আরেক রকম ● দশম বর্ষ দশম সংখ্যা ● ১৬-৩১ মে, ২০২২ ● ১-১৬ জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৯

প্রবন্ধ

কাশ্মীর ফাইলস্ এবং জম্মু গণহত্যা

শেখর দাস


জম্মুর স্থানীয় এবং বহিরাগত হিন্দু ও শিখরা মুসলিমদের খুন করেছিল। ওখানে যা চলছে তার জন্য কাশ্মীরের মহারাজ দায়ী...। এক বিপুল সংখ্যক মুসলিম সেখানে খুন হয়েছেন এবং মুসলিম মহিলারা অসম্মানিত হয়েছেন।

- মহাত্মা গান্ধী। ২৫ ডিসেম্বর ১৯৪৭।

১৯৪৭-এর ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের জন্ম। ১৫ আগস্ট ভারত স্বাধীন হল। তখনও জম্মু-কাশ্মীর ছিল একটি স্বাধীন দেশ। নতুন-পাকিস্তান এবং স্বাধীন ভারত উভয়েই তাকে গ্রহণ করতে চাইছিল। অবশ্য ইংরেজ ভারত ছেড়ে চলে যাবার ভাবনাচিন্তা যখন শুরু করে, তখন থেকেই কাশ্মীর নিয়ে টানাটানি শুরু হয়েছিল। কিন্তু তখনকার কাশ্মীর-মহারাজ হরি সিংহ স্বাধীন থাকতেই চেয়েছিলেন। অনেকে বলেন মহারাজের স্বাধীন থাকার আগ্রহে তাঁর গুরুদেব স্বামী সন্তদেবের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট। তবে মহারাজ বুঝতে পারছিলেন, ভেতর এবং বাইরের চাপে স্বাধীন থাকা মুশকিল। বাইরের চাপ - অর্থাৎ পাকিস্তান আর ভারত দুটো দেশের শাসকেরাই কাশ্মীরকে নিজের সাথে জুড়ে নিতে চাইছে। আর ভেতরের চাপ জম্মু-কাশ্মীরের প্রজা সাধারণ। বিশেষ ক’রে মুসলিম প্রজা। তাঁরা হরি সিং অর্থাৎ ডোগরা রাজবংশের হাত থেকে যেকোনো উপায়ে মুক্তির পথ খুঁজছিলেন। ভারত ভাগ তাঁদের মুক্তির স্বপ্নকে জোরালো ক’রে তুলেছিল।

১৮৪৬ থেকে ১৯৪৭ - একশ’ বছর জম্মু-কাশ্মীর শাসন করেছে জম্মুর ডোগরা রাজপুত বংশ। ওই একশ’ বছর ওখানকার মুসলিম প্রজাদের জীবনে ভয়ানক এক দুঃস্বপ্নের কাল। আগের আফগান, মুঘল বা শিখ শাসকদের হাতে লাদাখ, বালতিস্তান এবং কাশ্মীরের মানুষজন শোষিত হয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু ডোগরা শোষণের বীভৎসতার আরেকটি উদাহরণ তামাম দুনিয়ার ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব। ভারতবর্ষ ভেঙে ইসলামিক দেশ পাকিস্তান তৈরি হবার সম্ভাবনার মধ্যে কাশ্মীরের সবহারানো প্রজারা সত্যিকারের মানুষের মতো বাঁচার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন। জনগণের মনের খবর না-বোঝার মতো বোকা ছিলেন না মহারাজ হরি সিংহ। তাই তিনি মনে মনে প্ল্যান-বি ছকে রেখেছিলেন।

ভারত নাকি পাকিস্তান? ভেতর-বাইরের চাপে কোনো এক পক্ষ নিতে হলে, মুসলিম বিদ্বেষী ডোগরা-রাজ হরি সিং হিন্দু প্রধান ভারতের দিকেই ঝুঁকে থাকবেন, সেটাই স্বাভাবিক। আবার, ভয় ছিল পাকিস্তান-ভারতের টানাটানিতে ক্যাচালটা আন্তর্জাতিক স্তরে চলে গেলে বড়বাবা রাষ্ট্র সংঘ বা আমেরিকা, ইংল্যান্ড ইত্যাদি শক্তিশালী দেশগুলোর চাপে ব্যাপারটা নিয়ে গণভোটের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। সেই ১৯৪৭-এ কাশ্মীরে তো বটেই, জম্মুতেও মুসলিমরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাই, ভারত না, পাকিস্তান - এই প্রশ্নে গণভোট হলে, বলাবাহুল্য, মুসলিম-গরিষ্ঠ রাজ্যটির মানুষ পাকিস্তানের দিকেই চলে যেতে চাইবেন। তাই প্রকাশ্যে স্বাধীন থাকার ইচ্ছে প্রকাশ করলেও, ভেতরে ভেতরে মহারাজ অন্যরকম প্রস্তুতি চালাতে থাকলেন।

হিসেবটা খুব সহজ। মুসলমান জনসংখ্যা যদি ৫০ শতাংশের নীচে নামিয়ে দেওয়া যায় তাহলে গণভোটের ফলাফল নিজের অনুকূলে অর্থাৎ ভারতের সাথে যুক্ত হওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। কাশ্মীরে তখন মুসলিম ৯১% - সেখানে অনুপাতটা ৫০-এর নীচে নামাতে প্রচুর সময় লাগবে। হরি সিং বুঝতে পারছিলেন হাতে সময় কম। কিন্তু জম্মুতে কাজটা অপেক্ষাকৃত সহজ, কারণ সেখানে ৬১% মুসলিম। কাশ্মীর-অংশ হাতছাড়া হলে হোক, গণভোট হলে অন্তত জম্মুকে ধরে রাখা যাবে এই মরিয়া লক্ষ্যে, ডোগরা-মহারাজ জম্মুতে মুসলিম জনসংখ্যা ৫০ শতাংশের নীচে নামানোর পরিকল্পনা আঁটলেন। শুরু হল এথনিক্‌ ক্লিনসিং - জাত-নিকেশ! ১৯৪৭-এ কত মানুষ (মুসলমান) জম্মুতে কোতল হয়েছিলেন তার তালাশ আজ পর্যন্ত কেউ করেননি - ভবিষ্যতে নিশ্চয়ই সেই খোঁজ হবে। আমরা শুধু একটি ঘটনা উল্লেখ করব।

১৯৪৭-এ পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করলে সে দেশের সাথে ভারতের যুদ্ধ বাঁধে এবং দাঙ্গাও শুরু হয় - এটা প্রচলিত ধারণা। কিন্তু ৫ নভেম্বর, ১৯৪৭ - তখনও, নতুন জন্ম নেওয়া পাকিস্তান কাশ্মীর আক্রমণ করেনি, আক্রমণ করবে আরও ৫ দিন পর। অথচ তখনই, জম্মুতে মুসলিম-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে তীব্র গতিতে। আর ওই নিকাশের কাজ সরাসরি চালিয়েছিল মহারাজ হরি সিং-এর সেনাবাহিনী! যাদের ওপরই ছিল মানুষের নিরাপত্তার দায়িত্ব! এছাড়াও ছিল রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস)-এর খুনে বাহিনী, আরও দু-একটা গোষ্ঠী। জম্মুর তালাও খতিকান ছিল প্রায় একশ’ শতাংশ মুসলিম জন বসতির একটি এলাকা। স্থানীয় মানুষদের জোরালো প্রতিরোধের সামনে সরকারি বা বে-সরকারি খুনেরা ওই এলাকায় প্রথমে ঢুকতে সাহস পায়নি। তাই ওদের কব্জা করতে সেখানে বাইরে থেকে খাবার, জল ঢোকার রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাছাড়া, আতঙ্ক ছড়ানোর লক্ষ্যে চোরাগোপ্তা আক্রমণ চলতে থাকে, গোপন-আঁধারে ঘরবাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ওই পরিস্থিতিতে, ডোগরা-সরকার জানায়, তারা নিরাপত্তা দিতে অক্ষম, মানুষ যেন যোগী গেট পুলিশ লাইনে গিয়ে জমায়েত হয়। বলা হয়, জম্মু মুসলিমদের পক্ষে নিরাপদ নয়, তাই তাঁদের পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। অসহায়, খিদে-পিপাসায় অবসন্ন, ভীত-সন্ত্রস্ত মানুষ বাধ্য হন গাঁ-উজাড় ক’রে থানার সামনে জমায়েত হতে। হয়তো, ভেতরে ভেতরে তাঁদের স্বপ্ন, পাকিস্তানে গিয়ে মাথাগোঁজার নতুন ঠাঁই হবে - নিকনো দাওয়া উঠোন; খড়ের ছাউনির ওপর ঘুরে বেড়াবে লাউয়ের লতা; মসজিদে গিয়ে নামাজ পড়তে পড়তে আল্লার কাছে দোয়া মাঙবেন ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধেভাতে’!

১৯৪৭ থেকে আমরা হিন্দি ছবির নায়কের কায়দায় এক লাফে ২০২২-এ আমরা চলে আসব। একটা হিন্দি ছবির আলোচনায়। এখনকার সবথেকে বেশি হৈ চৈ ফেলা ছবি 'দি কাশ্মীর ফাইলস্‌'। বিবেক অগ্নিহোত্রী পরিচালিত ছবিটি ১১ মার্চ তামাম ভারতের ৬০০টা সিনেমা হলে একসাথে প্রকাশ পায়। এবং তার ক’দিন পরেই, বিজেপি-র সাংসদের এক সভায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী সবাইকে ওই ছবিটি দেখার জন্য অনুরোধ(!) করেন। পাশাপাশি, আরএসএস বা হিন্দু ধর্মের ধারক-বাহকেরা ছবিটি প্রচারের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন। ভারতের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রধানমন্ত্রী বা শাসকদল কোনো ফিল্ম প্রচারের জন্য এইরকম সরাসরি ডাক দিলেন। ফলে তামাম ভারতের কথা বলতে না পারলেও, একথা বলা যায় যে, পশ্চিমবাংলায় সরবেড়িয়া থেকে সান্দাকফু ছবিটি করোনার থেকেও বেশি গতিতে ছড়িয়ে পড়েছে। মাছের আড়ত থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস - সবখানেই আলোচনার কেন্দ্রে ‘প্রতিটি শব্দ সত্যি’ ছবিটি।

এই লেখাটা যখন ছাপা হচ্ছে, তখন ভোলা মণ্ডল, মইনুল হক থেকে শুরু ক’রে ডাক্তার ভাস্কর চক্রবর্তী পর্যন্ত সকলেই ছবিটির আগাপাস্তালা জেনে গেছেন। তাই ওই বিষয় নিয়ে আলোচনার দরকার নেই, তবু লেখাটা এগিয়ে নিয়ে যেতে ছবিটির দু’একটা কথা এখানে আসবে। ছবিটির সময়কাল ১৯৯০-এর আগেপরে। আমাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, ওইসময় জম্মু-কাশ্মীরে জঙ্গি-আন্দোলন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছিল। তাদের মূল দাবি ছিল কাশ্মীরের তথাকথিত ‘স্বাধীনতা’। মনে রাখতে হবে তখন বা তখন থেকে এখনও পর্যন্ত জম্মু-কাশ্মীর তামাম দুনিয়ার সবথেকে বেশি সেনা অধ্যুষিত ‘অসামরিক’ এলাকা। অর্থাৎ, যুদ্ধক্ষেত্রের বাইরে আর কোত্থাও এত সেনার জমায়েত নেই। তবু সেই সময়, ১৯৮৯/৯০ বা তার পরে অশান্ত জম্মু-কাশ্মীরে বহু নিরীহ, নিরাপরাধ মানুষ খুন-জখম হন। এখনও হয়ে চলেছেন। বহু মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এঁরা শুধুমাত্র হিন্দু ধর্মেরই মানুষ ছিলেন না, বহু মুসলমানও ছিলেন। কিন্তু পরিচালক অগ্নিহোত্রীর বিবেক কেঁদে উঠলো শুধুমাত্র হিন্দু-সংখ্যালঘু কাশ্মীরি-পণ্ডিতদের যন্ত্রণায়। একথা খুব জোরের সাথে বলতে চাই, দুনিয়ার যে কোনও কোণে একটি মানুষও (হিন্দু/মুসলমান/খ্রিস্টান নন - মানুষ) যদি অন্যায়ের শিকার হন আমরা তাঁর সমব্যথী, আমরা তার প্রতিবাদ করি। কিন্তু মানুষটুকু বাদ দিয়ে, শুধুমাত্র জাতপাতের নিরিখে কোনো ঘটনা বিবেচনা করলে কি নিরপেক্ষ থাকা যায়?

গত তিরিশ বছরের ইতিহাস বাদ দিয়ে পরিচালক অগ্নিহোত্রী ১৯ জানুয়ারি, ১৯৯০-এর একটি ঘটনাকে ধরেছেন। ওইদিনের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পণ্ডিতদের ঘরবাড়ি-মন্দিরে লুঠপাট চলে, আগুন লাগানো হয়; চলে খুন জখম। ব্যাপক ধর্ষণ। বহু পণ্ডিত-পরিবার কাশ্মীর থেকে পালাতে বাধ্য হন। - গল্প শুধু এইটুকুই হলে একরকম ছিল, কিন্তু ছবিটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বুনে যাওয়া হয়েছে উগ্র সাম্প্রদায়িক বিদ্বেষ। আর হিন্দু (যুব) সমাজের বুকে জাগিয়ে তোলা হয়েছে তীব্র প্রতিশোধের আগুন! এখন প্রশ্ন, কত কাশ্মীরি-পণ্ডিতকে ঘর ছাড়তে হয়েছিল? তাহলে, জানতে হবে ১৯৯০-এ কাশ্মীরে পণ্ডিত সম্প্রদায়ের কত মানুষ বাস করতেন। আরএসএস/বিজেপি বা ওইরকম দক্ষিণপন্থী বাহিনীগুলোর মতে ৫ থেকে ৭ লাখ মতো। কিন্তু নির্ভরযোগ্য তথ্য অনুসারে ওই সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার! জম্মু-কাশ্মীরের রিলিফ অ্যান্ড রিহেবিলিটেশন কমিশনারের হিসেবে ১,৩৫,৪২৬ জন পণ্ডিত কাশ্মীর ছেড়েছিলেন। কতো জন মারা যান? কাশ্মীর পুলিশের শেষ হিসেবে অনুসারে মারা গেছেন ৮৯ জন; কাশ্মীরের একটি সংগঠন কাশ্মীরি পণ্ডিত সংঘর্ষ সমিতি-র মতে সাতশ’ জন, আর 'দি কাশ্মীর ফাইলস্‌' জানাচ্ছে সংখ্যাটা চার হাজার!

আমরা আবার ফিরে যাব ১৯৪৭-এ। জম্মুর তালাও খতিকান গ্রামের মানুষ জড়ো হয়েছেন যোগী গেট থানার সামনে। ডোগরা সরকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাঁদের নিরাপদে পাকিস্তানে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ৫ নভেম্বর প্রায় একশ’ বাস-লরিতে বস্তার মতো গাদিয়ে তোলা হয় মানুষ - নারী-পুরুষ-শিশু সবাইকে। গন্তব্য সিয়ালকোট। পাকিস্তান সীমান্ত। পুলিশ-মিলিটারি এসকর্ট ক’রে নিয়ে যায় গাড়িগুলি। পথে ছাত্তা নামের এক জায়গায় গোপন আস্তানা থেকে বেরিয়ে আসে আরএসএস-এর গুপ্ত ঘাতকের দল। ঝাঁপিয়ে পড়ে গাড়িগুলির ওপর।। চলে হত্যা-ধর্ষণ-লুঠের উৎসব - ৬ নভেম্বরেও একই গল্প।

তালাও খতিকান একটা উদাহরণ মাত্র। ’৪৭-এ দেশভাগের বহু আগে থেকেই 'এথনিং ক্লিনসিং' শুরু হয়েছিল। ওইরকম অজস্র ঘটনার যোগফলে জম্মুতে মুসলমানরা সত্যিসত্যিই সংখ্যালঘুতেই পরিণত হয়ে যান। ওই সময় জম্মুতে কত মানুষ খুন হয়েছিলেন? পাঁচ, সাত নাকি দশ লাখ? চেষ্টা করলে একটা আন্দাজ-সংখ্যা জানা যাবে। কিন্তু, গত ৭৫ বছরে কোনও সরকার-ই ওই অন্ধকার ইতিহাসে আলো ফেলার চেষ্টা করেননি। ব্যক্তিগতভাবে কেউ কেউ বা কোনো কোনো সংগঠন ওই বিষয়ে কাজ করেছেন, ঠিকই, কিন্তু সরকারি-অনিচ্ছাকে দূর করবার তাকত তাঁদের নেই। তবে আমরা এখানে একটা সরকারি পরিসংখ্যান তুলে ধরছি - আদমসুমারি অনুসারে ১৯৪১-এ জম্মু-কাশ্মীর রাজ্যের জম্মু অংশে ৬১% ছিলেন মুসলমান আর ২০১১-র শেষ গণনায় ওই অনুপাত ৭ দশমিক ০৩ শতাংশ!

জম্মুর পরিসংখ্যান উল্লেখ ক’রে কাশ্মীরি-পণ্ডিতদের দুর্দশাকে অবহেলা করার কোনো চেষ্টা আমাদের নেই। আমরা শুধু দু’একটা প্রশ্ন এখানে তুলতে চাইছি। জম্মু-কাশ্মীরের ইতিহাস নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ১৯৪৭-এর আগেপরে ডোগরা-সন্ত্রাসের ওই জ্বলন্ত পর্বটা বিবেক অগ্নিহোত্রীর চোখ এড়িয়ে গেল কীভাবে? নাকি, তিনি ঐতিহাসিক সত্যে আগ্রহী নন? 'দি কাশ্মীর ফাইলস্‌'-এর শুরুতেই অবশ্য তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, “এই ছবি... ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর নির্ভুলতা বা বাস্তবিকতা দাবি করে না”! তাহলে কি তিনি সচেতনভাবেই আরএসএস-এর ‘তৈরি’ ইতিহাসকে প্রোপাগান্ডা করার দায়িত্ব নিয়েছেন? যে ইতিহাসের প্রধান ভিত্তি ইসলামোফোবিয়া।

ইহুদি-ফোবিয়া কাজে লাগিয়ে হিটলার দুনিয়াকে দখল করতে চেয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার কী পরিণতি হয়েছিল সেকথা আমরা সবাই জানি। পর্যবেক্ষকদের বিচারে 'দি কাশ্মীর ফাইলস্‌' ৪ সপ্তাহে ২, ৪, ও ৮ কোটি টাকার ব্যাবসা করেছে, কিন্তু মনে রাখা দরকার ইতিহাসের বিচার কিন্তু খুবই নির্মম।