আরেক রকম ● নবম বর্ষ দ্বাদশ সংখ্যা ● ১৬-৩০ জুন, ২০২১ ● ১-১৫ আষাঢ়, ১৪২৮

প্রবন্ধ

নীচু জাত না নীচু মন - কোনটা বেশী ক্ষতিকর?

সুখবিলাস বর্মা


‘কাদম্বিনি মরিয়া প্রমাণ করিল, সে মরে নাই’।অর্থাৎ সে এখন মরিল। সেইরূপ আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীজি তাঁর মহান কীর্তি মাধ্যমে আরও একবার প্রমাণ করিলেন যে তিনি সত্যিই নীচু মনের মানুষ।আমাদের সবার মনে আছে, মানে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অবশ্যই মনে থাকার কথা, কারণবিষয়টি ছিল নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে প্রবীণ কংগ্রেস নেতা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনিশঙ্কর আইয়ার-এর একটি মন্তব্য সংক্রান্ত।খুব সঙ্গত কারণেই মনিশঙ্করজী মন্তব্য করেছিলেন যে নরেন্দ্র মোদীর মতো নীচু মনের মানুষ রাজনৈতিক জগতে বিরল। মন্তব্যটিকেটুইস্ট করে আইয়ারকে প্যাঁচে ফেলার উদ্দেশ্যে মোদী সঙ্গে সঙ্গে প্রতিক্রিয়া জানালেন যে মনিশঙ্কর আইয়ার তাঁকে নীচু জাতের মানুষ বলে গালাগাল দিয়েছেন। মোদীর সাথে সাথে তাঁর অনুগত বিজেপি নেতারাও বিষয়টি নিয়ে হৈচৈ শুরু করে। জাতপাতের এই দেশে প্রধানমন্ত্রীকে নীচু জাতের মানুষ বলে গালি দেওয়া কি চাট্টিখানি কথা! বিশেষ করে এক প্রকট ব্রাহ্মণ্যবাদী প্রধানমন্ত্রীকে, যিনি প্রকৃতঅর্থে সত্যিকার নীচু জাতের, মানে তথাকথিত শূদ্র জাতের মানুষ নন।কিন্তু রাজনৈতিক ফায়দা তো তুলতেই হবে, সত্যি মিথ্যা যার মাধ্যমেই হোক না কেন।বিশেষ করে মন্তব্যকারি যেখানে ব্রাহ্মণ কংগ্রেস নেতা।ফলও ফলেছিল ঝটপট। কংগ্রেস সভাপতি রাহুলজীএমন স্পর্শকাতর বিষয়ে আর ঝুঁকি নিতে পারেন নি; বিশদ খোঁজ খবর না নিয়েই আইয়ার-এর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন।অথচ আইয়ারজী তো মিথ্যা বলেননি।

এই নরেন্দ্র মোদী মানুষটি যে অত্যন্ত নীচু মনের সেতো দেশের মানুষ বার বার প্রত্যক্ষ করেছেন।মাত্র কয়েকদিন আগের কথা।নোবেল পুরস্কারে ভূষিত বিশ্ববিখ্যাত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে নিয়ে বিশ্বভারতীর উপাচার্য যে নীচু মানের খেলা খেললেন তাতে লজ্জায় আমাদের মাথা হেঁট হয়ে গেল।নোবেল জয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোনোদিনই পছন্দ করতেন না, কারণ এই অর্থনীতিবিদ অন্যান্য প্রায় সকল অর্থনীতিবিদের মতো মোদীজির আর্থিক নীতির কড়া সমালোচক।

শান্তিনিকেতন প্রতিষ্ঠার অব্যবহিত পরে পরেইবৃহত্তর ক্যাম্পাসের মধ্যেই অধ্যাপক ও অন্যান্য কর্মীবৃন্দের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করতে হয়েছিল।আশ্রমবাসীদের অর্থাৎ শিক্ষক-অশিক্ষক কর্মীদের অনেকে বাড়ীর জন্য জমি কিনেছিলেন, আবার অনেকে জমি নিয়েছিলেন দীর্ঘমেয়াদী লীজ ব্যবস্থায়। অধ্যাপক ক্ষিতিমোহন সেন ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের অত্যন্ত স্নেহভাজন এবং শান্তিনিকেতনের প্রাণপুরুষ। তিনি শান্তিনিকেতনে বাড়ী তৈরি করেছিলেন লীজপ্রাপ্ত জমির উপর।ক্ষিতিমোহন সেনের সুযোগ্য দৌহিত্র অমর্ত্য সেন তাঁর মাতামহের নির্মিত সেই বাড়ীতে থাকেন এবং সেই বাড়ীর জমি নিয়েই মহামান্য উপাচার্য তাঁকে বিস্তর হেনস্থা করলেন। একথা পাগলেও বিশ্বাস করবে না যে বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মতো এক অতি সাধারণ মানের ব্যক্তি বিশেষ কারুর উস্কানি ও মদত ছাড়া অমর্ত্য সেনের মতো নোবেল বিজয়ীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে সামিল হয়ে তাঁকে যারপরনাই হেনস্থা করেছেন-সর্বসমক্ষে নানাভাবে অপমান করেছেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় আচার্য, মানে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করেননি, বিদ্যুৎবাবুকে তিরস্কার করেননি, মৌনতাই সম্মতির লক্ষণ তাহলে ধরে নিতে হবে। এত নীচু মনের, নীচু মানের কাজ তো তাঁরই সাজে!

এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে দেশের সাংবিধানিক ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে নরেন্দ্র মোদীর ছেলেখেলা। প্রধানমন্ত্রী হয়েই তিনি দেশের অর্থনীতির ভিত্তিস্তম্ভ রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নরকে নিয়ে যে নিম্নরুচির পরিচয় দিয়েছিলেন সে তো আজ ভারতের অর্থনীতির ইতিহাসে এক মলিন অধ্যায়। একই ভাবে তিনি বিশ্বভারতীর ইতিহাসকেও মলিনতায় ভরেছেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর মতো আরএসএস মার্কাব্যক্তিকে উপাচার্য নিযুক্ত করে।অনেক অপকর্মের মধ্যে পাচার্য মহাশয় কবিগুরু হস্তশিল্প সমিতির কয়েক'শ গরীব হস্তশিল্পীর জীবন জীবিকার প্রশ্ন উপেক্ষা করে তদেরকে উচ্ছেদ করে জমি দখলে উদ্যত হয়েছেন। এমনই আরও অনেক কুকীর্তির নায়ক আজ তিনি।তাঁর সুমহান কীর্তিতে রবীন্দ্রনাথের শান্তিনিকেতন আজ অশান্তি নিকেতনে পর্যবসিত।

বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাথায় বসানোর জন্য ব্যক্তি নির্বাচনে নরেন্দ্রজীর তুলনা মেলা ভার। 'রতনে রতন চেনে' কথাটির সার্থক উদাহরণ। পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপালের কথা কি ঘটা করে বিশদ আলোচনার প্রয়োজন আছে? কি না করছেন তিনি? রাজ্যপাল পদটির মান সম্মান জলাঞ্জলি দিয়ে বিজেপির হয়ে লাগাতার ব্যাটিং করে চলেছেন। এ কাজে তাঁর নীচু মানসিকতার উদাহরণ কি একটা? এখানেও মদতদাতা সেই মহান প্রধানমন্ত্রী। লাক্ষাদ্বীপের উপ-রাজ্যপালের বিষয়ও উপেক্ষা করা সমীচীন নয়। আমলাতন্ত্রের কাউকে ঐ পদে নিযুক্ত করার বরাবরের ঐতিহ্য ভেঙ্গে মোদীজী তাঁর অতি পছন্দের রাজনীতিবিদ, প্রফুল কে প্যাটেলকে, ঐ গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব দিলেন তিনি তো সেখানে আরএসএস-এর ধ্বজা ওড়াতে ব্যস্ত এবং এই কাজ করতে গিয়ে তিনি সেখানকার সব কিছু ভেঙ্গে চুরমার করে দিতে চাইছেন। এমনকি প্রধানতঃ মুসলমান অধ্যুষিত এই দ্বীপগুলির শিশুদের মধ্যাহ্নভোজ থেকে তিনি গরুর মাংস তুলে দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন। সেই নীচু মনের পরিচয়। তাঁর বিরুদ্ধে এত প্রতিবাদ সংগঠিত হয়েছে কিন্তু তিনি বা তাঁর প্রভু নরেন্দ্রজী অনড় অটল।

তবে নরেন্দ্র মোদীর নীচু মানসিকতার পরাকাষ্ঠা দেখা গেল সাম্প্রতিকতম আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় কাণ্ডে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব আলাপনের অবসর নেওয়ার কথা ৩১মে,২০২১ তারিখে।কিন্তু নির্বাচনের পর সদ্য গঠিত সরকারের কাজের সুবিধার জন্য এবং আবহাওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী মে মাসের শেষ সপ্তাহে আশঙ্কিত 'ইয়াস' নামক ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় এবং ঝড় পরবর্তী পুনর্গঠনের কাজে শ্রী বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিজ্ঞতা সরকারের সহায়ক হবে এই যুক্তিতে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী তাঁর চাকরীর কার্যকাল তিন মাস বাড়ানোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠান এবং কেন্দ্রীয় সরকার সে প্রস্তাব গ্রহণ করে আদেশনামা পাঠিয়ে দেন।ইতিমধ্যে ২৬ ও ২৭ মে উড়িষ্যা ও পশ্চিমবঙ্গের সমুদ্রোপকূলে 'ইয়াস' আছড়ে পড়ে।উড়িষ্যার বালাসর জেলার ব্যাপক এলাকা, পশ্চিমবঙ্গের পূর্ব-মেদিনিপুর জেলার দীঘা, শঙ্করপুর, মন্দারমনি এবং দক্ষিণ ও উত্তর ২৪-পরগনা জেলার অন্তর্গত সুন্দরবনের ব্যাপক এলাকা ঝড় ও ভরা কোটালের বাণে লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়।'ইয়াস'-এর তাণ্ডব দেখার জন্য প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে উড়িষ্যা উপকূল ঘুরে পশ্চিমবঙ্গের কলাইকুণ্ডায় আসেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে আলোচনার জন্য। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী সেদিন ঐ একই বিষয় নিয়ে দুটি অফিসিয়াল মিটিং রেখেছিলেন-একটি সুন্দরবন এলাকায়, অন্যটি দীঘায়। দুটি মিটিং-এর ফাঁকে কলাইকুণ্ডায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার নির্ধারিত সময়ে পৌঁছনর জন্য প্রস্তুত হলেন কিন্তু হেলিকপ্টার উড়ানোর এটিসির অনুমতি পেতে আধ ঘণ্টা লাগলো।স্বভাবতই প্রধানমন্ত্রীর মিটিং-এ যেতে মুখ্যমন্ত্রীর আধ ঘণ্টা বিলম্ব হল।মুখ্যমন্ত্রী বিলম্বের কারণ ব্যাখ্যা করে সম্ভাষণ বিনিময়ের পর 'ইয়াস'-এ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় যে বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে সে সংক্রান্ত প্রাথমিক পর্যায়ের প্রতিবেদন-সহ সমস্ত কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করে চলে যাওয়ার অনুমতি চাইলেন কারণ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট নিয়ে আগে থেকেই ডাকা তাঁর দ্বিতীয় মিটিং-এর জন্য দীঘায় বিভিন্ন দপ্তরের আধিকারিকরা এবং জেলার জনপ্রতিনিধিগণ সেখানে অপেক্ষা করছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে তিনি কলাইকুণ্ডা থেকে হেলিকপ্টারে দীঘা পৌঁছলেন।

মুখ্যমন্ত্রী প্রাক্টিকালি তাঁকে কোনো পাত্তাই দিলেন না এই অনুভূতিতে মোদীজীর আত্ম-অহংকারে আঘাত লাগলো।ভদ্রলোকের আর কিছু থাক বা নাথাক 'জ্ঞানের নাড়ি তো টনটনে'।কিন্তু কীইবা তিনি করতে পারেন?তিনি জানেন যে মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে পেড়ে ওঠা তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়।এই কয়েক দিন আগেই তো তিনি নাস্তানাবুদ হয়েছেন বাংলায়। কাজেই মমতাজীর সঙ্গে টক্কর দেওয়ার ক্ষমতা তাঁর নেই।কিন্তু 'দুরাত্মার ছলের অভাব' হয় না।মমতাজীর সঙ্গে ছিলেন তাঁর মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়-মুখ্যমন্ত্রী তাঁর হাত দিয়েই সমস্ত কাগজপত্র প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাখিল করেন। সুতরাং 'ঝিকে মেরে বৌকে শেখানো'র বড় সুযোগ পাওয়া গেছে।সব ব্যাটাকে ছেড়ে এই বেড়ে ব্যাটাকেই ধর। মিটিং-এ না থেকে কেন আলাপন প্রধানমন্ত্রীকে উপেক্ষা করে চলে গেছেন? তিনি প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়েছেন কি না জানার প্রয়োজন নেই। এক্সপ্লানেশন কল করো।বলার আগেই বোধ হয় চিঠি তৈরি।এক্সপ্লানেশন কল করা হোল।মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে মুখ্যসচিবও যে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে মিটিং ছেড়ে গেছেন (আলাপনের মতো নিষ্ঠাবান ভদ্র আমলা অনুমতি নেবেন না তা আমি বিশ্বাস করি না) সে কথা সহযোগী আধিকারিকদের কেউ বোধহয় পয়েন্ট আউট করেননি, অথবা কেউ সে কথায় কান দেননি।কিন্তু ব্যাপারটা ঠিক জুতসই হল না।মমতাজী তো ছেড়ে কথা কইবেন না। ব্যাটাকে শবক শেখানোর জন্য একেবারে নিজের আওতায়, মানে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীনে নিয়ে আসা প্রয়োজন।

যেমন ভাবনা তেমনি কাজ।ডিওপিটি আদেশ পাঠাল, ৩০ মের মধ্যে আলাপন কেদিল্লীর নর্থ ব্লকে কেন্দ্রীয় সরকারে ডিওপিটিতে যোগদান করতে হবে। অল ইন্ডিয়া সার্ভিস গুলোর আইন কানুন নিয়মাবলী দেখা যে দপ্তরের প্রধান কাজ সেই ডিওপিটি ভুলেই গেল যে কোনো আধিকারিক কেন্দ্রীয় সরকারের পদে যাবেন কি না সেটা নির্ভর করে তাঁর ইচ্ছার উপর-তার জন্য প্রয়োজন আধিকারিকের অপশন।আলাপনের ক্ষেত্রে সেই অপশন আরও গুরুত্বপূর্ণ, কারণ তাঁর অবসরের মাত্র দু'দিন বাকি। একজন ব্যক্তি অবসরের পর কাজ করতে চান কি না এবং করলেও কি ধরনের কাজ তিনি পছন্দ করবেন সেটা কি ডিওপিটি ঠিক করবে? দেশটা কি মগের মুলুকে পরিণত হল?

এই অপশন ও অবসরের দিকটা একটু দেরিতে হলেও প্রধানমন্ত্রী হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তাঁর নীচু মানসিকতা আলাপনকে শবক শেখানোর জন্য অন্য ফন্দি আঁটল-আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর ডাকা ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট-এর মিটিং-এ থাকেননি সেইজন্য তাঁর বিরুদ্ধে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইনের নির্দিষ্ট ধারা লঙ্ঘন করার অপরাধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না? একটি রাজ্যের মুখ্যসচিব তাঁর মুখ্যমন্ত্রীর আদেশে তাঁর সাথে 'ইয়াস' জনিত প্রাকৃতিক বিপর্যয় বিষয়ে মিটিং করতে গেলেন সেটা তাঁর অপরাধ হয়ে গেল! কি অপূর্ব যুক্তি।নীচু মানসিকতার সঙ্গে যখন ক্রোধ যুক্ত হয় কারুর ক্ষতি করার জন্য, তখন অগ্রপশ্চাৎভাবনার ক্ষমতা লোপ পেয়ে যায়।এখানে মোদীজী সেইরূপ অবস্থার শিকার হয়েছিলেন।আমলাতন্ত্রের হায়ারার্কি অনুসারে মুখ্যসচিবের ইমিডিয়েট বস্ মুখ্যমন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী নন।তাই মুখ্যমন্ত্রীর আদেশ পালন করে তিনি কোনো শৃঙ্খলাভঙ্গ করেননি।প্রধানমন্ত্রীর কিছু বলার থাকলে মুখ্যমন্ত্রীকে বলা উচিত ছিল কেন তিনি মুখ্যসচিবকে সঙ্গে নিয়ে গেলেন। অধিকন্তু আলাপন যে মিটিং করতে দীঘায় গেছেন সেটাই ছিল প্রকৃত অর্থে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ মিটিং। সুতরাং তাঁকে ঐ আইনে অপরাধী সাব্যস্ত করা মোটেই সহজ হবে না।তবে এইসবের পরিণতি যাইই হোক না কেন, নীচু মানসিকতার প্রশ্ন কিন্তু থেকেই যাচ্ছে।