আরেক রকম ● দশম বর্ষ চতুর্থ সংখ্যা ● ১৬-২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২২ ● ১-১৫ ফাল্গুন, ১৪২৮

প্রবন্ধ

উত্তর প্রদেশ, বিহারও শুধরে গেল, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের ভোটে হিংসা বন্ধ হলো না

গৌতম হোড়


ভোটগ্রহণের দিন সত্যি সত্যিই যত কাণ্ড পশ্চিমবঙ্গে। তা সে পঞ্চায়েত, পুরসভা, বিধানসভা বা লোকসভা যে ভোটই হোক না কেন। দিল্লি সহ বিভিন্ন রাজ্যে ভোট দেখার অভিজ্ঞতার পরিপ্রেক্ষিতে বলতে পারি, বাঙালি ভীতু, বাঙালি মারতে জানে না, বাঙালি বেনিয়মে চলে না বলে যে সব মিথ আছে, তার মধ্যে কোনও সত্যতা নেই। অন্তত ভোটের সময়। ভারতের দুটি বাংলাভাষী রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় ভোট মানেই এখন হিংসা, ভোট মানেই বোমাবাজি, ভোট মানেই মারধর, ভুয়ো ভোটার, এককথায় ভোট মানেই অশান্তি, দাদাগিরির সাতকাহন। অথচ, বাকি ভারতের দিকে চোখ ফেরালে দেখা যাবে, ক্ষমতাসীন ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই, প্রবল বৈরিতা থাকলেও ভোটের দিনে তার প্রভাব পড়ে না। রক্তাক্ত ভোট হয় না। কেন? এমনকী একসময় যে দুই রাজ্য ভোটের সময় অশান্তির জন্য কুখ্যাত ছিল, সেই উত্তর প্রদেশ ও বিহারও এখন ভোটের দিন মোটামুটি শান্ত থাকে। তাহলে পশ্চিমবঙ্গের এই হাল কেন?

এর উত্তর খোঁজার আগে একবার অন্য রাজ্যের ভোটচিত্রের দিকে নজর ফেরানো যাক। যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে দিল্লিতে বসবাস, তাই রাজধানীর ভোটছবিটা তুলে ধরলে ভালো হবে।

নিস্তরঙ্গ দিন

রাজধানীর ভোটের দিনকে এককথায় বলা যেতে পারে, একেবারেই শান্ত, নিস্তরঙ্গ, ঘটনাহীন দিন। একটা সময় দিল্লিতে লড়াইটা হতো মূলত কংগ্রেস এবং বিজেপি-র মধ্যে। এখন কংগ্রেস টিমটিম করে আছে ঠিকই, কিন্তু লড়াইটা বদলে গিয়ে হয়েছে বিজেপি বনাম আপ। ভোটের সময় বিজেপি ও আপের সম্পর্ক অহি-নকুলের মতো। গত বিধানসভা নির্বাচনে তো প্রচারের সময় উত্তেজনার পারদ এতটাই চড়েছিল যে, আমার মতো পশ্চিমবঙ্গের ভোট-হিংসা দেখে বেড়ে ওঠা মানুষের মনেও প্রশ্ন জেগেছিল, ভোটের দিন কোনও গোলমাল হবে না তো?

কারণ, প্রচারের সময় এক কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে স্লোগান দিতে শুনেছি, দেশ কা গদ্দারো কো..। সঙ্গে সঙ্গে সামনে বসা মানুষরা ধুয়ো তুলেছেন, গোলি মারো শালে কো। এমনকী প্রচারে এমন কথাও শোনা গেছে, ওদের (বিরোধী) ভোট দিলে ওরা ঘরে ঘরে ঢুকে কুকর্ম করে যাবে। এই মেরুকরণ, বিভাজনের প্রয়াস দেখে মনে হচ্ছিল, গোলমাল শুধু সময়ের অপেক্ষা। তার আগে দিল্লি দাঙ্গার বীভৎসতা, একের পর এক পোড়া বাড়ি, আঙিনায় ছড়িয়ে থাকা শাকসবজি, দুয়ারে কুণ্ডলী পাকানো আহত এক কুকুর, যার চোখ থেকে জল পড়ছে, যুদ্ধোন্মাদ দাঙ্গাকারী, পোড়া গাড়ির পিরামিড সবই দেখে এসেছি। তাই ভয় হওয়াটা ছিল স্বাভাবিক। খুবই স্বাভাবিক।

কিন্তু ভোটের দিনের ছবিটা একেবারেই আলাদা। আমার বুথ যেখানে ছিল, সেটা আমার বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে মিনিট চারেকের রাস্তা। যাঁদের বাড়ি একটু দূরে অথবা বয়স্ক ভোটদাতা আছেন, তাঁরা গাড়িতে করে আসছেন। একেবারে স্কুলের গেটে নামছেন। গাড়ি পার্ক করছেন পাশেই। বেশি গাড়ি এলে পুলিশ বলছে, একটু দূরে পার্ক করতে। তিনটি রাজনৈতিক দলের কর্মীরা টেবিল সাজিয়ে বসে আছেন। চা খাচ্ছেন। পুরী-সবজিও চলে আসছে তাদের কাছে। সেই টেবিলে ছেলেদের সঙ্গে মেয়েরাও অনেকে বসে। তারা গল্পগুজব করছেন। নিজেদের মধ্যে মধ্যে হিসাব কষছেন। কোথাও উত্তেজনার চিহ্নমাত্র নেই।

স্কুলের গেট দিয়ে ঢুকে সুড়কির রাস্তায় মিনিট দুয়েকের হাঁটা। নির্বাচন কমিশনের কর্মীরা বসে আছেন ভোটার লিস্ট নিয়ে। তাদের কাছে জেনে নেওয়া যেতে পারে খুঁটিনাটি। কয়েকজন পুলিশকর্মী অলসভাবে চেয়ে আছেন সামনের দিকে। তাদের পাশ দিয়ে সোজা বুথে। লাইন যৎসামান্য। তবে সমানে ভোটদাতারা আসছেন, ভোট দিচ্ছেন, চলে যাচ্ছেন। ভিতরে তিনটি দল ও নির্দলদের এজেন্ট বসা। সকলেই চেনামুখ। একে অন্যকে বরং সাহায্য করছেন। লড়াই, তিক্ততার লেশমাত্র নেই। একেকটা ব্লকের জন্য একেকটা বুথ। ফলে ব্লকের ভোটদাতারা চেনামুখ। ভুয়ো ভোটের গল্প বিশেষ নেই।

গত ২৬ বছর ধরে এই শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অশান্ত হতে দেখিনি। কেমন একটা উৎসব উৎসব ভাব। ভোটদাতারা সেজেগুজে এসে ভোট দিচ্ছেন। চলে যাচ্ছেন।

লড়াইয়ের তিক্ততা ভোটের দিনে নয়

তামিলনাড়ুতে এআইএডিএমকে এবং ডিএমকে-র মধ্যে সম্পর্ক হলো আদায়-কাঁচকলায়। উত্তর প্রদেশে বিজেপি ও সমাজবাদী পার্টির মধ্যে লড়াইটা সেরকমই। বিহারে আরজেডি এবং বিজেপি-জেডি(ইউ) জোট কেউ কাউকে এক ইঞ্চি জমিও ছাড়ে না। রাজস্থানে বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে, পাঞ্জাবে অকালি দল ও কংগ্রেসের মধ্যে, অন্ধ্রে ওয়াইএসআর কংগ্রেস ও তেলুগু দেশমের মধ্যে একই ধরনের সম্পর্ক রয়েছে। কিন্তু ভোটের দিন মারামারি, বোমাবাজি, রক্তারক্তি, বুথ জ্যাম, সংঘর্ষের ঘটনা খুব কম হয়।

তাই পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপি, তৃণমূল ও বামেদের বা কংগ্রেসের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা আছে বলে হিংসা হয়, এমন যুক্তি তো ধোপে টেকে না।

একসময় উত্তর প্রদেশ ও বিহারে ভোটের দিন মানেই ছিল প্রচুর মানুষের মৃত্যু, গুলি, বোমা ও রক্তাক্ত দিন। কী করে বদলে গেল সেই পরিস্থিতি? উত্তর প্রদেশকে নিজের হাতের তালুর মতো চেনেন শরদ গুপ্তা। 'লোকমত' সংবাদপত্রের রাজনৈতিক সম্পাদক শরদের মতে, এর জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য টি এন শেসন, লিংডো ও কৃষ্ণমূর্তির মতো মুখ্য নির্বাচন কমিশনারদের। তারা কেন্দ্রীয় আধা সামরিক বাহিনীকে দিয়ে নির্বাচন করিয়েছেন, কোনোরকম হিংসা বরদাস্ত না করার মনোভাব নিয়ে চলেছেন। শেসন এমন একটা ব্যবস্থা চালু করেছিলেন এবং এতটাই কড়াকড়ি করেছিলেন যে, তাঁর বেঁধে দেওয়া নিয়মের বাইরে কোনও পদক্ষেপ নিতে দল, প্রার্থী, নেতারা পাঁচবার করে ভাবত। নির্বাচন কমিশনের এই কঠোর ব্যবস্থার ফলেই উত্তর প্রদেশে ভোটে হিংসা কম হয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়ে যায়।

শরদের মতে, এখন বরং হিংসা না করে অন্য পদ্ধতি নেওয়া হচ্ছে। সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শাসক দলের বিরোধীদের অনেকের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ চলে যাচ্ছে। এবার উত্তর প্রদেশে প্রথম পর্বের ভোটের ক্ষেত্রে এরকম প্রচুর অভিযোগ উঠেছে।

তবে সেসব কাহিনি পশ্চিমবঙ্গে অনেকদিন আগে থেকেই হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি

এই সব কড়া ব্যবস্থা তো পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রেও ছিল। তাহলে কেন এখনো ভোট-হিংসা কমলো না, বরং যত দিন যাচ্ছে, ততই তা বেড়ে যাচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি, রাজনীতিটা অন্য সব রাজ্যের থেকে আলাদা। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি চিরদিনই উত্তেজক এবং সেখানে হিংসা, উত্তেজনার কোনও অভাব নেই। একসময় ট্রামের ভাড়া দুই পয়সা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য ট্রাম পোড়ানোর ঘটনা দেখেছে কলকাতা। একদা পূর্ব পাকিস্তান এবং অধুনা বাংলাদেশ থেকে আসা বাস্তুহারাদের ঘিরে হিংসার রাজনীতি কম হয়নি। ট্রাম, বাস পোড়ানো, রেল অবরোধ, রাস্তা অবরোধ, বোমাবাজি, বিভিন্ন কারখানায় অবরোধ ছিল পশ্চিমবঙ্গে রাজনৈতিক আন্দোলনের অবিচ্ছিন্ন অঙ্গ।

সত্তরের দশকে নকশাল আন্দোলনের হিংসা এবং যেভাবে পাল্টা হিংসার সাহায্যে আন্দোলন থামানো হয়েছে, তারও সাক্ষী পশ্চিমবঙ্গ। সিদ্ধার্থশঙ্কর রায়ের আমলেও হিংসার রমরমা কম ছিল না। তারপর বাম আমলে রাজনৈতিক হিংসা একটা নতুন মাত্রা পেল। সেই হিংসাটা বাম বনাম কংগ্রেস, বাম বনাম তৃণমূল, বাম বনাম এসইউসি তো ছিলই সেই সঙ্গে ছিল সিপিআই(এম) বনাম আরএসপি, সিপিআই(এম) বনাম ফরোয়ার্ড ব্লকের মধ্যেও। অর্থাৎ, বিরোধীদের সঙ্গে ঝামেলার পাশাপাশি শরিকদের মধ্যেও ঝামেলা। এছাড়া ছিল এলাকা দখল করা নিয়ে লড়াই, বিরোধী মিছিলে গেলে, বিরোধীদের প্রতি বেশি প্রেম দেখাতে গেলে অত্যাচার। পঞ্চায়েতে ভয় দেখিয়ে বিরোধীদের প্রার্থী হতে না দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়া। অর্থাৎ, এখন যে জিনিসগুলি আমরা দেখতে অভ্যস্ত তার প্রায় সবকটিই বাম জামানায় ছিল। এখন তার মাত্রা বেড়েছে বই কমেনি।

এখন হিংসা

পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে লোকসভা পর্যন্ত প্রতিটি নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের ছবিটা এক। মারামারি, বোমাবাজি, গুলি, এজেন্টদের ভয় দেখানো, ভোটারদের ভয় দেখানো, ঝগড়া, উত্তেজনা এবং তার জেরে আহত ও নিহত হওয়ার ঘটনা। গত লোকসভা নির্বাচনে তো কেন্দ্রীয় বাহিনীকে আক্রমণ ও কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে মৃত্যুর ঘটনা পর্যন্ত ঘটেছে।

রাজ্য বিধানসভার অত্যন্ত ঘটনাবহুল ও সহিংস নির্বাচনের পরে পুর নির্বাচন ঘিরেও একই ধরনের ছবি দেখা যাচ্ছে। কলকাতা পুরসভার নির্বাচন, যেখানে শাসক দলের এমনিতেই হইহই করে জেতার কথা, সেখানেও বেনিয়ম ও সন্ত্রাসের ভরপুর অভিয়োগ ছিল। বিধাননগরের ভোটের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। দিন কয়েক আগে বিধাননগরে গিয়ে দেখে এসেছি, প্রচারে সর্বত্র শুধু তৃণমূল। বিজেপি ও বামেদের প্রচার নামমাত্র। বিধাননগরেও তৃণমূলের জয় নিয়ে খুব একটা সন্দেহ নেই। তা সত্ত্বেও ভুয়ো ভোটার, সাংবাদিককে মারধর, হিংসা সবই হয়েছে।

কেন এই হিংসা?

আমার প্রাক্তন সহকর্মী সাংবাদিক দীপ্তেন্দ্র রায়চৌধুরী 'ইস্টার্ন টাইমস' ওয়েবসাইটে লিখেছেন, ‘‘সহজ কথায় এর উত্তরটা হলো, ভোটের সঙ্গে বিরাট সংখ্যক মানুষের নিহিত স্বার্থ বা ভেস্টেড ইন্টারেস্ট জড়িয়ে থাকা। এখন একটা বিরাট সংখ্যক মানুষের যদি মনে হয়, তৃণমূল কংগ্রেস চলে গেলে তাঁদের রোজগারে টান পড়বে, তাহলে তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রাণ পণ করে নামবেন, এটাই স্বাভাবিক। আর অন্য একটা দলের যদি মনে হয় যে তৃণমূলকে সরাতে না পারলে তাঁদের রোজগারের ব্যবস্থা হবে না, তাহলে তাঁরা তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে প্রাণ পণ করে নামবেন, এটাও স্বাভাবিক।

এই যে রুজি-রোজগারের কথা হচ্ছে, এটা কিন্তু সরকারের স্বাভাবিক কাজকর্ম বা নীতি সংক্রান্ত নয়। এটা হল দুর্নীতির অঙ্গ। যেমন ধরা যাক ১০০ দিনের কাজ পাওয়া। সুস্থ সমাজ ব্যবস্থায় যাঁরা আগে আসবেন তাঁদের নাম নথিভুক্ত হবে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে তা হবে না।

শাসক দলের কর্মী-সমর্থকেরা কাজ পাবেন, বাকিরা পাবেন না। নানা সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটবে। যাঁর বাড়ি ভেঙে পড়েছে তিনি বাড়ি তৈরির টাকা পাবেন না, যদি না তিনি শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হন। শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হলে তিনতলা বাড়ির মালিকও টাকা পেয়ে যাবেন। স্বাধীন ব্যবসা চালানোর ক্ষেত্রেও শাসক দলের আনুকূল্য পেলে সব মসৃনভাবে চলবে। না-হলে পদে পদে ঠোক্কর খেতে হবে।‘‘

আমার আরেক প্রাক্তন সহকর্মী অগ্রজ সাংবাদিক শুভাশিস মৈত্রর ব্যাখ্যা, পশ্চিমবঙ্গে নতুন কোনও শিল্প হচ্ছে না। কর্মসংস্থানের সুযোগ কমছে। ভবিষ্যতের ছবিটাও আদৌ উজ্জ্বল নয়। শাসক দলের সঙ্গে যুক্ত থাকলে কিছু সুবিধা পাওয়া যায়। চাকরি, ব্যবসা থেকে শুরু করে অন্য নানা ক্ষেত্রে সুবিধা জোটে। তাছাড়া এখন পঞ্চায়েত ও পুরসভায় প্রচুর টাকা আসে। ফলে সেখানে সদস্য ও পার্ষদ হওয়ার জন্য জান লড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। সেজন্যই হিংসা কমছে না বরং বাড়ছে।

দীপ্তেন্দ্র ও শুভাশিস মৈত্রর মূল্যায়ণের মধ্যে একটা মৌলিক যোগ আছে।

তাছাড়া ভারতের বিভিন্ন রাজ্যেই বাহুবলীরা শাসক দলের সঙ্গে থাকতে পছন্দ করে। তারা নিরাপত্তা পায়। তার বিনিময়ে শাসক ও কিছু ক্ষেত্রে বিরোধী দলের সেবা তাদের করতে হয়। ফলে যে কেন্দ্রে দলগুলি মনে করে, তাদের জেতা নিয়ে সংশয় আছে, বা ব্যবধান বাড়াবার দরকার আছে, সেখানেই ভোটের দিন গোলমালের আশঙ্কা থাকে।

তাই এই হিংসার সঙ্গে পরতে পরতে জড়িয়ে আছে বিভিন্ন সুবিধা পাওয়া, কর্মসংস্থান না থাকা, রাজনীতিতে বাহুবলীদের প্রতাপ, প্রচুর অর্থ এবং রাজনৈতিক দলগুলির জয়ের জন্য যে কোনও পন্থা নেওয়ার নীতি। তাই অন্য রাজ্যে ভোট-হিংসা কমে গিয়ে প্রায় নেই হয়ে গেলেও পশ্চিমবঙ্গ ও ত্রিপুরায় তা রমরমিয়ে আছে। অদূর ভবিষ্যতে এই প্রবণতা থেকে রাজ্য মুক্তি পাবে তেমন সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।