আরেক রকম ● ত্রয়োদশ বর্ষ দশম সংখ্যা ● ১৬-৩১ মে, ২০২৫ ● ১-১৫ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২

প্রবন্ধ

একটি জঙ্গি হামলা ও আহত অর্থনীতি

গৌতম সরকার


স্বাধীন ভারতে তিনটি যুদ্ধের ধাক্কা সহ্য করতে হয়েছে, তিন দশক ধরে প্রতিটা দিন প্রত্যেকটা মানুষকে প্রবল আতঙ্ক, দারিদ্র ও বঞ্চনার মধ্যে দিয়ে কাটাতে হয়েছে, তারপর এসেছে ২০১৯ সালের ৫ আগষ্ট। এই দিনটিতে জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটি ধীরে ধীরে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলছিল। সাধারণ মানুষ নতুন আশায় বুক বাঁধছিল। মাঝে দু'বছর কোভিড ভাইরাস সেই অগ্রগমনের পথে সাময়িক প্রতিবন্ধকতা হয়ে দেখা দিলেও ২০২৩ সাল থেকে আবার জম্মু-কাশ্মীর নতুনভাবে বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল। এই রাজ্যের উন্নয়ন-অবনমন, ওঠা-পড়া, বাঁচা-মরা যে অনেকটাই পর্যটনের উপর নির্ভরশীল সেটা আলাদা করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। দীর্ঘকাল সংঘাত আর টেনশনের মধ্যে কাটিয়ে কাশ্মীর ধীরে ধীরে নিজেকে আবার একটা সৌন্দর্য ও শান্তির পীঠস্থান হিসেবে গড়ে তুলছিল। ঠিক যখন কাশ্মীরের ঐকান্তিক ও ঐশ্বরিক সুন্দর উপত্যকাগুলো পর্যটকদের আনন্দ উচ্ছ্বাসে ভরে থাকার কথা, ডাল লেক, মুঘল গার্ডেন, গুলমার্গের গন্ডোলা, সোনমার্গের থাজওয়াস গ্লেসিয়ার, আহরবালের মনমাতানো ঝর্ণা, কিংবা ইউসমার্গের স্বপ্নসবুজ তৃণভূমি পর্যটক, ঘোড়াওয়ালা, গাইড, শিকারা চালক, ট্যাক্সি ড্রাইভার এবং হোটেল ও হাউসবোটের কর্মীদের উচ্ছ্বাস, হাঁকডাক, চিৎকার চেঁচামেচিতে ভরে থাকার কথা তখনই বন্দুক-গুলি-বেয়নেটের শীতল শব্দে খানখান হয়ে গেল এই শান্ত জনপদের ঐশ্বরিক প্রশান্তি আর মুহূর্তের মধ্যে সমগ্র জনপদ জুড়ে নেমে এল মৃত্যুশীতল স্তব্ধতা। রাজ্যটি যখন অশান্তি আর হিংসার ইমেজ ছেড়ে বেরিয়ে এসে শান্তি আর ভরসার বাণী প্রচার করতে শুরু করল ঠিক তখনই একশ্রেণির উন্মাদ, বোধবুদ্ধিহীন, কপট ও ঘোরতর সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদী দলের বন্দুকের আওয়াজ মুহূর্তের মধ্যে রাজ্যটিকে আবার পঞ্চাশ বছর পিছনে ছিটকে দিল। স্থানীয় মানুষ থেকে শুরু করে পর্যটক, বিশেষজ্ঞ ও রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ সবার একই বক্তব্য, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাওঁয়ে এই সন্ত্রাসবাদ শুধু কয়েকজন পর্যটককে নয়, আপামর কাশ্মীরি, যারা শান্তি ও ভয়হীন জীবনের স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল তাদের সবাইয়ের বুকে ছুরি বিঁধিয়ে দিয়েছে।

জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পর কেন্দ্রের বিজেপি সরকার পর্যটন শিল্পকে উৎসাহ দিতে ২০২৩ সালের মে মাসে জি-২০ গোষ্ঠীর ট্যুরিজম ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকের ভ্যেনু হিসেবে শ্রীনগরকে নির্বাচিত করেছিল, এবং ৬০ জন বিদেশি প্রতিনিধির উপস্থিতিতে সেই অধিবেশন সাফল্যের সাথে সম্পন্ন করেছিল। এই ধরনের আন্তর্জাতিক ইভেন্ট এবং রাজ্যটিতে ক্রমাগত বেড়ে চলা পর্যটক সংখ্যা প্রমাণ করে, পর্যটনের ক্রমবিকাশই এই রাজ্যের শান্তির সূচক। যদিও এই প্রসঙ্গে নবনিযুক্ত মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার কিছুটা ভিন্ন মত পোষণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগেই তিনি জানিয়েছিলেন, পর্যটন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বৃদ্ধির সূচক হতে পারে, কিন্তু স্বাভাবিকতার মাপকাঠি নয়। তাঁর মতে, "যে দিন কাশ্মীর থেকে ভয় দূর হবে, সন্ত্রাস দুর হবে, জঙ্গিরা ইচ্ছেমতো হামলা চালাতে পারবে না, সর্বোপরি গণতান্ত্রিক শাসন কায়েম হবে, সেইদিন কাশ্মীরে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরবে, শান্তি ফিরবে।" পহেলগাঁওয়ের হত্যাকারীরা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল ওমর আবদুল্লার সেদিনের বক্তব্য কতটা সত্য ছিল।

পর্যটন এককথায় কাশ্মীর অর্থনীতির মেরুদণ্ড। সারাবছর এই শিল্পক্ষেত্রে থেকে আয়ের পরিমাণ ১২,০০০ কোটি টাকা। পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করে রাজ্যের আড়াই লক্ষ মানুষ। পর্যটন শিল্পের হাত ধরে কোভিড পরবর্তী সময়ে রাজ্য অর্থনীতির লক্ষণীয় উন্নয়ন ঘটছিল। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে রাজ্য জিডিপির ৭.০৬ শতাংশ বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছিল, যেখানে জাতীয় গড়ের পূর্বাভাস ছিল ৬.৫ শতাংশ। এই সময়ে এ রাজ্যের মানুষের মাথাপিছু আয় ধরা হয়েছিল ১,৫৪,৭০৩ টাকা, জাতীয় মাথাপিছু আয়ের (২,০০,১৬২ টাকা) তুলনায় কম হলেও, আস্তে আস্তে এই ফারাক কমছিল। দেশে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৩.৭ থেকে ৫ শতাংশের মধ্যে, জম্মু ও কাশ্মীরে যার মান ছিল ৩.৮ থেকে ৪.৫ শতাংশ। অন্যদিকে সারা দেশে বেকারত্বের হার যখন ২০১৯-২০ সালে ৪.৮ শতাংশ থেকে কমে ২০২৩-২৪ সালে হয়েছে ৩.২ শতাংশ, তখন জম্মু ও কাশ্মীরেও বেকারত্ব এই সময়কালের মধ্যে ৬.৭ শতাংশ থেকে কমে দাঁড়িয়েছিল ৬.১ শতাংশে। এই সব হিসেব এখানে একটা দাবিই রাখে, শতেক প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতা সামলে রাজ্যটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের সঠিক লক্ষ্যে এগিয়ে চলছিল। দুর্ভাগ্যক্রমে সেই সব পরিশ্রম, ধ্যান, প্রজ্ঞা, অধ্যবসায়, সম্পদ, বিনিয়োগ, আশা, ভরসা ঝিলম নদীর গভীরে তলিয়ে গেল। এখানে একটা ছোট্ট উদাহরণ প্রাসঙ্গিক হবে। কাশ্মীরের সোপুর তার ফলের বাজারের জন্য প্রসিদ্ধ। এই পাইকারি বাজারের বাৎসরিক টার্নওভার হল ৭,০০০ কোটি টাকা। এই বাজারে ফল বিক্রি করেন কুপওয়ারা, বান্দিপোরা, বারামুল্লা এবং বদগ্রাম জেলার চাষীরা। এই চাষীদের একমাত্র উপজীবিকা হল এই ফল উৎপাদন। এই হামলার জেরে ট্যুরিস্ট আসা বন্ধ হয়ে গেলে সোপুর বাজারটির সাথে সাথে কয়েক হাজার কৃষক এবং কয়েক লক্ষ মানুষের ভাত কাপড়ের সংস্থান অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

অর্থনীতিতে একটি ধারণা আছে, 'লিঙ্কেজ এফেক্ট' বা সংযোগ প্রভাব, যেটি কোনও শিল্পের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। এই লিঙ্কেজ এফেক্ট আবার দু' ধরনের, ফরোয়ার্ড আর ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ। ফরোয়ার্ড লিঙ্কেজ হল যখন কোনও শিল্পের উৎপাদন অন্য শিল্পে উৎপাদনের উপকরণ হিসেবে ব্যবহৃত হয়; আর ব্যাকওয়ার্ড লিঙ্কেজ হচ্ছে যখন কোনও উৎপাদন প্রতিষ্ঠান অন্য শিল্পের উৎপাদিত দ্রব্য উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে। তাহলে যে শিল্পের এই দুই লিঙ্কেজের প্রভাব যত বেশি হবে সেই শিল্পের জাতীয় উৎপাদনে অবদান তত বেশি হবে। তার কারণ হল, ওই শিল্পটির উন্নয়ন শুধুমাত্র সেই শিল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে না, একই সাথে সামনের পিছনের আরও পাঁচটা শিল্পকে টেনে তুলে উন্নয়নের দিশা দেখাচ্ছে। কাশ্মীরে পর্যটন হল ঠিক তেমনই এক শিল্প, যার সংযুক্তি প্রভাব খুব শক্তিশালী। এই রাজ্যের জিডিপি-র ৭-৮ শতাংশ আসে পর্যটন থেকে, এই মুহূর্তে এই ক্ষেত্র থেকে বার্ষিক আয় ১২,০০০ কোটি টাকা হলেও, ২০৩০ সালের মধ্যে সেটা ২৫-৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছবে বলে আশা করা হয়েছিল। যে আড়াই লক্ষ মানুষ পর্যটন শিল্পের উপর নির্ভরশীল ছিল তাঁরা বিভিন্ন পেশার সাথে যুক্ত, যেমন - হোটেল, হাউসবোট, ট্যাক্সি পরিষেবা, শিকারা চালক, গাইড, অটোচালক, স্থানীয় বাজার, হস্তশিল্প ইত্যাদি। ডাল লেকে ১,৫০০ হাউসবোট আছে, শ্রীনগরে ছোট বড় মিলিয়ে হোটেলের সংখ্যা ৩,০০০। জঙ্গি হামলার জেরে এই সব হোটেল-হাউসবোটে পর্যটকদের কলকাকলির পরিবর্তে এখন শ্মশানের স্তব্ধতা বিরাজ করছে।

এ তো গেল প্রত্যক্ষভাবে নির্ভরশীল যারা তাদের কথা, এই রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উপর পরোক্ষভাবে নির্ভরশীল আরও কয়েক লক্ষ মানুষ, যাদের কথা কম আলোচিত হচ্ছে। পহেলগাওঁয়ের হামলার ঘাত শুধু পর্যটন শিল্পের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে এমন নয়। ইতিমধ্যে হামলার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে রাজ্যের দোকান-বাজার, যেটুকু খোলা আছে ট্যুরিস্টের অভাবে সেখানে বেচাকেনা নেই বললেই চলে। বহু মানুষ এইসব হোটেল, হাউসবোট, মুঘল গার্ডেন, বিভিন্ন দোকানে কর্মী হিসেবে কাজ করেন, পর্যটকের আকাল দেখা দিলে তাদের চাকরি থাকবে তো? এমনকি রাজ্যের বহু কৃষক, ফল উৎপাদক বছরভর এই পর্যটন মরশুমের দিকে তাকিয়ে থাকেন। মরশুম শুরুর প্রাক্কালে এই অমানবিক হামলা সমগ্র কাশ্মীর অর্থনীতির ভয়ানক ক্ষতি করল সন্দেহ নেই।

পর্যটন ছাড়া কাশ্মীর অর্থনীতিতে বড় অবদান রয়েছে রফতানি শিল্পের। এ রাজ্যের উল্লেখযোগ্য রফতানি পণ্যগুলি হল - আপেল, চেরি, আলুবোখরা, ন্যাসপাতি, মধু, জাফরান ও আখরোট। কাশ্মীরি জাফরানের মনমাতানো গন্ধ ও স্বাদ পৃথিবী বিখ্যাত। এছাড়াও আছে উৎকৃষ্ট মুনশিয়ানায় বোনা কার্পেট ও শাল, তাঁতজাত পণ্য এবং হস্তশিল্পের সম্ভার। রাজনৈতিক অস্থিরতা এই রাজ্যের বহির্বাণিজ্যে ঋণাত্মক প্রভাব ফেলবে, বলাই বাহুল্য। এর সাথে আরেকটা দিক আছে যেটা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। গত কয়েক বছরের রাজনৈতিক সুস্থিরতা রাজ্যের মানুষকে ভরসা জুগিয়েছিল, তাঁরা সম্পত্তি বেচে, গয়না বন্ধক রেখে, কষ্টার্জিত সঞ্চয় ব্যয় করে কিংবা ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বিভিন্ন ব্যবসা প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছিলেন; এই রাজনৈতিক অস্থিরতার আশু সমাধান হয়ে রাজ্যে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে না এলে কিছুদিনের সেই বিনিয়োগ ও ঋণ মানুষের গলার ফাঁস হয়ে উঠবে। ব্যাঙ্কগুলো বিপদে পড়ে যাবে এবং বিদেশী বিনিয়োগ যে ক্রমশ তলানিতে পৌঁছবে সেটা আলোচনার অপেক্ষা রাখেনা।

বিখ্যাত সায়েন্স জার্নাল 'কনজারভেশন বায়োলজি'র একটি সমীক্ষা জানাচ্ছে, ১৯৫০ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে বিশ্বের প্রধান প্রধান বিপর্যয়গুলি ঘটেছে বা ঘটে চলেছে সবচেয়ে বেশি জীববৈচিত্র্য সম্পন্ন এবং রাজনৈতিক সন্ত্রাসবিদ্ধ জায়গাগুলোয়। এই সমীক্ষার মতে এই রকম ৩৪টি উপদ্রুত অঞ্চলের মধ্যে কাশ্মীর অন্যতম। স্বাধীনোত্তরকালে তিনটি যুদ্ধ ছাড়াও দশকের পর দশক এই অঞ্চলের মানুষেরা প্রায় ঘরবন্দী জীবনযাপন করে চলেছেন। এই চলতে থাকা অসহিষ্ণুতা শুধু মানুষের প্রাণহানিই ঘটাচ্ছে না, তার সাথে এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করছে। সন্ত্রাসদমনে সরকারি পদক্ষেপগুলি, যেমন, জঙ্গলে ক্যাম্প করে থাকা ও গোলাগুলি চালানো, বন্যপ্রাণীদের আশ্রয় কেড়ে নিয়ে তাদের সংরক্ষণে চূড়ান্ত বাধার সৃষ্টি করছে। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে চলা এই সন্ত্রাসমূলক পরিবেশের সোশ্যাল কস্ট বা সামাজিক ব্যয়কেও আলোচনার মধ্যে রাখা দরকার। এই ব্যয়গুলির মধ্যে অন্যতম প্রধান হল, শিক্ষা ও চাকরির সুযোগের হ্রাস, মহিলাদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ, স্বাধীন চলাচলে বাধা, শারীরিক ও মানসিক আঘাত, অবসাদ, চাষের জমি ও বনজঙ্গলের হ্রাস ইত্যাদি। এ সবকিছুই সময়ে সময়ে রাজ্যটির উন্নয়নে হিমালয়সম প্রতিবন্ধক হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে।

পহেলগাঁও হামলার পর সিন্ধু জল চুক্তি থেকে শুরু করে পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিল, আটারি সীমান্ত বন্ধ করে দেওয়া ইত্যাদি পাঁচদফা প্রত্যাঘাত দিয়ে নিজেদের অস্ত্রাগার সাজিয়ে তুলছে ভারত, আগামী দিনে সেই অস্ত্র ভাণ্ডারে আরও অনেক নতুন নতুন অস্ত্র যোগ হবে। কিন্তু তাতে কি জোর দিয়ে বলা যাবে যে সন্ত্রাস ও হিংসা কমবে! পহেলগাঁও তো পহেলা নয়, এর আগে বারংবার এই উপত্যকা রক্তাক্ত হয়েছে, সে ২০১৯-এর পুলওয়ামায় ৪০ জন সিআরপিএফ-এর উপর গুলিবর্ষণ হোক কিংবা ২০২৪-এর জুলাইয়ে বোমা মেরে কাঠুয়ায় সেনা কনভয় উড়িয়ে দেওয়াই হোক, ভারত সরকার তখনও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল, কিন্তু কাশ্মীর আছে কাশ্মীরেই। এইসব হুমকি, প্রতিশোধ, কূটনৈতিক আলাপ-আলোচনা সবকিছুই গোলটেবিল বৈঠকেই থিতিয়ে যাবে, মানুষও ভুলে যাবে, মাঝখান থেকে সিন্ধু জলচুক্তি বন্ধ হলে পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পানীয় জল পাবেনা এবং সেচের অভাবে কৃষিকাজ সাংঘাতিকভাবে বিঘ্নিত হবে। তাই কাশ্মীর প্রদেশের এপার হোক বা ওপার, আসল কথাটা হল গরীব, দরিদ্র, খেটেখাওয়া মানুষগুলোকেই এই রাজনৈতিক আঘাত প্রত্যাঘাতের মূল্য দিতে হয়, আর এবারেও তার অন্যথা হবে না।