আরেক রকম ● একাদশ বর্ষ ষোড়শ সংখ্যা ● ১৬-৩১ আগস্ট, ২০২৩ ● ১-১৫ ভাদ্র, ১৪৩০

প্রবন্ধ

মহাজাগতিক গুঞ্জন

কণিক পালধি


সূচনা

২০১৫ সালে বিজ্ঞানজগতে আক্ষরিক অর্থেই একটি কাঁপুনি-ধরানো ঘটনা ঘটেছিল। এই 'কাঁপাকাঁপি' যেমন আমাদের চারপাশ পরিবৃত 'স্থান-কাল' কাঁপিয়ে দিয়েছে, তেমনি কাঁপিয়েছে আমাদের চিন্তাজগতকে। আবার সাম্প্রতিক গবেষণা, যা নিয়ে এই লেখা, তা এটাও ইঙ্গিত করছে যে আমরা বোধহয় সর্বদা থরহরি কম্প। 'তারায় তারায় কাঁপন' লাগানো এই চিন্তার উৎপত্তি, আশ্চর্যজনকভাবে ঠিক একশো বছর আগে, যখন বিজ্ঞানী আইনস্টাইন প্রকাশ করলেন আপেক্ষিকতাবাদের সাধারণ তত্ত্ব। এক অদ্ভুত সমাপতন! এই তত্ত্বের প্রয়োগ যেসব সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছিল তার প্রাথমিক ভিত্তি হলো যে মহাকর্ষ (গ্র্যাভিটেশন), যা নিউটনের তত্ত্ব অনুযায়ী একটি বল (ফোর্স), তার প্রকৃত রূপ কী তা নিয়ে আবার নতুন ভাবনার প্রয়োজন। আসলে একটি বিশেষ পরিস্থিতিতে বেশ কিছু আবশ্যিক শর্ত মানলে মহাকর্ষকে ওইরকম 'বলের মতো মনে হয়'। প্রকৃতপক্ষে তার বিস্তার তরঙ্গের মতো, আমাদের চতুর্মাত্রিক (ফোর ডায়মেনশনাল) স্থান-কালের (স্পেস-টাইম) মধ্যে দিয়ে। আপেক্ষিকতার প্রমাণ পাওয়া গেলেও মহাকর্ষীয় তরঙ্গের ধারণা বহুদিন পর্যন্ত তাত্ত্বিক মত হিসেবেই প্রতিষ্ঠিত ছিল। তত্ত্ব যতই বিখ্যাত হোক না কেন, আধুনিক বিজ্ঞান যে তিন ধাপের ওপর নির্ভরশীল - পরীক্ষা, পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত, সেই তিন ধাপ না পেরিয়ে কখনোই সে তত্ত্বের নিশ্চয়তা প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয় না বৈজ্ঞানিকভাবে। ২০১৫ সালে ঠিক সেটাই হয়েছিল।

লাইগোর কান্ডকারখানা

২০১৫ সালে, লাইগো (লার্জ ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল-ওয়েভ অবজারভেটরি) নামক একটি যন্ত্রের সাহায্যে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের চাক্ষুষ প্রমাণ পাওয়া গেল। লাইগো একজোড়া কৃষ্ণ-গহ্বরের (ব্ল্যাক হোল) একে অন্যের চারদিকে ঘুরতে ঘুরতে মিলনের ঘটনা সনাক্ত করেছিল যা প্রায় ১.৩ বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত ছিল (অন্যভাবে ভাবলে, সময়বিচারে ঘটনাটি ততটাই পুরোনো)। এই মিলনের ফলে যে প্রচন্ড বিস্ফোরণ হয়েছিল তাই আলোর বেগে মহাবিশ্বের স্পেস-টাইমকে বাঁকিয়ে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের মাধ্যমে এতটা শূন্যস্থান বেয়ে বিস্তারিত হয়েছিল। বলাই বাহুল্য যে এটি পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাসে এক অভাবনীয় অগ্রগতি। প্রত্যাশিতভাবেই লাইগোর পরীক্ষাটি ২০১৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পায় এবং পুরস্কারটি লাইগোর তিনজন প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, রাইনহোর্ড ওয়েইজ, বার্নার্ড মারসেল এবং কিপ থর্নকে দেওয়া হয়েছিল।

এবার আমরা একটু সহজভাবে অথচ সংক্ষেপে বিষয়টির জটিলতা বোঝার চেষ্টা করি এবং লাইগো গঠন প্রক্রিয়ার সূক্ষ্মতার একটা ধারণা পাবার চেষ্টা করি। লাইগো পুরো নামের মধ্যেই একটা শব্দ আছে ইন্টারফেরোমিটার। অনেকেই এই যন্ত্রটির সঙ্গে পরিচিত থাকলেও আমরা খুব সংক্ষিপ্তরূপে এখানে এর গঠন সম্পর্কে জানবো। আলোকে যদি একটি তরঙ্গরূপে (লাইট ওয়েভ) ভাবা হয়, তাহলে দুটি তরঙ্গের সমাপতনে (ওভারল্যাপ) একটি নতুন তরঙ্গ তৈরি হয় যার মান নির্ভর করে সমাপতিত দুটি তরঙ্গের বিস্তার ও দশার (অ্যামপ্লিচিউড আর ফেজ) উপর। একে বলা হয় আলোকের ইন্টারফেরেন্স বা ব্যতিচার। আলোর এই ধর্মকে কাজে লাগিয়ে তৈরি করা হয়েছে ইন্টারফেরোমিটার যা ব্যবহার করে খুব সূক্ষ্মভাবে দূরত্ব, প্রতিসরাঙ্ক ইত্যাদি মাপা যায়। এই যন্ত্রের দুটি হাত একে অন্যের সঙ্গে সমকোণে থাকে যার মধ্যে দিয়ে আলো যায় এবং ফিরে এসে সমাপতিত হয়ে সাদা-কালো ডোরাকাটা ঝালরের মতো দেখতে 'ইন্টারফেরেন্স ফ্রিঞ্জ' গঠন করে। একটি সাধারণ ইন্টারফেরোমিটারের ফ্রিঞ্জ থেকে আমরা একশো ন্যানোমিটারের মতো সূক্ষ্মতায় মাপতে পারি, কিন্তু মহাকর্ষীয় তরঙ্গের জন্য কি সেটাই যথেষ্ট?

কয়েক লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে থাকা নক্ষত্রের হালহকিকত জানতে আমাদের ইন্টারফেরোমিটারের সূক্ষ্মতার মাপ হতে হবে একটি পরমাণুর নিউক্লিয়াসের দশ হাজার ভাগের থেকেও কম। আর সেটা তখনই সম্ভব হবে যখন ইন্টারফেরোমিটারের হাত লম্বা হবে। আইনের হাত খুব লম্বা হয় বলে শুনেছি। পদার্থবিজ্ঞানের আইনও সে পথেই হেঁটে যে উপদেশ দিলো তাতে বর্তমান লাইগোর ক্ষেত্রে দুটি হাতের দৈর্ঘ্য দাঁড়ালো চার কিলোমিটার। চমকাবেন না, প্লিজ! তুলনায় বলতে পারি, আমাদের বিদ্যাসাগর সেতুর বা সেকেন্ড ব্রিজের দৈর্ঘ্য ৮২৩ মিটার। অর্থাৎ মোটামুটি তার পাঁচ গুণ লম্বা শুধু একটি হাত। এবার মনে করুন দুটি চার কিমি হাতকে সঠিক সমকোণে রাখতে হবে। আপনি ভাবছেন হয়তো কি এমন ব্যাপার! মাটির ওপরে দু'দিকে দুটো চ্যানেল করে দেবেন সমকোণে। মাফ করবেন, সেটি হবে না, কেননা বাতাসের পরিবর্তনশীল প্রতিসরাঙ্ক বদলে দেবে মাপ। তাই পুরোটাই নির্মাণ করতে হবে মাটির নিচে সুড়ঙ্গ খুঁড়ে। এই পুরো সুড়ঙ্গটিকেই রাখতে হবে বায়ুশূন্য (ভ্যাকুয়াম) অবস্থায়। এই চার কিমি সুড়ঙ্গ খোঁড়ার সময় সুড়ঙ্গ যেন একদম সোজা থাকে, এমনকি পৃথিবীর বক্রতার প্রভাব না পড়ে, সেটাও খেয়াল রাখতে হবে। এখনো শেষ হয়নি। কর্মরত অবস্থায় সেখানে কোনো মানুষ কাছাকাছি থাকতে পারবেই না, কেননা চলাচলের ফলে কম্পন (ভাইব্রেশন) আসল সিগন্যাল বদলে দিতে পারে। এমনকি, লাইগোর ক্ষেত্রে অসংখ্য যন্ত্রাংশের কোনো একটিতে একটি পাখি বসলেও গোলমাল হতে পারে (এবং হয়েছে)। তাই ভিতরের আলোর যা যা যন্ত্র বা অপটিকাল কম্পোনেন্ট যেমন মিরর, প্রিজম ইত্যাদি নিচে থেকে ওপরে ওঠা পিলারের ওপর না বসিয়ে ওপর থেকে ঝোলানো মাউন্টের ওপর বসাতে হবে। মানে বায়ুশূন্য অবস্থায় মিরর, প্রিজম এইসব ঝুলন্ত অবস্থায় থাকবে। এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে এই রচনা শেষ হবে না, তাই লাইগো ওয়েবসাইট অনুযায়ী বলি যে এটি দুনিয়ার সূক্ষ্মতম মাপের প্রচেষ্টা, এখনো পর্যন্ত। লাইগো প্রথম তৈরি হয় আমেরিকার হ্যানোভার আর লিভিংস্টোনে। পরে ইতালির ভার্গো, জাপানের কার্গা ও জার্মানির জিও৬০০ - এই তিনটি ইন্টারফেরোমিটার তৈরি হয়েছে। 'লাইগো-ইন্ডিয়া' নামে ভারতেও সমমানের একটি ইন্টারফেরোমিটার তৈরির কাজ চলছে এবং মহারাষ্ট্রের হিঙ্গোলি জেলায় তার জন্য জায়গা অধিগৃহীত হয়েছে।

মহাজাগতিক গুঞ্জনের স্বরূপ

এবার আমরা আসি, লাইগো তৈরির পরে তার ব্যবহার নিয়ে এবং এই প্রবন্ধের মূল বিষয়টি নিয়ে। যে ক'টি ইন্টারফেরোমিটারের নাম উপরে করা হয়েছে, সেগুলির সাহায্যে এখনো পর্যন্ত কয়েক লক্ষ কোটি আলোকবর্ষ দূরে থাকা জোড়া কৃষ্ণ-গহ্বর, নিউট্রন স্টার প্রভৃতি কয়েকটিমাত্র জ্যোতির্বস্তুর (অ্যাস্ট্রনমিকাল অবজেক্ট) সন্ধান পাওয়া গেলেও তাদের অস্তিত্বের প্রমাণ অনেক ক্ষেত্রেই অন্য কোনো পরিমাপ পদ্ধতি যেমন দূরবীক্ষণ (টেলিস্কোপ) ইত্যাদি থেকে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও অনেক জোড়া নিউট্রন স্টার প্রতি পনেরো সেকেন্ডে মিশে যাচ্ছে যার লাইগো থেকে প্রমাণ পাওয়ার সম্ভাবনা খুব ক্ষীণ। লাইগোর মতো সূক্ষ্ম মাপকের ক্ষেত্রেও কিছু সীমাবদ্ধতা থাকবেই। সেইখান থেকেই সমস্যার শুরু যে আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদের আরেক গাণিতিক সম্ভাবনা - মহাজাগতিক গুঞ্জনের (কসমিক হাম) কিভাবে মাপজোক করা যাবে। আইনস্টাইনের ভবিষ্যদ্বাণী ছিল যে মহাজগতে জ্যোতির্বস্তুর নানা ঘটনার ফলে আসলে প্রতি মুহূর্তেই স্পেসটাইমের সূক্ষ্মতম পরিবর্তন হয়ে চলেছে। তারা সর্বদাই যেন আমাদের নাড়া দিয়ে চলেছে। এই গুঞ্জনের সঠিক পরিমাপ করা গেলে তার অভিঘাতে আমাদের বস্তুজগত সম্পর্কে ধারণা আমূল বদলে যেতে পারে। ব্রহ্মান্ডের সূচনায় যে বিস্ফোরণ ঘটেছিল (বিগ ব্যাং) তার প্রকৃত স্বরূপ, এই ব্রহ্মান্ড আসলে এক না বহু (ইউনিভার্স না মাল্টিভার্স), তারা আর ব্ল্যাক হোলের জন্ম-মৃত্যুর সঠিক সূত্র, সর্বোপরি গুপ্ত পদার্থ (ডার্ক ম্যাটার) কতটা পরিমাণে থাকতে পারে - এসবেরই একটা আভাস পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু এই পরিমাপের মূল অসুবিধার কারণ হলো যে এই কম্পন এতটাই সূক্ষ্ম যে তা বুঝতে প্রয়োজন কঠিন সাধনার। সম্প্রতি অবশ্য অস্ট্রেলিয়ার মোনাস ইউনিভার্সিটির স্মিথ ও থ্রানে লাইগোর ডেটা থেকেই এই সংকেত পাওয়া যেতে পারে বলে একটি পেপার লিখেছেন। তবে এটি প্রচলিত হতে সময় লাগবে। তাই বিজ্ঞানীরা অন্য সূত্র ধরেও এই গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ন্যানোগ্রাভের পর্যবেক্ষণ

এই চেষ্টারই ফলস্বরূপ গড়ে উঠেছে একটি সংস্থা যার নাম ন্যানোগ্রাভ। পুরো নাম 'নর্থ আমেরিকান ন্যানোহার্জ অবজারভেটরি ফর গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস'। সম্প্রতি তাদের লেখা একটি পেপার ছাপা হয়েছে বিখ্যাত পত্রিকা 'অ্যাস্ট্রফিজিক্যাল জার্নাল লেটারস'-এ যেখানে আমেরিকা ছাড়াও ইউরোপ, ভারত, চীন এবং অন্যান্য দেশের বিজ্ঞানীরা মিলিতভাবে কাজ করেছেন। এখানে তারা পনেরো বছর ধরে রেডিও টেলিস্কোপের ডেটা সংগ্রহ করেছেন এক বিশেষ ধরণের বিস্ফারিত তারার, যার নাম পালসার। ১৯৬৭ সালে জ্যোতির্বিজ্ঞানী জোসেনিল বেল বারনেল প্রথমবার পালসারের খোঁজ দেন। যদিও এই আবিষ্কারের জন্য তাঁর পি-এইচ.ডি. উপদেষ্টা (সুপারভাইজার) অ্যান্থনি হিউইশ ও অন্য সহকর্মী মার্টিন রাইল নোবেল পান, জোসেনিল বিবেচিত হননি। যাই হোক, সে বিতর্ক বাদ দিয়ে আমরা দেখি যে পালসার আসলে কী? পালসার এমনই ঘূর্ণায়মান মৃত তারা যা ক্রমাগত রেডিও তরঙ্গ ছড়ায়। সেই তরঙ্গ যেই পৃথিবীর অভিমুখে আসে তখনই তা ধরা পড়ে পৃথিবীর বুকে থাকা বিভিন্ন রেডিও টেলিস্কোপে। ঘটনাটিকে আপনারা একজন নর্তকীর ঘুরে ঘুরে নাচের মতো ভাবতে পারেন। স্টেজের দর্শকদের দিকে সে একবারই সরাসরি তাকায়, বাকি সময় তার মুখ ফেরানো থাকে অন্যদিকে। তার মানে পালসার নির্দিষ্ট সময় অন্তর পৃথিবীর দিকে মুখ ঘোরায়, তখনই রেডিও টেলিস্কোপ তার সংকেত পায়। অর্থাৎ এই নির্দিষ্ট পর্যায়কাল (টাইম পিরিয়ড) রেডিও টেলিস্কোপে সনাক্ত করে আমরা নির্দিষ্ট কম্পাঙ্ক (ফ্রিকোয়েন্সি) অনুযায়ী তার উপস্থিতি বুঝতে পারি। পালসারের এই পর্যায়কাল এতটাই নিয়মিত যে তার সঙ্গে পারমাণবিক ঘড়ি যেমন সিজিয়াম ঘড়ির নির্ভুলতার (অ্যাকিউরেসি) তুলনা চলে। একটি সিজিয়াম ঘড়ি ১,৪০০,০০০ বছর বা চোদ্দ লাখ বছরে এক সেকেন্ড ভুল হতে পারে। ন্যানোগ্রাভ টিম এই সুদীর্ঘ গবেষণার ফলে যেটা প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছেন তা হলো পালসারের এই নির্ভুল সময়ে আসা সংকেতের পরিবর্তন তখনই সম্ভব যখন পৃথিবীর ও পালসারের মধ্যবর্তী স্থান-কালের পরিবর্তন হয় অন্য কোনো কারণে। মহাজাগতিক গুঞ্জনই হতে পারে সেই কারণ। এই লেখার সময়ে, ন্যানোগ্রাভের ওয়েবসাইট অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত ঊনআশিটি পালসারের থেকে আসা প্রায় পাঁচ লক্ষ তেতাল্লিশ হাজার আগত রেডিও সংকেত নিয়ে মাপজোক হয়েছে। পেপারটিতে অবশ্য সাতষট্টিটি পালসারের কথা বলা হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই পর্যায়কালের পরিবর্তন মেপে সুনির্দিষ্টভাবে অন্য সম্ভাবনাকে বাতিল করে বিজ্ঞানীরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে এই ব্রহ্মান্ড ক্রমাগত ধীরতম লয়ে গান করে চলেছে। সেই গানের মর্মোদ্ধার করে আমরা গভীরতম উৎসের সন্ধান পেতে পারি। মনে পড়ে গেল আশা ভোঁসলের গাওয়া, আর. ডি. বর্মনের সুর করা এবং গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের অনবদ্য শব্দচয়নে লেখা 'রাজকুমারী' ছবির আমাদের ছোটবেলার মনকাড়া একটি গান -

''আজ গুণ গুণ গুণ কুঞ্জে আমার একি গুঞ্জরণ!
গানের সুরে পেলাম এ কার প্রাণের নিমন্ত্রণ?
''

উপসংহার

শেষ করি, শন জোনসের কথা দিয়ে যিনি ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের (ইউএসএ) ডিরেকটোরেট অব ম্যাথেমেটিকাল অ্যান্ড ফিজিক্যাল সায়েন্সের সহকারী নির্দেশক (অ্যাসিস্ট্যান্ট ডিরেক্টর)। ওঁনার কথায়, “এই ঘটনা ব্রহ্মান্ডের এক পরিবর্তনশীল ও কোলাহলপূর্ণ রূপ উন্মোচন করে যা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের সঙ্গীত মূর্ছনায় জীবন্ত। যে স্থির ব্রহ্মান্ড আমাদের বৈজ্ঞানিক ধারণায় ছিল তা সম্পূর্ণ ধুলোয় মিশে গেল।''


তথ্যসূত্রঃ

১৷ ফারুক রহমান, 'জেনারেল থিওরি অব রিলেটিভিটি', কেমব্রিজ ইউনিভার্সিটি প্রেস, ২০২১।

২৷ লাইগো ক্যালটেকের ওয়েবসাইট - https://www.ligo.caltech.edu/

৩৷ নিল করনিশ, 'লিসনিং ফর দ্য কসমিক হাম অব দ্য ব্ল্যাক হোলস', এপিএস ভিউপয়েন্ট, ২০১৮।
https://physics.aps.org/articles/v11/36

৪৷ উইল সালিভান, 'গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস ক্রিয়েট এ কনস্ট্যান্ট 'হাম' অ্যাক্রস দি ইউনিভার্স', স্মার্ট নিউজ, স্মিথসোনিয়ান ম্যাগাজিন, ২০২৩।
https://www.smithsonianmag.com/smart-news/gravitational-waves-create-a-constant-hum-across-the-universe-180982457/

৫৷ অ্যালেক্স উইলকিনস, 'গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস প্রোডিউস আ ব্যাকগ্রাউন্ড হাম অ্যাক্রস দ্য হোল ইউনিভার্স', নিউ সায়েন্টিস্ট রিপোর্ট, ২০২৩।
https://www.newscientist.com/article/2380451-gravitational-waves-produce-a-background-hum-across-the-whole-universe/