আরেক রকম ● অষ্টম বর্ষ চতুর্দশ সংখ্যা ● ১-১৫ অক্টোবর, ২০২০ ● ১৬-৩১ আশ্বিন, ১৪২৭

সমসাময়িক

সব দায় এলিটদের?


সম্প্রতি কিছু ভারতীয় সংবাদপত্র এবং ওয়েবদুনিয়াতে একটা কৌতূহলোদ্দীপক বিতর্ক চলছে। বিতর্কটার সূত্রপাত করেছেন সমাজতাত্ত্বিক যোগেন্দ্র যাদব। তাঁর মতানুসারে, ভারতবর্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা মুখ থুবড়ে পড়বার মূল দায় ইংরেজিভাষী এলিট উদারনৈতিকদের নেবার সময় এসেছে, কারণ তাঁরা নিজেদের ধর্মনিরপেক্ষতার রক্ষাকর্তা হিসেবে দাবি করে আসলেও ভারতের সনাতন সমাজ, তার মানুষের আবেগ, তাদের ভাষা, এগুলোর সঙ্গে ‘কানেক্ট’ করতে পারেন নি, উচ্চগজদন্তমিনারে বসে এই দেশকে দেখেছেন। ফলত হিন্দুধর্ম জিনিসটা যে আসলে কী, কীভাবে তা লক্ষ লক্ষ মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, কীভাবে বিজেপি আসার বহু আগে থেকেই হিন্দু একতার ধারণা ভারতে দানা বাঁধছে সেগুলোও খতিয়ে দেখেননি। স্বভাবতই এমন চাঞ্চল্যকর অভিযোগের পক্ষে বিপক্ষে অনেকেই সরব হয়েছেন। এবার, মানুষটি যেহেতু যোগেন্দ্র যাদব, তাঁর বিজেপি বিরোধীতার জায়গাটি নিয়ে প্রশ্ন তোলবার অবকাশ নেই। দ্বিতীয়ত, বহুকাল ধরেই তিনি মূলত হিন্দিভাষী অঞ্চলে মাটির কাছাকাছি থাকা মানুষজনের মধ্যে কাজ করে এসেছেন, এক ধরনের সমাজবাদী রাজনৈতিক দৃষ্টিও তাঁর আছে। তাই তিনি যখন এরকম অভিযোগ তোলেন, সেটাকে খতিয়ে দেখবার প্রয়োজন আছে বই কী!

প্রথম যে কথাটা বলবার, যোগেন্দ্র যাদবদের এই অভিযোগ এর আগেও বহুজন করে গেছেন। মূলত নিম্নবর্গীয় ইতিহাসবিদরা, আশিস নন্দী যেমন, বারবার বলে এসেছেন যে ভারতবর্ষে ধর্মনিরপেক্ষতা নামক পশ্চিমী ধারণাটি চলে না, এ ব্যর্থ হতই। তাঁরা বলেছেন দক্ষিণপন্থার প্রতিরোধ খুঁজতে গেলে কৌমশাসিত ধর্মনির্ভর সমাজব্যবস্থার দিকে চোখ ফেরাতে হবে। ইংরেজিভাষী এলিট সম্প্রদায় যে সেটি করেননি সে বিষয়েও তাঁরা অনেকবার বলেছেন। কমিউনিস্টদের ক্ষেত্রেও বহু বছর ধরে এই অভিযোগ উঠে এসেছে যে জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ ও জাতিসত্ত্বার প্রশ্নগুলিকে তাঁরা শ্রেণির ইস্যু দিয়ে দেখবার ফলে সব সমস্যাকেই একরঙা বিচার করে এসেছেন। এবার, এই অভিযোগগুলোর সবটা ফেলে দেবার মত নয়। যে লিবারাল সমাজ সোশাল মিডিয়াতে বিজেপি-র সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে, রাজপথে মোমবাতি মিছিল করে নট ইন মাই নেম বলে, ইংরেজি সংবাদপত্রে কলম ধরে ধর্মনিরপেক্ষতার সমর্থনে, তাদের নব্বই শতাংশই সাধারণ মানুষ থেকে বিচ্ছিন্ন। তাদের স্বর সাধারণের কানে পৌঁছয় না, ঠিক যেভাবে নিম্নবর্গ কথা বললে সেটাও এই লিবারালদের কাছে আসে না। ভারতে ফ্যাসিবাদ এসে গেল বলে তারা যতই চিন্তিত হোক না কেন, প্রত্যন্ত গ্রামের সাধারণ খেতমজুর জানেনই না ফ্যাসিবাদ খায় না গায়ে মাখে। এমনকি লিঙ্গচর্চার প্রশ্নেও এই এলিট সমাজের চর্চার জায়গাটি তাই শ্রেণিনিরপেক্ষ হয় না। সেটি বলিউডে মিটু আন্দোলন অথবা কর্পোরেট-দুনিয়ায়ে যৌন হেনস্থা নিয়ে যত সেমিনার সভা তাত্ত্বিক বিতর্ক হয়, তার সিকিভাগ জোটে না ইটভাটায় যৌন হেনস্থা হওয়া নারীশ্রমিকটির জন্য। এই বিচ্ছিন্নতা যে উদারনীতির ব্যর্থতা, সে বিষয়ে যোগেন্দ্র যাদবের সঙ্গে একমত। এবং এর সুযোগটা নিয়েছে আরএসএস-বিজেপি, সেটাও সত্যি।

কিন্তু একমত হবার পর্ব আপাতত এখানেই শেষ। কারণ এরপর থেকেই দেখা যাচ্ছে, যোগেন্দ্ররা পুরো দায়ভারটা এই গোষ্ঠীটার ওপরেই চাপিয়ে দিয়েছেন, যেটাকে বিরোধিতা করতেই হবে। প্রথমত, গ্রামে গঞ্জে বামপন্থী বা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি করেন যাঁরা, তাঁরা কেউই ইংরেজি ভাষায় বাক্যালাপ করেন না, করেন স্থানীয় মানুষের ভাষায়। দ্বিতীয়ত, বিজেপি তার জমি শক্ত করেছে গোবলয়ে, যেখানে ইংরেজিভাষী এলিটদের কোনো প্রভাব নেই, আছে হিন্দি সংস্কৃতি সাহিত্য শিল্পের প্রভাব। গোবলয়ে কেন বিজেপি বাড়ল, কেন রামজন্মভূমি আন্দোলন তৈরি হল, তার উৎস কোথায়, কেনই বা দাঙ্গাগুলো নিয়মিত প্রতিবছর হত, যেমন বিহারের কিছু কিছু অঞ্চলে রামনবমীর সময়ে দাঙ্গা হওয়া একটা বাৎসরিক আচারের মত ছিল যেটাকে বন্ধ করেন লালুপ্রসাদ যাদব, এই ঘটনাগুলোর দায় কি ইংরেজিভাষী উদারনৈতিকদের? স্থানীয় রাজনীতি, সেখানে যে বিজেপি-বিরোধী দলগুলি আছে তাদের ব্যর্থতার কোনো দায় নেই? যোগেন্দ্র যাদবের নিজের প্রাক্তন দল, আম আদমি পার্টি যেভাবে প্রচ্ছন্নে হিন্দুত্বের রাজনীতি চালায়, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বিলোপের পরে অরবিন্দ কেজরিওয়াল যেভাবে তাকে স্বাগত জানিয়েছিলেন (লক্ষ্যণীয়, কেজরীওয়াল সাধারণত সহজ হিন্দিতেই তাঁর বক্তৃতাগুলি দেন), তার দায় ইংরেজিভাষীদের? বিজেপি-র সব থেকে প্রাচীন জোটসঙ্গী হল অকালি দল, এমনকি শিবসেনারও আগে থেকে তারা বিজেপির হাত ধরে ছিল। পরবর্তীকালে বিভিন্ন সময়ে বিজেপির হাত ধরেছে বহুজন সমাজ পার্টি, জয়ললিতার এআইএডিএমকে, তৃণমূল কংগ্রেস, নিতীশ কুমারের জনতা দল (ইউনাইটেড), রামবিলাস পাসোয়ানের লোকজনশক্তি পার্টি এরকম আরো অনেকে। দক্ষিণপন্থার বাড়বাড়ন্তের পেছনে এই দলগুলি কি এখন হাত ধুয়ে ফেলবে, যাদের রাজনৈতিক ডিসকোর্স পুরোটাই আঞ্চলিক ভাষার উপর নির্ভরশীল, এবং এলিট উদারনৈতিক রাজনীতি থেকে যাদের অবস্থান বহুদূরে?

তৃতীয়ত, যোগেন্দ্র যাদবরা বারবার তাঁদের বক্তব্যে বলছেন যে ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তাবিদেরা সংখ্যালঘু তোষণের তাস খেলেছেন, হিন্দুত্ববাদী সন্ত্রাসকে যত সজোরে সমালোচনা করেছেন সংখ্যালঘু উগ্রতাকে করেননি। কথাটা থেকে বিজেপি-র আঁশটে গন্ধ ভেসে আসছে, দুর্ভাগ্যজনকভাবে, কারণ ঠিক একই ভাষায় বিজেপি তাদের শত্রু যারা সেই ‘সিউডো সেকিউলার’ এবং ‘কমিউনিস্ট লিবারাল’ বা ‘আরবান নক্সাল’-দের গালি দেয়। এই দাবি করা হচ্ছে না যে ইসলামীয় মৌলবাদের বিপদ নেই। খুবই আছে, এবং ইদানীং সেটা বেড়েছেও। কিন্তু ফ্যাসিবাদের বিপদের সঙ্গে সংখ্যালঘুর মৌলবাদের বিপদকে এক আসনে বসাতে তাত্ত্বিক আপত্তি আছে, এবং আপত্তিটা কোনো ইংরেজিভাষী এলিটের তত্ত্বায়ণ থেকে আসেনি। কেন এই দুইকে সমানভাবে দেখা যায় না সেই নিয়ে ইএমএস নাম্বুদ্রিপাদ, অজয় ঘোষ থেকে শুরু করে যোগেন্দ্র যাদবের প্রিয় ব্যক্তিত্ব রামমনোহর লোহিয়া পর্যন্ত আলোচনা চালিয়েছেন, এবং এঁরা কেউই ইংরেজিতে কথা বলতেন না, মাটির সঙ্গে প্রত্যেকের ছিল নিবিড় যোগ।

চতুর্থত, যোগেন্দ্র যাদব এবং তাঁর সহলেখকেরা নিজেরাও সম্ভবত কিছুটা গজদন্তমিনারবাসি হয়ে গেছেন এক্ষেত্রে যখন তাঁরা এলিট গোষ্ঠীর উপর দায় চাপাতে গিয়ে প্রতিটা আঞ্চলিক ভাষার মধ্যে লুকিয়ে থাকা রাজনীতি এবং সাম্প্রদায়িক অনুষঙ্গগুলিকে অগ্রাহ্য করেছেন। যে ভাষায় এই সম্পাদকীয় লেখা হচ্ছে সেই বাংলার কথাই যদি ধরি, তাহলে বাংলা ভাষার মধ্যে সুপ্ত সাম্প্রদায়িকতা নেই? নজরুলকে পর্যন্ত বিদ্ধ হতে হয়েছে অতিরিক্ত ইসলামি শব্দ ব্যবহারের অভিযোগে, এখনো পর্যন্ত মীর মশাররফ হোসেনরা জনপ্রিয় সাহিত্যের আঙিনা থেকে দূরে সরে থেকেছেন। মঙ্গলকাব্য এবং সৈয়দ আলাওল এখনো পর্যন্ত জনপ্রিয়তার দিক থেকে তুলনীয় নয়। আর সুপ্ত বা তীব্র সাম্প্রদায়িকতার অভিযোগ উঠলে তার হাত থেকে কতজন সাহিত্যিক রেহাই পাবেন? বঙ্কিমচন্দ্রের যবন-বিদ্বেষী মনোভাব নিয়ে বহু আলোচনা হয়ে গেছে। বিবেকানন্দের ছিল না? শরৎচন্দ্র? পরের আমলের শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়? ইসলাম বিদ্বেষ ছেড়ে দিন, নমঃশূদ্র বিদ্বেষ ছিল না? এখনো অক্লেশে আমরা ‘চুরি-চামারি’ শব্দটি ব্যবহার করি, যেখানে চুরির সঙ্গে চামারবৃত্তির মত একটি বৈধ পেশাকে এক করে দেখা হয়। ‘ছোটলোক’ গালিটির উত্থান কোন নমঃশূদ্র বিদ্বেষ থেকে সে বিষয়ে নতুন করে কিছু লেখার নেই। তার মানে এই নয় যে সব শিল্পী সাহিত্যিককে বর্জন করতে হবে। করতে তো হবেই না বরং প্রতি যুগের সবথেকে এগিয়ে থাকা মানুষদের মধ্যেও যে সমাজ গোষ্ঠী রাজনীতি বিষয়ক নানা দ্বন্দ্ব ক্রিয়াশীল থাকে তাকে অধ্যয়ন করতে গেলে এই মনীষী ও সাহিত্যিকদের সবাইকে যত্ন ও শ্রদ্ধা নিয়ে পাঠ করতে হবে। কিন্তু প্রশ্নটা হল, ভাষা এবং চিন্তাবিশ্বে যেখানে সাম্প্রদায়িকতা, জাতপাতের মানসিকতা এত শত শত বছর ধরে ক্রিয়াশীল, সেটাও কি বিজেপির উত্থানের তাত্ত্বিকভূমি প্রশস্ত করে দেয় না? তার দায় কি এলিটদের? বরং এখানে তো দেখছি যোগেন্দ্র যাদব নিজেই আঞ্চলিক ভাষা এবং রাজ্যগুলির পেছনে ক্রিয়াশীল যে রাজনীতি, যা বহুযুগের, এলিট শ্রেণি আসারও অনেক আগে থেকে যা আছে, সেটাকেই অগ্রাহ্য করছেন।

মোদ্দা কথা যা বলার, হিন্দুত্ববাদের উত্থানের পেছনে কোনো একটা কারুকে এভাবে দাগিয়ে দেওয়া যায় না, সেটা উচিতও নয়। তাহলে কাঠামোকে অগ্রাহ্য করে অবকাঠামোর পেছনেই পুরো সময় ব্যয় হয়ে যাবে। বিজেপি-কে তৈরি করেছে ভারতের কৌমসমাজ, তার ইতিহাস, অর্থনীতি, দ্বন্দ্ব, যার পেছনে হিন্দি বাংলা তামিল মারাঠি অসমীয়া এবং অন্যান্য সমস্ত ভাষাসৌধের অবদান আছে, অবদান আছে ইংরেজিভাষী এলিটদেরও, যা শুরুতেই স্বীকার করে নেওয়া হয়েছে।

অদ্ভুতভাবে যোগেন্দ্র যাদবদের এহেন তাত্ত্বিক লেখনীতে পুঁজিবাদের নামগন্ধও পাওয়া যায় না। যেন সাম্প্রদায়িকতা, ফ্যাসিবাদ ইত্যাদি শুধুমাত্র সাংস্কৃতিক জগতেই নির্মিত হয়, অর্থনীতির সঙ্গে তা সম্পর্কহীন। কিন্তু ফ্যাসিবাদ, পুঁজিবাদ ও ফিনান্স পুঁজির ঘৃণ্যতম স্বৈরাচারী রূপ, তা তাঁরা ভুলে যান। ভারতের সঙ্গে গোটা বিশ্বে সাম্প্রদায়িকতা, উগ্র দক্ষিণপন্থা, স্বৈরাচার মাথাচাড়া দিচ্ছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কি আঞ্চলিক ভাষাজনিত কোনো সমস্যা রয়েছে? তাহলে সেখানে ট্রাম্পের নেতৃত্বে যে বর্ণবৈষম্যের প্রত্যাবর্তন ঘটছে, তার কারণ কী? তুরস্কে এরদোগান, ব্রাজিলে বোলসেনারো, হাঙ্গারিতে ভিক্টর ওরবান যেই দক্ষিণপন্থা এবং স্বৈরাচারের ভয়াবহ রূপ দেখা যাচ্ছে, তার নেপথ্যে কী রয়েছে? যোগেন্দ্র যাদবরা এই প্রসঙ্গে নীরব। আসলে ১৯৭০-র দশক থেকে যেই পুঁজিবাদী বিশ্বায়ন বা নবউদারবাদের উত্থান ঘটেছে, যা মানুষকে এক অলীক উন্নয়নের স্বপ্ন দেখিয়েছিল, তা ব্যর্থ হয়েছে। এই সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থার বিরুদ্ধে বাড়তে থাকা ক্রোধ, অনিয়ন্ত্রিত আর্থিক বৈষম্য, বেকারত্ব, দারিদ্র মানুষের জীবন অতিষ্ট করে ফেলেছে। সেই পুঞ্জীভূত রাগ বামপন্থীরা নিজেদের অনুকূলে পরিচালনা করতে পারেনি। কিন্তু অপরের নির্মাণ করে, কোথাও মুসলমান, কোথাও অনুপ্রবেশকারী, কোথাও কালো মানুষ, কোথাও বুদ্ধিজীবি, কোথাও অন্য ভাষার মানুষের বিরুদ্ধে এই ক্রোধকে ধাবিত করতে সফল হয়েছে দক্ষিণপন্থা। এই সরল সত্য, পুঁজিবাদী দ্বন্দ্বের কোনো কথা যোগেন্দ্রদের আখ্যানে নেই। শুধু সাংস্কৃতিক জগতে কে কোন ভাষায় রাজনীতি করছেন, তার মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে ফ্যাসিবাদের উত্থানের কারণ বোঝা সম্ভব নয়।

আত্মসমালোচনা ভাল জিনিস, নিজেদের কাজকর্মের দিকে চোখ ফেরানো বারেবারেই উচিত, কিন্তু শত্রুর ঠিক করে দেওয়া নিয়মবিধি মেনে আত্মসমালোচনা করলে তাতে নিজের লাভ তো হয়ই না, বরং ঘর আরো বেশি করে ভাঙে। বিজেপি বর্তমানে আর্বান নক্সাল নাম দিয়ে তথাকথিত এলিট শ্রেণিকে যে আক্রমণ করছে, যোগেন্দ্র যাদবদের আত্মসমালোচনা সেই আক্রমণকেই একটা তাত্ত্বিক বৈধতা দিতে পারে। এমন মোটেও নয় যে এলিটরা প্রতিরোধের তত্ত্ববিশ্ব নির্মাণ করবেন। কিন্তু যে যেখানে যতটুকু লড়াই করছেন, সেটুকুকে স্বীকৃতি না দিলে প্রশান্ত ভূষণের প্রতিবাদ বলুন অথবা গৌরী লঙ্কেশের মৃত্যু, সবকিছুর প্রতিই হিরণ্ময় নীরবতা পালন করতে হয় যেহেতু তাঁরা ওই শ্রেণিটারই প্রতিনিধিত্ব করেছেন। সেটা যে এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে করা যাবে না, সমস্তরকম প্রতিরোধের নির্যাসকেই স্বীকৃতি দিতে হবে, কারণ গণতন্ত্র নামক ধারণাটিই এই মুহূর্তে বিপন্ন, সেই সত্যিটা আমরা না ভুললেই মঙ্গল।