আরেক রকম ● একাদশ বর্ষ দ্বাবিংশ সংখ্যা ● ১৬-৩০ নভেম্বর, ২০২৩ ● ১-১৫ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০

সম্পাদকীয়

ইলেক্টরাল বন্ড নিয়ে গোপনীয়তা কেন?


কথায় আছে, লাগে টাকা দেবে গৌরী সেন। কিন্তু সেই গৌরী সেন যদি বকলমে আপামর দেশবাসীর দন্ডমুন্ডের কর্তা হয়ে যায় তাহলে একটু আতঙ্ক লাগে বইকি। যদি দেশের যাবতীয় নীতি তৈরি হতে থাকে এই গৌরী সেনদের জন্য তাহলে ভোটের লাইনে দাঁড়ানো আমজনতা যে দিনের শেষে বুড়ো আঙুল চুষতে চুষতে বাড়ি ফিরে যাবে এ বুঝতে কোনো বৈজ্ঞানিক হতে হয়না। অন্যদিকে এই গৌরী সেনরা যদি আরও ফুলে ফেঁপে উঠতে থাকে তবে গোটা ব্যবস্থাটাই এক বিকট তামাশা হয়ে দাঁড়ায়। বিগত ১০ বছরে এই চিত্র কি আরো প্রকট হয়ে ওঠেনি? দেশবাসী তো দেখছেন বিগত ১০ বছরে কীভাবে আদানি-আম্বানিরা আরও ধনী হয়ে উঠেছে, কীভাবে দেশের নীতি তৈরী হচ্ছে এদের আরও সুবিধা পাইয়ে দিতে। আবার একই সঙ্গে দেখা যাচ্ছে কেন্দ্রের শাসকদল বিজেপি কীভাবে আরও আরও মোদি কেন্দ্রিক হয়ে উঠেছে। তাদের গোটা রাজনীতির মুখ আজ একজন ব্যক্তি, কারণ তিনি এখন এদেশের অতি ধনীদের নয়নের মণি। ২০১৪ পরবর্তী সময়ে এই আঁতাত আরও প্রকট। কিন্তু এই পারস্পরিক সহায়তা আপনিই গড়ে ওঠেনি। ২০১৭ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচনী বন্ড নামক একটি ব্যবস্থার আমদানি ঘটায় যা দেশের রাজনৈতিক পরিবেশে বড় পুঁজির নিয়ন্ত্রণ অভুতপূর্বভাবে বাড়িয়ে দেয়। বরাবরের মতোই বিজেপির দাবি ছিল এই ব্যবস্থা রাজনৈতিক দলগুলোকে দেয় চাঁদায় স্বচ্ছতা আনবে এবং নির্বাচনে কালো টাকার ব্যবহার কমবে। যদিও বিজেপির অন্যান্য দুর্নীতি বিরোধী অভিযানের মতোই এটিও মুখ থুবড়ে পড়েছে কারণ গলদ আসলে গোড়াতেই। যেভাবে এই বন্ডে এক ধরণের আড়াল আইন করে বলবৎ করা হয়েছে তার ফলে এর মাধ্যমেই আজকে নির্বাচনে সবচেয়ে বেশী কর বহির্ভুত টাকা খাটার ক্ষেত্র তৈরী হয়েছে। তাই বরাবরের মত এটিও কেবল বিজেপির সুবিধা করে দেওয়ার ব্যবস্থায় পরিণত হয়েছে।

২০১৭ সালের আগে অবধি নিয়ম ছিল যে দেশের যে কোনো স্বীকৃত রাজনৈতিক দল ২০ হাজার টাকার বেশী অনুদান পেলে তার সমস্ত হিসাব জনসমক্ষে পেশ করতে হবে। এছাড়া কোনো বাণিজ্যিক সংস্থাই তাদের লাভের ৭.৫% বা মোট আয়ের ১০%-এর বেশী অনুদান রাজনৈতিক দলগুলোকে দিতে পারত না। ২০১৩ সালে তৎকালীন ইউপিএ সরকার একটি নির্বাচনী ট্রাস্ট তৈরীর আইন এনেছিল যেখানে বিভিন্ন সংস্থা বা ব্যক্তি বা পরিবার ট্রাস্টকে অনুদান দিত এবং সেই অনুদানের ৯৫% ওই ট্রাস্ট বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে দিয়ে দিতে বাধ্য ছিল। এখানে ট্রাস্টকে অনুদান দেয়ার সময় দাতার প্যান নম্বর বা পাসপোর্ট নম্বর নথিভুক্ত করে রাখা হতো। পরবর্তীতে ট্রাস্ট নির্বাচন কমিশনের কাছে সমস্ত দাতা, ব্যক্তি বা সংস্থার, তথ্য জমা করতে বাধ্য থাকত। এই ব্যবস্থায় কোন ট্রাস্ট যদি একজনের থেকে অনুদান নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলকেই তা দিয়ে দিত তাহলে কোন দল কার কাছ থেকে কত অনুদান পেল তা সহজেই জানা যেত। কিন্তু যদি দাতা ও গ্রহীতা একাধিক হতো তাহলে কে কাকে কত অনুদান দিয়েছে তা বোঝার উপায় থাকত না। ফলে এই ব্যবস্থায় দাতার একধরনের গোপনীয়তা বজায় থাকত।

কিন্তু ২০১৭ সালে বিজেপির সরকার এই রাজনৈতিক অনুদানে আরও স্বচ্ছতা আনার নামে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১, কোম্পানি আইন ২০১৩, আয়কর আইন ১৯৬১ এবং বিদেশী অনুদান আইন ২০১০-এ রদবদল ঘটিয়ে নির্বাচনী বন্ড চালু করল। এখানে দেশের মধ্যে একমাত্র ব্যাংক হিসাবে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া প্রতি নির্বাচনের আগে ১ হাজার থেকে শুরু করে ১০-এর গুনিতকে ১ কোটি টাকা অবধি বন্ড কয়েকদিনের জন্য ঘোষণা করে যা বিভিন্ন ব্যক্তি, সংস্থা যাদের একটি বৈধ ব্যাঙ্ক একাউন্ট আছে এই বন্ড এক বা একাধিক কিনে নেয়। যদিও এখানে ক্রেতার কোনো তথ্য জমা রাখা হয়না। এরপর তারা সেই বন্ড তাদের পছন্দের রাজনৈতিক দলকে দিয়ে দেয় যা দলগুলি পরে ব্যাংকে গিয়ে ভাঙিয়ে নিতে পারে। এখানে উল্লেখ্য যে কে কতগুলো বন্ড কিনতে পারবে তার কোনো ঊর্ধ্বসীমা নেই। ফলে চাইলে কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা নিজের পরিচয় গোপন রেখে পছন্দের রাজনৈতিক দলকে যত খুশি অনুদান দিতে পারে। এর মাধ্যমে তারা আয়করেও ছাড় পাবে, যদিও তার জন্য এই অনুদানের কোন তথ্য প্রকাশ করতে হবেনা।

এই বন্ড চালু করার সময় সরকারের যুক্তি ছিল যে যেহেতু এই বন্ড কেবল ব্যাঙ্ক থেকেই কেনা যাবে ফলে কোনো হিসাব বহির্ভুত টাকা রাজনৈতিক দলের অনুদান হিসাবে ব্যবহৃত হতে পারবে না। যেহেতু স্টেট ব্যাঙ্ক এবং তার মাধ্যমে ব্যাঙ্কের রেগুলেটর এই লেনদেনের হিসাব পাবে ফলে কোন দল কার কাছ থেকে টাকা পেয়েছে তা জানা থাকবে। ফলে গোটা ব্যবস্থাটাই খুব স্বচ্ছ একটা ব্যবস্থা। কিন্তু মজার কথা হল ব্যাঙ্ক ব্যতীত এবং তার সূত্রে সরকারের ক্ষমতায় থাকা রাজনৈতিক দল ব্যতীত আর কারুর কাছেই এই অনুদানের তথ্য আর থাকছে না কারণ এখানে বন্ড যে কিনছে তাকে কোথাও তা জানাতে হয়না এবং রাজনৈতিক দলেরও কোন দায় নেই দাতার পরিচয় প্রকাশ করার। ফলে গোটা স্বচ্ছতাই কেবল সরকারে থাকা রাজনৈতিক দল ও ব্যাঙ্কের কাছে, বাকি কারুর কাছে নয়। ঠিক এই কথাটাই সুপ্রিম কোর্ট তার পর্যবেক্ষণে বলেছেন।

এই নির্বাচনী বন্ড যে আদতে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় থাকা দলকেই সুবিধা দেবে তা খানিক বিশ্লেষণেই বোঝা যায়। প্রথমত এর ফলে রাজনৈতিক দলকে কোনো বাণিজ্যিক সংস্থার দেয় অনুদানের ঊর্ধ্বসীমা থাকছে না। দ্বিতীয়ত যেহেতু অনুদানের তথ্য সরকারের কাছেই কেবল থাকছে ফলে সরকারের নেক নজরে থাকতে বা তার বিরাগভাজন না হতে স্বাভাবিকভাবেই বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো সরকারি দলকেই অনুদান দিয়ে আনুগত্য দেখাবে। এর পাশাপাশি কেন্দ্র সরকার বিদেশী সংস্থার সংজ্ঞায় বদল আনে। ফলে এখন চাইলে যে কোনো বিদেশি সংস্থা এমনকি ভুয়ো হলেও এদেশের যে কোনো রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দিতে পারবে। একই সঙ্গে আয়কর আইনে বদল আনা হয় যার ফলে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলো কাকে কত টাকা দিয়েছে তার উল্লেখ নিজেদের হিসাবের খাতায় দেখাতে তারা আর বাধ্য নয়। কেবল মোট চাঁদার পরিমাণটা দেখালেই কাজ চলে যাবে। ফলে এই অনুদানের সিংহভাগ অর্থ তার ভাগেই যাবে যার কাছে এই তথ্যগুলো দেখার ক্ষমতা আছে। সুতরাং কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতায় থাকা দলই এর সুবিধা পাবে সবচেয়ে বেশী।

বিগত ১০ বছরের হিসাব ঠিক সেই কথাই বলছে। ২০১৭ সাল অবধি কেবল নির্বাচনী ট্রাস্ট-এর মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো বড় অনুদান পেয়েছে। ২০১৩ সালে ট্রাস্টের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলো অনুদান পেয়েছিল ৮৫ কোটি টাকা যা ২০২২-এ বেড়ে হয় ৪৬৪ কোটি টাকা। এই নয় বছরে মোট ২,২৬৯ কোটি টাকা অনুদান পেয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলো। অন্যদিকে ২০১৭-তে নির্বাচনী বন্ড চালু হওয়ার পর থেকে আজ অবধি ৯২০৮ কোটি টাকা দলগুলো অনুদান হিসাবে পেয়েছে বন্ডের মাধ্যমে। একই সময়ে ট্রাস্টের মাধ্যমে তারা পেয়েছে মাত্র ১৬৩১ কোটি টাকা। গত সাড়ে ছয় বছরে মোট ১৪ হাজার কোটি টাকার বন্ড বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ট্রাস্টের ৭২% অর্থ আর বন্ডের ৫৭% অর্থ। কিন্তু যেহেতু বন্ডের টাকার পরিমাণ বেশী ফলে টাকার অঙ্কে বিজেপি বন্ডের মাধ্যমেই বেশী টাকা পেয়েছে। অন্যদিকে কংগ্রেস বা রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস পেয়েছে বন্ডের যথাক্রমে ১০% ও ৮.৩%। ফলে দেখাই যাচ্ছে যে বন্ডের মাধ্যমে আদতে বিজেপির তহবিলই বেশী বেড়েছে।

দেশের নির্বাচন কমিশন একসময় দিস্তা দিস্তা পাতা খরচ করে বিভিন্ন নির্দেশিকা তৈরী করেছিল দেশের নির্বাচনে বেআইনি ও বৃহৎ পুঁজির দাপাদাপি বন্ধ করতে। কিন্তু দুঃখের কথা আজকে ঠিক তার উল্টোটাই ঘটছে এই বন্ডের হাত ধরে। যে রাজনৈতিক দল যে সংস্থার থেকে যত বেশী চাঁদা পাবে তার প্রতি অনুগত থেকেই নীতি প্রণয়ন করবে। আবার উল্টোদিকে যে সংস্থা যত সুবিধা চায় সে সরকারি দলকে তত বেশী চাঁদা দেবে। এই মিথস্ক্রিয়াতাই আজকে বিজেপির পিছনে দেশের বড় পুঁজির টাকা ঢালার কারণ। এই টাকা মোদি জোগাড় করে আনছেন বলেই দলের ভেতর তিনি অপ্রতিদ্বন্দ্বী। তাই বিতর্কিত কৃষি আইন আনতে প্রধানমন্ত্রী মরিয়া হয়ে পড়েন, বিদেশ সফরে গিয়ে সেই বিশেষ শিল্পগোষ্ঠীর জন্য উমেদারী করেন, দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রগুলোকে হয় লাটে তুলে দিয়ে অথবা তাদের কাছে বেচে দিয়ে তৃপ্তির ঢেঁকুর তোলেন।

কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকার কি একাই এই নিঃশব্দ বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলতে পেরেছে? হ্যাঁ। কেবল সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যার জোরেই এই পরিবর্তন আনা গেছে। ২০১৮ সালে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি যখন এই বন্ডের বিষয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মত চান তখন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এর অস্বচ্ছতার বিষয় নিয়ে আশঙ্কা জানায়। কিন্তু অর্থমন্ত্রী তাদের সেই মতকে অযৌক্তিক সন্দেহ বলে উড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে সেই সময় নোটবন্দির ঘোষণা করার ফলে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পক্ষেও সেই বেনজির কর্মকান্ড সামলাতে ব্যস্ত থাকতে হয়। একই সময় নির্বাচন কমিশনও এর মাধ্যমে সন্দেহজনক বিদেশি সংস্থার হস্তক্ষেপ ও ঘুরপথে কালো টাকা নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করে। কিন্তু সেই সময় সরকার কমিশনকে বাধ্য করে লিখিত দেওয়ার বদলে একটি মৌখিক আলোচনায় এবং তারপর লিখিত কোনো অভিযোগ নেই এই মর্মে বিলটি সংখ্যার জোরে সংসদে পাশ করিয়ে নেয়। একই সঙ্গে যাতে রাজ্যসভায় এই বিল না যায় তার ব্যবস্থাও করা হয়। ফলে দেশের সমস্ত গণতান্ত্রিক কাঠামোকে কব্জা করার এই সর্বনাশা আইন বলবৎ করা হয়। একথা উল্লেখ্য যে সেই সময় সিপিআই(এম) ব্যতীত কোনো রাজনৈতিক দলই এর বিরোধিতা করেনি।

আজ ৫ বছর পর এসে এই সর্বনাশা কৌশলটির বিষময় ফল ফলতে শুরু করেছে। বিজেপি তার আর্থিক প্রতিপত্তির জোরে রাজ্যের নির্বাচিত সরকারগুলোকে ফেলে দিয়ে পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করতে পারছে। অর্থের জোরে একটি আইটি সেল তৈরী করেছে যারা ক্রমাগত মানুষের মগজে মিথ্যা তথ্য ঢুকিয়ে চলেছে, ঘৃণার বিষে মানুষকে জর্জরিত করছে। দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামো বিজেপির হাতে আজ বিপর্যস্ত। আশার কথা যে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে এই নির্বাচনী বন্ডকে তথ্য জানার অধিকার আইনের আওতায় নিয়ে আসার। কেন্দ্রের সরকার এই মতের প্রবল বিরোধী স্বাভাবিকভাবেই। তারা জানে একবার এই তথ্য সাধারণ মানুষের অধিকারের আওতায় এলে বড় পুঁজি আর রাজনৈতিক দলের সখ্যে বাধা পড়বে। তাদের একচ্ছত্র রাজ্যপাট ভেঙে পড়বে। তাই সলিসিটর জেনারেল সওয়ালে বলেছেন যে রাজনৈতিক দল কোথা থেকে অর্থ পেল তা কেন সাধারণ মানুষকে বলবে। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন যে এই তথ্য তো সরকারের জন্য উন্মুক্ত। তাহলে সরকার যারা নির্বাচন করেছেন তাদের জানার অধিকার কেন থাকবে না।

একথা রাজনৈতিক দলের নেতারা বলতেই পারেন যে ‘আমরা কোথা থেকে টাকা পাই অন্যদের কেন বলব’। কিন্তু প্রশ্ন হল সেই টাকায় নির্বাচনে জিতে যদি সাধারণের দন্ডমুন্ডের কর্তা হওয়া যায় তাহলে যাদের মুন্ড তাদেরও প্রশ্ন করার অধিকার থাকে টাকা এল কোথা থেকে। প্রধানমন্ত্রী যিনি সারাদিন নিজের সততার ঢাক পেটান তিনিই বা নিজের দলের টাকার উৎসের তথ্য ঢাকতে মরিয়া কেন? সততা কি কেবল ভুখা দেশবাসীরই জপমালা? সুপ্রিম কোর্টে মামলা চলছে। তার রায় এখনো ঘোষণা হয়নি। কিন্তু এ লড়াই কেবল আদালতের লড়াই নয়। সাধারণ মানুষ যদি মনে করেন যে তাদের নির্বাচিত সরকার তাদের কথা ভেবেই কাজ করবে তাহলে এই নির্বাচনী বন্ডের মত অস্বচ্ছ ব্যবস্থাকে অবিলম্বে নিষ্ক্রিয় করতে হবে। আর তা করা না গেলে এ দেশের গণতন্ত্র যে কেবল ধনী ও অতিধনীদের জন্যই নিবেদিত প্রাণ হবে সে কথা বলাই বাহুল্য। কিন্তু একথা খুবই দুঃখের যে আজ দেশের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও একই দোষে দুষ্ট। যদি বিজেপির বিরুদ্ধে, নির্বাচনী বন্ডের দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাদের রুখে দাঁড়াতে হয় তাহলে আগে নিজেদের স্বচ্ছ হতে হবে। সেই সৎসাহস কি তারা দেখাবেন?