেক বেড়ে যাওয়ায় এখন আর নকল বই ছাপানো হয় না। সরাসরি আন্তর্জালে পুরো বই ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা ক্রমশঃ বাড়ছে। এই তঞ্চকের দল অত্যন্ত ধূর্ত। কোনো বইয়ে হয়তো প্রকাশকের নাম ঠিকানা বেমালুম মুছে ফেলে আন্তর্জালে ছড়িয়ে দিচ্ছে। কোনো বইয়ের প্রকাশকাল পালটে এমন এক সাল লেখা হচ্ছে যখন হয়তো লেখকের জন্মই হয়নি।

এই ধরনের অসংখ্য বৈরিতার বিরুদ্ধে অসম লড়াই করে প্রকাশন শিল্প এখন প্রকৃত অর্থে খাবি খাচ্ছে। কাগজ থেকে শুরু করে বই তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত উপকরণের দাম ক্রমশঃ বেড়ে যাচ্ছে। প্রকাশন শিল্পের সঙ্গে জড়িত কর্মীদের বেতন ভাতা ইত্যাদি বৃদ্ধির প্রয়োজন অস্বীকার করা যায় না। তার উপরে রয়েছে জিএসটি। এদিকে বইয়ের দাম বাড়লে পাঠক পিছিয়ে যাচ্ছে। সবমিলিয়ে সামগ্রিক ভাবে প্রকাশন শিল্পের নাভিশ্বাস উঠেছে বললেও কম বলা হয়।

আগে সরকারি এবং সরকার পোষিত গ্রন্থাগারগুলির জন্য নিয়মিত বই কেনার বন্দোবস্ত ছিল। এখন নাকি পাঠকের অভাবে বেশিরভাগ গ্রন্থাগারের তালাই নিয়মিত খোলা হয় না। অন্য মতে, গ্রন্থাগারগুলিতে কর্মীর ভয়ঙ্কর অভাব। বছরের পর বছর নিয়োগ বন্ধ। তবে সরকারের একটা গ্রন্থাগার বিভাগ আছে। তার জন্য একজন মন্ত্রীও আছেন। তারপর? সেই প্রশ্নের উত্তর নেই।

ইদানিং নাকি প্রকাশন শিল্পে বৃহৎ করপোরেট হানা দিয়েছে। জনপ্রিয় প্রকাশন সংস্থায় নাকি তারা বিনিয়োগ শুরু করে দিয়েছে। ধুঁকতে থাকা প্রকাশন শিল্প হয়তো বাধ্য হয়েই এই লগ্নিকে মেনে নিচ্ছে। এর ফলে বাংলার প্রকাশন শিল্পের এতকালের ঐতিহ্য এবং নিজস্ব সত্ত্বা বিলুপ্ত হয়ে যাবে না তো?

এইসব প্রশ্নের উত্তর ভবিষ্যতে জানা যাবে। তবে প্রকাশন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য নতুন নতুন বই নিয়মিত প্রকাশের জন্য, জ্ঞান চর্চার জন্য পাঠক এবং প্রকাশককে একই সঙ্গে এগিয়ে আসতে হবে। প্রকাশক যেন বইয়ের মান রক্ষায় যত্নবান থাকেন। বাড়তি লাভের আশায় করপোরেট হাঙরের প্রলোভনের ফাঁদে পা দেওয়া চলবে না। পাঠককেও বইয়ের দাম একটু বেশি হলেও মেনে নিতে হবে। অন্যথায় প্রকাশন শিল্পের অনিশ্চয়তা কাটবে না।

বই পড়া একবার বন্ধ হয়ে গেলে বৌদ্ধিক চর্চা এবং বিকল্প চিন্তার পরিসর হারিয়ে যাবে। প্রশ্ন করার ইচ্ছা চলে গেলে সমাজ সভ্যতার বিকাশ হয় না। হীনমন্যতা মাথা চাড়া দিলে মানুষের নিজের স্বাধীন চিন্তা লোপ পায়। সেই সুযোগে হানা দেয় যতরকমের অযৌক্তিক মধ্যযুগীয় গোঁড়া মতবাদ। মতবিনিময়ের পরিস্থিতি বিলুপ্ত হলে স্বেচ্ছাচারী মানসিকতা নিশ্চিন্তে বিকশিত হয়। এইরকমের প্রবণতা সমাজ সভ্যতার এগিয়ে চলার জন্য মোটেও উপযোগী নয়। কাজেই শত প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশন শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখার চেষ্টা করতেই হবে।

কতদিন এইভাবে চলবে কেউ জানে না। বই পড়ার নেশা টিকিয়ে রাখার জন্য ততদিন চলতে থাকুক পুরোনো আকরগুলির চর্বিতচর্বন। বই পড়ার নেশাটা টিকিয়ে রাখতে হবে তো!