আরেক রকম ● একাদশ বর্ষ দ্বাবিংশ সংখ্যা ● ১৬-৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ● ১-১৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০

প্রবন্ধ

বাংলাদেশে দুর্গোৎসব

গৌতম লাহিড়ী


জাতীয় সংসদের সাধারণ নির্বাচনের আগে বাংলাদেশের দুর্গোৎসবের সাফল্য বিভেদের অসুরকে বধ করেছে। আসন্ন জাতীয় সংসদের নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্তাপ তীব্র হয়ে উঠছে। এবার আবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক অগ্নিপরীক্ষা। হিন্দুদের বার্ষিক উৎসব দুর্গাপূজা নির্বিঘ্নে পালিত হয় কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট চিন্তা ছিল।

পঞ্চমীর দিন থেকেই ঢাকা থেকে খুলনা-পাবনা-চট্টগ্রাম এবং প্রত্যন্ত গ্রাম বাংলার প্রান্তে-প্রান্তরে উৎসবের মেজাজ এপার বাংলার মতোই মাতোয়ারা। মুসলিম প্রধান বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় ধর্ম ইসলাম। হিন্দুদের সংখ্যা দেশভাগের থেকে হ্রাস পেলেও বেসরকারি মতে দশ শতাংশের কাছাকাছি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন তাঁর হত্যার পর সামাজিক চিত্রে পরিবর্তন ঘটেছে। জাতিসত্ত্বার আইডেনটিটির থেকে ধর্মীয় পরিচয় প্রাধান্য পাচ্ছিল। সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের উৎসবের মেজাজ অনেক সময়েই ম্লান হয়েছে। নানাবিধ হিংসাত্মক ঘটনার প্রতিবেদন অহরহ প্রতিফলিত হয়েছে ভারতের গণমাধ্যমে।

এই আবহে এবার দুর্গাপুজোর ব্যতিক্রমী উৎসব পালন নিঃসন্দেহে অসাম্প্রদায়িক। বাংলাদেশের সেই ছবিই দেখলাম পুজোর কয়েকদিন। উৎসবের প্রাঙ্গণে মুসলিম সমাজের উপস্থিতিতে আক্ষরিক অর্থেই দুর্গাপূজা ধর্মীয় উৎসবের তুলনায় অনেক বেশি সার্বজনীন তা প্রমাণিত হল। হিন্দুদের সঙ্গে মুসলিম মহিলারাও উলুধ্বনি দিয়ে বরণ করেছেন। চন্দনের তিলক কপালে সাগ্রহে পরেছেন। এ চিত্র উত্তর ভারতের হিন্দু বলয়ে বিরল।

পঞ্চমীর দিনে দিল্লি থেকে ঢাকা। পরিকল্পনা মতো ঢাকা থেকে খুলনা সড়ক পথে। দুরত্ব ২৩৪ কিমি। একসময়ে ঢাকা থেকে সুন্দরবনের প্রবেশদ্বার খুলনা পৌঁছাতে সময় লাগতো প্রায় আট ঘণ্টা। খরস্রোতা পদ্মার নদীর উপর নবনির্মিত ৬.১৫ কিমি দীর্ঘ রেল-সড়ক সেতুর দৌলতে একটানা মোটরগাড়িতে সফর করলে চার ঘন্টার কম সময়ে পৌঁছানো যায়। উদ্দেশ্য ছিল সড়ক পথে যাওয়ার সময়ে দুর্গাপুজোর মন্ডপ দেখতে দেখতে যাওয়া। ঢাকা শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দর থেকে মধ্য ঢাকার ফার্ম গেট পর্যন্ত ১১.৫ কিমি দীর্ঘ উড়াল একসপ্রেসওয়ে দিয়ে মাত্র দশ মিনিটে পৌঁছে গেলাম। অক্টোবর মাসেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উড়াল পথের উদ্বোধন করেছেন। এই পথটুকু পৌঁছাতে কিছুদিন আগেও ঘণ্টা দুয়েক লেগেছে, ঢাকার প্রবাদপ্রতিম ট্রাফিক জ্যামের কারণে। তবে শহরের মধ্যে সমস্যা এখনও রয়েছে। (উৎসবের পরেই চালু হয়েছে বিমানবন্দরের কাছে উত্তরা থেকে মধ্য ঢাকার মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো সেবা।)

ফার্ম গেট থেকে তেজগাঁওতে যাওয়ার পথেই রাস্তার ধারে বিশাল তোরণ। দুর্গাপুজার। উদ্বোধক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। কেবলমাত্র ঢাকা শহরেই নয়, বাংলাদেশের সর্বত্র এবার প্রায় সকল দুর্গাপুজোর সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন নেতা-মন্ত্রী-রাজনৈতিক কর্মী। শাসক আওয়ামি লীগের বিশেষ নির্দেশ ছিল প্রত্যেক পূজামন্ডপে অতন্দ্র প্রহরীর মতো পাহারা দিতে হবে। ঢাকার অভিজাত এলাকায় যুবনেতা সাইফুল্লা সইফুলকে যেভাবে দুর্গাপূজায় সামিল হতে দেখলাম তাতে তার ধর্ম পরিচয় বোঝা যায় না। এমন অসাম্প্রদায়িক চেতনার যুবরাই বাংলাদেশের ভবিষ্যত। কিছু জায়গায় আওয়ামি লীগ বিরোধী বিএনপি নেতাদেরও দেখেছি। সতর্ক ছিলেন সকলেই। দুর্গাপুজোয় অতীতে যে হাঙ্গামা হয়েছে তার যেন পুনরাবৃত্তি না হয়। এবার বাংলাদেশে সার্বজনীন দুর্গাপুজোর সংখ্যা ৩২ হাজার ৪০৭, গত বছরের তুলনায় আড়াইশো বেশি। ঢাকা শহরেই কলকাতার থিম পুজোর মতো পুজোমন্ডপের সংখ্যা ২৪৪। খুলনা শহরে প্রায় একশো। জেলায় (এখানে উপজেলা) সংখ্যা নশোর মতো। সবথেকে বেশি পুজোর সংখ্যা মাস্টারদা সূর্য সেনের জন্মভূমি চট্টগ্রামে। দু' হাজারেরও বেশি। নিকটবর্তী পার্বত্য এলাকা বলে দুর্গা সেজেছেন এখানকার জনজাতির পোশাকে।

ঢাকা শহরের দুর্গাপুজোর মন্ডপগুলি এবার উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ। বনানী-গুলশান মন্ডপ তৈরি হয়েছিল বাঁশ-পাট আর শীতলপাটি দিয়ে। বাংলাদেশের স্থানীয় শিল্পের প্রতীক। 'পরিবেশবান্ধব মন্ডপ' বিশেষ বার্তা দিয়েছে।

১৯৭১ সালের পাকিস্তানি হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া রমনা কালীবাড়ি নতুন রূপে সেজেছে। ঢাকেশ্বরী কালী মন্দিরের দুর্গাপুজো এক ঐতিহাসিক মিলনমেলা। বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের এপি-সেন্টার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জগন্নাথ হলের শিবমন্দিরের দুর্গাপূজা এবার বাংলাদেশের সর্বত্র আলোচিত। সকল সম্প্রদায়ের মিলিত শক্তিতে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠার প্রাণকেন্দ্র এবার আরও একবার মিলনক্ষেত্র হয়ে উঠল। ধানমন্ডি লেকের ধারে অভিজাত ধানমন্ডি এলাকার দুর্গাপুজো ভিভিআইপি পুজো বললে অত্যুক্তি হয় না।

পদ্মা নদী পেরিয়ে ওপারে পৌঁছাতেই খুলনাগামী সড়কের ধারে পল্লীতে পল্লীতে দুর্গাপুজোর মণ্ডপের সারি। বঙ্গবন্ধুর জন্মস্থান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কর্মভূমি গোপালগঞ্জের দুর্গাপুজো নিঃসন্দেহে কলকাতার ছবি মনে করিয়ে দেয়। পথমধ্যে বহুখ্যাত 'শাম্পান সরাইখানা'য় গোপালগঞ্জের গুড়ের সন্দেশ উৎসবের অতিরিক্ত অনুষঙ্গ। পরে গোপালগঞ্জের মেঠো কই, খুলনার চুই (একধরণের চারাগাছের কান্ড) ঝাল কাসি, মিষ্টি মায়াচ্যালা মাছের স্বাদ বিশেষ রসনা তৃপ্ত করে।

কিছুটা যেতেই মধুমতী নদী। পদ্মার শাখা। বাংলাদেশের দীর্ঘতম শাখা নদী। মিষ্টি জলের প্রবাহের জন্য সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ জঙ্গলের প্রাণ। মধুমতী নদীর সেতু পেরিয়ে খুলনা জেলায় প্রবেশ। বাংলাদেশের দক্ষিণপ্রান্তের প্রবেশদ্বার। শহরে প্রবেশের মুখেই রূপসা নদী। প্রবাদ আছে রূপ সাহা নামে এক লবণ ব্যবসায়ী শহরের মধ্যে লবণবাহী জাহাজ নিয়ে আসার জন্য ভৈরব ও মধুমতী নদীর সঙ্গমস্থল থেকে খাল কেটে নিয়ে আসেন। সেটাই নদী। সরাসরি বঙ্গোসাগরের সঙ্গে যোগ রয়েছে বলে অভ্যন্ত খরস্রোতা। কখনও কখনও বন্যায় ভাসিয়ে দেয়। সেই নদীর উপর সেতু বানানো বাংলাদেশে প্রযুক্তিগত বিস্ময়। স্থানীয় মজদুররা বানিয়েছিল। রূপ সাহা-র  নাম থেকে হলো রূপসা নদী।

ঢাকা-চট্টগ্রামের পরে তৃতীয় বৃহত্তম শহর খুলনা। একসময়ে বল্লাল সেনেদের রাজত্ব ছিল। খুলনাকে এখন দেশের শিক্ষা রাজধানী বললে অত্যুক্তি হয় না। পেশায় মূলত কৃষিজীবি ও মৎস্যজীবি হলেও, এখানকার গ্রামের মানুষও স্বাক্ষর এবং শিক্ষিত। একসময়ে সুন্দরবনের ডাকাতদের বসবাস ছিল খুলনায়। এক বদ্ধ জলাভূমিকে এখনও 'ডাকাতিয়া বিল' বলা হয়। পাকিস্তান আমলে এই খুলনা ছিল রাজাকার তৈরির কারখানা। এখান থেকে প্রশিক্ষণ দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন শহরে-গ্রামে মুক্তিযোদ্ধাদের খতম করতে পাঠানো হতো। বহু কিংবদন্তি কাহিনী শুনেছি। এই কারণে এখানে স্বাভাবিক ধর্মীয় মেরুকরণ রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে যত হিন্দু পরিবার পূর্ব পাকিস্তান ত্যাগ করেছেন তাঁদের অনেকেই নাকি খুলনা-পাবনার বাসিন্দা। পূর্ব-পাকিস্তানের গভর্নর টিক্কা খান লেঠেল 'আনসার বাহিনী' উঠিয়ে তথাকথিত 'স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী' গঠন করেছিলেন। তারাই রাজাকার।

২০২১-২০২২ সালেও দুর্গাপূজা মন্ডপে হাঙ্গামা হয়েছে। এবার খুলনার দুর্গাপূজা দেখার এটাই ছিল অন্যতম আকর্ষণ। স্থানীয় জনপ্রিয় আইনজীবি সংগঠনের মহাসচিব অ্যাডভোকেট সইফুল ইসলাম এবং আওয়ামি লীগ নেতা সরফুদ্দিন বিশ্বাস বাচ্চু মিয়াঁর তত্ত্বাবধানে ছোটোবেলার মতো পূজা মন্ডপে মন্ডপে অনেক রাত পর্যন্ত ঘুরেছি। বলে রাখা ভালো, এখানকার স্থানীয় সাংসদ হিন্দু সম্প্রদায়ের। অথচ গ্রামগুলিতে হিন্দু নারী-যুবতীরা কাতরভাবে জানিয়েছেন যে বিপদের সময় তাঁদের পাশে 'হিন্দু নেতারা' দাঁড়াননি। যে গ্রামে দুর্গাপুজো মন্দিরে হাঙ্গামার জন্য ৩৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়, তাদের মামলা গোপনে প্রত্যাহার করে নিতে চাইছে স্থানীয় হিন্দু নেতারা। গ্রামবাসীদের অভিযোগ এরা গোপনে উগ্রপন্থী সংগঠন 'জামায়েত'-এর সঙ্গে সমঝোতা করছে। হিন্দু পরিবারের মহিলাদের মুখে শুনেছি 'আমরা ধর্মের ভিত্তিতে নয়। আমাদের স্বার্থ যে রক্ষা করবে তাঁকেই চাই। তিনি মুসলিম হলেও আপত্তি নেই।' যশোরের এক হিন্দু সাংসদের বিরূদ্ধে দিল্লিতে হিন্দুরা এসে সম্প্রতি বিক্ষোভ দেখিয়েছে।

বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে পঁচিশ জন হিন্দু সাংসদ রয়েছেন। এখানকার হিন্দু বৌদ্ধ খ্রীস্টান সম্প্রদায়ের সংগঠনের নেতা প্রকাশ্যেই বলেছেন হিন্দু সাংসদরা সংখ্যালঘুদের স্বার্থ দেখেননি। আওয়ামি লীগ নেতাদের এতে সুবিধা হয়ে যেতে পারে। এবার হয়তো এই সুযোগে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মনোন্নয়ন কমে যেতে পারে। প্রশ্নটা হিন্দু বা মুসলিম নয়। বাংলাদেশে জনসংখ্যার ঘনবসতির কারণে জমি প্রায় দুর্লভ। তাই সরকারি ক্ষমতার সুবাদে নেতা-মন্ত্রিরা জমি দখল করছেন প্রায় গায়ের জোরে। এতেই অসন্তোষ।

মধুমতী নদী পেরিয়ে দেখেছি দু'ধারে মণ্ডপের আলোকমালার সজ্জা। খুলনা শহরের রূপসা নদী পেরিয়ে প্রত্যন্ত প্রান্তে গ্রাম বাংলার পুজোয় আতিশয্য কোনোভাবেই এপার বাংলার থেকে কম নয়। খুলনা শহর থেকে কিছু দূরের বাগেরহাটে লিটন শিকদারের বাড়ির পুজো সার্বজনীন রূপ নিয়েছে।। একে বাংলাদেশ তথা 'এশিয়ার বৃহত্তম দুর্গাপুজো' বলে দাবি করেন শিকদার পরিবার। প্রতিমার সংখ্যা পাঁচশো-এক। মহাভারত-রামায়ণ, হিন্দু পুরাণের কাহিনী প্রতিমা বানিয়ে সাজানো। দূর দূরান্ত থেকে হিন্দু-মুসলমান এই ক'দিন শিকদার বাড়ির পুজোর প্রসাদ খেয়ে আনন্দ করেছেন।

বঙ্গোপাসাগরের মংলা বন্দরের পথে বাগেরহাট। একসময়ে সুন্দরবনের অন্তর্গত ছিল। বঙ্কিমচন্দ্রের 'আনন্দ মঠ'-এ বাগেরহাটের উল্লেখ আছে। এখানেই একসময়ে স্বদেশীদের আখড়া ছিল। স্থানীয় শিকদার পরিবার বস্ত্রশিল্প ব্যবসায়ী। দুর্গাপুজোর গোড়াপত্তন করেন ২০১০ সালে। প্রভাবশালী শিকদার বাড়ির পুজোর খ্যাতি বাংলাদেশ ছাড়িয়ে সমগ্র দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আসছেন। এলাকার অন্যতম আকর্ষণ পুজোপ্রাঙ্গণকে কেন্দ্র করে আয়োজিত বিশাল মেলা। একটা পুজো শেষ হতে না হতেই পরের বছরের প্রতিমা তৈরির প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায়। বর্তমান উত্তরসুরী লিটনের পত্নী গুজরাটি। তিনি এখানে মানিয়ে নিয়েছেন। ঝরঝরে বাংলা বলেন। গোটা পুজোয় তিনিই অন্যতম আকর্ষণ আতিথেয়তার জন্য। নিজেও অরগ্যানিক ফার্মিং নিয়ে স্বাধীনভাবে কাজ শুরু করেছেন। উদ্দেশ্য কৃষিতে আধুনিকতার পত্তন ঘটানো। বাংলাদেশে নিযুক্ত সকল রাষ্ট্রদূতরা এই পুজো দর্শন না করে পারেন না। বিদেশে শিক্ষিত হলেও এঁরা মাটির টানে দুর্গাপুজোর সময়ে আদিবাড়িতে ছুটে আসেন। পুরোনো আমলের জমিদার বাড়ির আধুনিকীকরণ শৈল্পিক মননের প্রতীক।

উল্লেখ করার বিষয় এবার প্রত্যেক আওয়ামি লীগ নেতা পুজোমণ্ডপে সামিল হয়েছেন নিজেকে প্রকৃত অসাম্প্রদায়িক প্রমাণে। এক নেতার সঙ্গে অন্য নেতার প্রতিযোগিতা। কে কত মন্ডপ উদ্বোধন করেছেন তা নিয়ে আলোচনা। আসন্ন নির্বাচনে দুর্গাপুজোর সাফল্য শেখ হাসিনার সংখ্যালঘু ভোট আদায়ের অন্যতম অস্ত্র হতে পারে। হয়তো প্রতিবেশী ভারতের মানুষের কাছেও এসব বিশেষ বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা দুর্গাপুজোর উৎসবকে ম্লান করতে পারেনি। এটাই অসাম্প্রাদয়িক বাংলাদেশের পরিচয়। এই ভাবমূর্তি বজায় রাখার নিরন্তর সংগ্রামে যুক্ত রয়েছে আপামর বাঙালি। এর মধ্যে যে প্রশ্নটা উঠে আসে কেবলমাত্র বিরোধী বিএনপি নয়, স্থানীয় শাসক নেতাদের মদতেই আগে দুর্গাপুজোয় হাঙ্গামা হয়েছে। স্থানীয় মানুষের এমনটাই অভিযোগ। এবারের হিংসাবিহীন দুর্গাপুজো প্রমাণ করেছে শাসকদল চাইলে নির্বিঘ্নে সংখ্যালঘুরা বাস করতে পারেন, যদি না দুর্বৃত্ত রাজনীতিবিদরা জমি দখলে মত্ত হয়ে ওঠেন। এইসব নেতাদের প্রভাব থেকে নিজেকে মুক্ত করতে পারেন কিনা এটাই এবার শেখ হাসিনার ভোটে চ্যালেঞ্জ। নইলে ফের বাংলাদেশ অশান্ত হয়ে উঠতে পারে। জনতা এবার নিজেদের অধিকার বুঝে নেবে কড়ায় গন্ডায়। দেখে এলাম সেই গোপন প্রস্তুতি।