আরেক রকম ● একাদশ বর্ষ একাদশ সংখ্যা ● ১-১৫ জুন, ২০২৩ ● ১৬-৩১ জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩০

সম্পাদকীয়

সন্ত্রস্ত মণিপুর


জাতিগত হিংসার ঘটনায় জ্বলছে মণিপুর। পরিস্থিতি সামলাতে নামাতে হয়েছে সেনা। ঘটনা শুরুর প্রায় মাসখানেক পর রাজ্যে উপস্থিত হয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তার আগেই পৌঁছে গিয়েছিলেন সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্তা। পৌঁছেছে প্রায় ২০ হাজার সৈন্য। বিভিন্ন ধরনের আধা-সামরিক বাহিনী তো আগে থেকেই রাজ্যে রয়েছে। কিন্তু অশান্ত মণিপুরকে যেন কোনওভাবেই শান্ত করা যাচ্ছে না।

এরই মধ্যে আশঙ্কা বৃদ্ধি হল গোয়েন্দাদের একটি সতর্কবাণীতে। অশান্ত মণিপুরে হাজার হাজার অস্ত্র লুট হয়েছে। গোয়েন্দাদের আশঙ্কা সেই অস্ত্র সীমান্ত পেরিয়ে পৌঁছে যেতে পারে মায়ানমারের জঙ্গি সংগঠনগুলির হাতে। সংবাদমাধ্যম ‘নিউজ ১৮’-এর একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, প্রশাসন মনে করছে রাজ্যে অন্তত ৪ হাজার অস্ত্রের কোনও খোঁজ মিলছে না। কার্তুজের সংখ্যা এখনও গুনে ওঠা যায়নি। অনেকের মতে অস্ত্রশালা থেকে লুট নয় সরাসরি অস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। কিন্তু কীভাবে এত পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র খোয়া গেল? প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, অশান্তি চলাকালীন রাজ্যের বিভিন্ন বাহিনীর অস্ত্রশালা থেকে দেদারে অস্ত্রশস্ত্র লুট হয়েছে। ঠিক কত অস্ত্র এবং কার্তুজ খোয়া গেছে তা জানতে এখনও অপেক্ষা করতে হবে কয়েক সপ্তাহ। কিন্তু অস্ত্র যে খোয়া গেছে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই কারও।

প্রতিবেদনে আরও দাবি করা হয়েছে, একে সিরিজের অস্ত্র-সহ এমআই ১৬ রাইফেল, সাবমেশিনগান, কার্বাইন এবং অত্যাধুনিক পিস্তল চুরি গিয়েছে। ওই প্রতিবেদনেই মণিপুরের এক শীর্ষ আধিকারিককে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে যে মায়ানমারের জঙ্গিগোষ্ঠীর হাতে লুট হওয়া অস্ত্র পৌঁছনোর আশঙ্কা রয়েছে। সেটাই সবচেয়ে ভয়ের ব্যাপার। কোনও সম্প্রদায়ের পক্ষেই ৪ হাজার অস্ত্র লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।

অন্য একটি কেন্দ্রীয় এজেন্সির এক আধিকারিকও একই কথা জানিয়েছেন ওই সংবাদমাধ্যমের সাংবাদিককে। গোয়েন্দারা খবর পেয়েছেন, মণিপুরে অশান্তি পাকানো কয়েকটি গোষ্ঠীর সঙ্গে জঙ্গি সংগঠনের যোগ রয়েছে এবং রাজ্যে অশান্তি চলাকালীনই প্রশিক্ষণ নিতে এ'পার থেকে মায়ানমারে কয়েকজনকে পাঠানো হয়েছিল বলেও জানতে পেরেছেন গোয়েন্দারা। প্রশ্ন ওঠে, গোয়েন্দাদের খবরের ভিত্তিতে প্রশাসন কী ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে?

জাতিগত হিংসার আগুন কমাতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছে প্রশাসন। সরকারি আর্থিক সহায়তার কথাও ঘোষণা করা হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বিপুল অস্ত্র খোয়া যাওয়ার ঘটনায় প্রশাসনের কপালে চিন্তার ভাঁজ পরা স্বাভাবিক। চুরি যাওয়া অস্ত্র কি মণিপুরে আগুন জ্বালিয়ে রাখতে মণিপুরবাসীর বিরুদ্ধেই ব্যবহার করা হবে? এখন এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজছে উত্তর-পূর্বের ছোট্ট রাজ্য।

জনজাতি সংঘর্ষকে কেন্দ্র করে মণিপুর অশান্তিতে উত্তাল। সেই সংঘর্ষের জেরে সরকারি মতে মৃত্যু ঘটেছে ৮০ জনের, জখম ২৫০ জন। বেসরকারি মতে, সংখ্যাটা আরও বেশি। এছাড়া সরকারি ভাষ্যে জানানো হয়েছে যে রবিবার ২৮শে মে রাতে ৪০ জন কুকি উগ্রপন্থী পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। উল্লেখ্য, মণিপুরে ৩০টি উগ্রপন্থী সংগঠনের সঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারের সংঘর্ষ-বিরতি চুক্তি হয়েছে। তবে সেই চুক্তি অনেকেই নাকি এখন আর মানছে না। গোয়েন্দা ও সরকারি সূত্রের খবর, ওইসব সংগঠনের বহু সদস্যই বর্তমানে শিবির ছেড়ে আবার অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে। এমনও অভিযোগ উঠেছে যে, জনজাতিদের জন্য পৃথক রাজ্যের দাবি তুলে এদের প্রকারান্তরে ইন্ধন জোগাচ্ছেন শাসকদলের বহু বিধায়ক। যদিও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, এই দাবি সরকার কোনও অবস্থাতেই মানবে না, বরং উগ্রপন্থীদের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি নিয়ে এগোবে কেন্দ্র ও রাজ্য। পৃথক রাজ্যের দাবিতে অটল থাকা বিধায়কদের বিরুদ্ধে তা হলে সরকার ও দল কী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে?

মেইতেইদের জনজাতি হিসাবে স্বীকৃতির দাবির বিরোধিতা করে কুকি আদিবাসীদের ছাত্র সংগঠন। সংঘর্ষের মাত্রা এতটাই তীব্র হয়ে ওঠে যে, দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশও জারি করেছিল রাজ্য সরকার। যখন এমন বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে মণিপুরে, সেই সময়ে কর্নাটকে ব্যস্ত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী। ভোট প্রচারই তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। বলা বাহুল্য, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এ-হেন আচরণ শুধুমাত্র নিন্দনীয় নয়, তাঁদের চূড়ান্ত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচায়কও বটে। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, ঘটনার সাত দিন পর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই মর্মে আশ্বাস দিয়েছেন যে, মণিপুরের অখণ্ডতা রক্ষায় কেন্দ্র সর্বতোভাবে চেষ্টা চালাবে, যা নিতান্তই হাস্যকর। প্রাণ রক্ষার তাগিদে এ পর্যন্ত ১০ হাজারের বেশি বাস্তুচ্যুত মানুষ মণিপুর ছেড়ে পাশের রাজ্য মিজোরামে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন। পাশাপাশি সংঘর্ষে জখম হওয়া বহু মানুষ মণিপুরে চিকিৎসার সুযোগ না পেয়ে মিজোরামে চিকিৎসা করাচ্ছেন।

মণিপুরে জনসংখ্যার ৪০% জনজাতি (এসটি), যার মধ্যে প্রধান কুকিরা। এই ৪০% মানুষ রাজ্যের ৯০% পাহাড়-অরণ্য অঞ্চলে রয়েছেন বলে দাবি সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেইদের, যাঁরা জনজাতিভুক্ত নন। তাঁদের বক্তব্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাঁরা রয়েছেন মাত্র ১০ শতাংশ অঞ্চলে। এর উপরে মায়ানমার থেকে শরণার্থী প্রবেশের ফলে তাঁদের জায়গা আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সেই কারণেই তাঁরা জনজাতি হিসাবে সংরক্ষণ চেয়েছেন বলে দাবি করা হয়। যার পরিণতি গোষ্ঠী সংঘাত। আগামীদিনে মায়ানমারের সামরিক শাসনের অভিঘাত মণিপুর ও মিজোরামের জন্য আরও বড় সমস্যা হয়ে উঠবে বলেই আশঙ্কা। কারণ জাতিগত দিক থেকে (ethnic) পশ্চিম মায়ানমারের বাসিন্দাদের সঙ্গে মণিপুর ও মিজোরামের জনজাতির মানুষের নৈকট্য রয়েছে।

দ্বিতীয় সমস্যা ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির। দীর্ঘ সময় ধরে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রবক্তাদের একটা বড়ো অংশ উত্তর-পূর্ব ভারতে হিন্দুত্বের চর্চা করে চলেছেন। শুধু উত্তর-পূর্বেই নয়, গোটা ভারতেই জনজাতি অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে হিন্দুত্বের চর্চা হচ্ছে। সম্প্রতি এ নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিস্তর গবেষণা হচ্ছে। গেরুয়া শিবির হিন্দুত্ববাদ প্রচার ও প্রসারের কাজ গত দু-তিন দশক ধরে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে নিবিষ্টভাবে করে চলেছে। ফলাফল, উত্তর-পূর্বে সাতটির মধ্যে ছ’টি রাজ্যে এখন গেরুয়া শিবিরের তথাকথিত ডাবল ইঞ্জিন সরকার। যেখানে নেই - অর্থাৎ মিজোরামে - সেখানেও ক্ষমতাসীন দল (মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট) অপ্রত্যক্ষভাবে 'ন্যাশনাল ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স'-এ রয়েছে।

হিন্দুত্ববাদীদের গবেষণার যে অংশটা এখন সামনে আসছে, সেটা তাৎপর্যপূর্ণ। অরুণাচল প্রদেশে ‘ডনি-পোলো’ সম্পর্কে হিন্দুত্ববাদীদের নির্দিষ্ট মতামত রয়েছে। ‘ডনি-পোলো’ হল সূর্য এবং চাঁদ এবং সংশ্লিষ্ট ধর্ম। যে-হেতু হিন্দু ধর্মে চন্দ্র-সূর্য দেবতা, ‘ডনি পোলো’-তে বিশ্বাসীদের বলা হচ্ছে যে, হিন্দু ধর্মের সঙ্গে তাঁদের ধর্মের নৈকট্য রয়েছে। এর পাশাপাশি আরও একাধিক 'অ্যানিমিস্ট' (নির্জীব বস্তু, উদ্ভিদ, প্রাকৃতিক ঘটনা, সব কিছুর মধ্যে প্রাণের দর্শন) বা 'শ্যামিনিস্ট' (ভিন্ন ধরনের প্রাণের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক) ধর্মীয় আন্দোলন রয়েছে উত্তর-পূর্বে (আমিক মাতাই, রংফ্রা প্রভৃতি), যা প্রধানত খ্রিস্টধর্ম আসার পরে চাপা পড়ে যায়। এখানেই রাজনৈতিক খেলা - হিন্দু ধর্মের পাশাপাশি যে-হেতু উত্তর-পূর্বের অন্যতম প্রধান খ্রিস্ট ধর্ম, তাই খ্রিস্টানদের সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে না গিয়ে লোকজ ধর্মকে বোঝানো হচ্ছে যে, তাঁরা চাপা পড়ে গিয়েছেন খ্রিস্টানদের জন্য। এর ফলে বড়ো ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে উত্তর-পূর্বে। কারণ উত্তর-পূর্বের তিন রাজ্যে (মেঘালয়, মিজোরাম ও নাগাল্যান্ড) খ্রিস্টানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। অরুণাচল প্রদেশে দু’পক্ষই সমান, প্রায় ৩০ শতাংশ। মণিপুরেও তাই, দুই পক্ষই ৪১ শতাংশ। সমসংখ্যক হিন্দু এবং খ্রিস্টান থাকার ফলে মণিপুরে কী হয়েছে, সে সম্পর্কে সকলেই অবগত।

যাঁরা লোকজ ধর্মের মধ্যে রয়েছেন, তাঁরা আবার সংগঠিত ধর্মের মধ্যেও থাকতে পারেন। তা ছাড়া, জনজাতি সমাজের বড় অংশ এখনও খ্রিস্টান। ফলে সংঘাত আরও জোরালো হতে পারে। খ্রিস্টান সম্প্রদায় স্বভাবতই আতঙ্কগ্রস্ত। সাম্প্রতিক সময়ে এতগুলি গির্জা ধ্বংসের পর এমন আতঙ্ক সৃষ্টি হওয়াই স্বাভাবিক।

সাম্প্রদায়িকতা, জাতি, বর্ণ, রাজনীতি ও ধর্মের ভিত্তিতে মেরুকরণ এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এই বৈষম্য ও বৈপরীত্যের ভিত্তিতে দুই গোষ্ঠীর মেরুকরণ ও সংঘাতের কারণ কিন্তু খুঁজতে হবে কোনও না কোনও সরকারি ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে, যা দুই গোষ্ঠীর মধ্যে দূরত্ব বা ভাঙন সৃষ্টি করে। মেইতেই-এর জনজাতিকরণ করার নির্দেশ তেমনই একটি ঘটনা যা ২৭ মার্চ, ২০২৩ ঘোষণা করা হয়। মূলতঃ এসসি ও ওবিসি বলে স্বীকৃত মেইতেইদের ৭ শতাংশ এসটি-র অন্তর্ভুক্তিকরণ সংক্রান্ত সিদ্ধান্তই সংঘাতের মূল কারণ। এই সিদ্ধান্ত অনিচ্ছাকৃত নাকি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত তা ভবিষ্যতে প্রমাণিত হবে।

শ্রমজীবী মানুষ কখনও নিজে থেকে সংঘর্ষ ও হানাহানিতে লিপ্ত হয় না। তাদের সে ইচ্ছা, সময় বা সামর্থ্য কোনওটাই থাকে না। জীবিকা নির্বাহ করতেই তাদের দিন চলে যায়। পারস্পরিক সহানুভূতি, সহায়তা ও ভ্রাতৃত্ববোধই সাধারণ মানুষের জীবনের ভিত্তি। যতই ব্যক্তিগত বা পারিবারিক রেষারেষি ও হিংসা থাকুক না কেন, সেই হিংসা সার্বিক ও ব্যাপক ধ্বংসাত্মক আকার ধারণ করে না।

এই উত্তাল পরিস্থিতিতে রাজ্য মন্ত্রিসভার পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসন, সেনা ও আধাসেনার সঙ্গে কথা বলেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে তিনি সর্বদল বৈঠক করেছেন। মহিলাদের সংগঠন মেইরা পইবি সহ বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি, রাজ্যের বিশিষ্ট নাগরিক এবং অবসরপ্রাপ্ত সেনা অফিসারদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তিনি। এ ছাড়া, চূড়াচাঁদপুর জেলায় গিয়ে জনজাতিদের সঙ্গে দেখা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। আবার কুকিরাও তাঁর কাছে মণিপুর থেকে পৃথক হওয়ার দাবি পেশ করেছেন। 'ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরাম'-এর নেতা জানিয়েছেন, শান্তি ফেরাতে ১৫ দিন সময় চেয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সিবিআই ও বিচার বিভাগীয় তদন্তের আশ্বাসও দিয়েছেন। মেইতেই সংগঠনগুলির যৌথ মঞ্চ 'কোরকমি'র দাবি, রাজ্য ভাগ হবে না বলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তাদের আশ্বাস দিয়েছেন। তাঁর সফরের সময়ও রাজ্যে বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষের খবর এসেছে।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য মণিপুরের বিভিন্ন আলোচনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ১৫ দিন সময় চেয়েছেন। তিনি এখনও মণিপুরে রয়েছেন। ঠিক সেই সময় পুণে থেকে সামরিক বাহিনীর সর্বাধিনায়ক (চিফ্ অফ্ ডিফেন্স স্টাফ) ৩০শে মে মন্তব্য করেছেন যে মণিপুরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। এই ধরনের বিবৃতিতে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত। বিশেষতঃ বর্তমান পরিস্থিতিতে যখন সবরকমের বিভ্রান্তিকর মন্তব্য পরিহার করাই বাঞ্ছনীয়।

পরিশেষে, মণিপুরের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনা চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল, সারা দেশের অখণ্ডতা ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকারের চূড়ান্ত ব্যর্থতা ও প্রয়োজনীয় উদ্যোগের অভাবকে। অথবা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবেই চালানো হচ্ছে বিভাজন ও সম্প্রীতি বিনাশের পরীক্ষা। স্বাধীন দেশের মানুষের জীবনে এর থেকে বড়ো বিপর্যয় আর কী হতে পারে!